অবহেলা - Love Story | Part 1

in instablurt •  2 years ago 

অবহেলা-নিয়ে-উক্তি.jpg

আমার গার্লফ্রেন্ড যখন মেডিকলে চান্স পায় তখন থেকেই আমার মনে একটা ভয় ঢুকে যায়। যদিও সে অনেক এক্সাইটেড ছিলো। এতোই এক্সাইটেড ছিলো যে আবেগে আমাকে সবার সামনে জড়িয়ে ধরে।

তার জীবনের বিশাল সফলতা। কিন্তু তার এই সফলতায় আমি মোটেও খুশি হই নি। বরং আমার মনে তখন একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। সুমাইয়া কি আগের মতো থাকবে নাকি সেখানে নতুন কাওকে পেয়ে ভুলে যাবে?

সুমাইয়া এক রকম দৌড় দিয়েই বাসাত চলে যায়। খুব খুশি সে। আমি কলেজের সামনেই দাঁড়িয়ে রইলাম।
সে চলে যাওয়ার পর আমিও বাসার দিকে রওনা দিলাম।
চলেন বাসায় যেতে যেতে আপনাদের পরিচয় টা দিয়ে দিই। আমি জুয়েল, আপাতত স্টুডেন্ট। যার কথা এখন বললাম সে আমার ভালোবাসা। আমাদের ২ বছরের রিলেশন। দুজনেই একই ক্লাসে পড়ি।

পড়ালেখায় সে আমার থেকে খুব ভালো স্টুডেন্ট। আমিও ভালো ছিলাম, কিন্তু আমার ফাইনাল পরীক্ষার কিছু দিন আগে বাবা মারা যায়। যার জন্য ফ্যামিলির দায়িত্ব আমার কাধে চলে আসে।
বাবার মৃত্যু, পরিবারের খরচ, ছোট বোনের পড়ালেখা, আমার পড়ালেখা সব কিছু মিলিয়ে আমি ডিপ্রেশনে চলে যাই৷ যার কারনে শুরুটা ভালো হলেও শেষ টা ভালো হয়নি।
আমার পরীক্ষার প্রিপারেশন একদম খারাপ ছিলো। প্রথমে ভাবছিলাম পাশই করবো না।

আল্লাহর রহমত, কোনোমতে পাশ করলাম। কিন্তু অতটা ভালো না। তাই পাবলিকেও চান্স পেলাম না। অবশেষে ন্যাশনাল এ এডমিশন নিলাম।
যাইহোক গল্পে আসা যাক।

বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিলাম। সুমাইয়াকে কল দিলাম নাম্বার ওয়েটিং। হয়তো সবাইকে এই সংবাদ দিচ্ছে।
বিকালে বের হলাম। সানিকে কল দিলাম আসার জন্য সে আসছে।
সানিঃ কিরে কি অবস্থা?

আমিঃ এইতো আছি৷ তোর কি খবর? সারাদিন কোনো খবর নাই যে?
সানিঃ আব্বুর সাথে বাইরে গেছিলাম। শুনলাম সুমাইয়া নাকি মেডিকেলে চান্স পাইছে?
আমিঃ হুম।
সানিঃ শালা মিষ্টি কই? আগে মিষ্টি খাওয়া।

আমিঃ আমি তো টেনশনে আছি।
সানিঃ এতো খুশির মধ্যে আবার টেনশন কিসের? তোর বউ ডাক্তার হবে, আমাদেরও ফ্রিতে চিকিৎসা করবে।
আমিঃ ফাইজলামি করিস না। আচ্ছা ওখানে যদি সুমাইয়া অন্য কারো সাথে সম্পর্ক করে?
সানিঃ আরে মাথা খারাপ নাকি? করবে না সিউর থাক।

আমিঃ তারপরেও, আমি ফেনীতে আর ও ঢাকাতে কেমন হয়ে যায় না ব্যাপার টা। যেখানে আমরা প্রতিদিনই দেখা করতাম সেখানে বছরেও পারবো না।
সানিঃ দেখ ভাই, ভালো কিছু পেতে হলে কিছু না কিছু ছাড় দিতে হবে। ও ওখানে পড়ালেখা করুক, তোর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করবে, চ্যাট করবে। ছুটি পেলে আবার আসবে। সমস্যা কি?
আমিঃ তারপরেও।

সানিঃ আরে ধুর বাদ দে, চল চা খাবো।
তারপর আমরা চা খেতে চলে যাই৷ সেদিন রাতেও সুমাইয়ার সাথে অনেকক্ষণ কথা হলো। আমার মবে যে একটা ধারণা ছিলো সেটা বোধ হয় ভুল।
এর কিছুদিন পরেই সে ঢাকা চলে যায়৷ আমার সাথে এই কয়েকদিনে খুব বেশি একটা কথা হয়নি। যাওয়ার আগে একবার দেখা করতে বলেছিলাম ওর হাতে সময় নাই।
আমিও বোকা মনে হ্যা বলে বিদায় দিলাম। যদিও হ্যা বলছি কিন্তু ভিতরে ভিতরে আমার অবস্থা খুবই খারাপ।

সুমাইয়া চলে যাওয়ার পর আমি ওর কল বা টেক্সট এর অপেক্ষায় বসে থাকতাম। আমি নিজে থেকে দিতাম না। কারন মেডিকেলে পড়ে। আমার থেকে পড়ার চাপ হাজার গুন বেশি।

ও যখন ফ্রি হবে তখন নিজে থেকেই দিবে। সে মাঝেমধ্যে কল দিতো। যখন কল দিতো নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হতো।
ইদানিং খেয়াল করলাম সুমাইয়া আমার সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করছে না। আমি মাঝেমধ্যে কল দিই নাম্বার ওয়েটিং থাকে। যখনই কল দি নাম্বার ওয়েটিং।
আমার বুকের মধ্যে একটা অন্য রকম ব্যথা অনুভব হতে শুরু করলো।

সারাদিন অনলাইনে থাকে কিন্তু আমি মেসেজ দিলে সিনও করে না। যদিও করে ১ ঘন্টা পর পর রিপ্লাই দেয়৷
আমার বুঝতে বাকি রইলো না সে অন্য পথে হাটা শুরু করেছে। দেখতে দেখতে ৪ মাস কেটে গেলো৷ গত একমাসে ওর সাথে আমার মাত্র একবার কথা হয়েছে তাও ২ মিনিট৷
একদিন রাস্তা দিয়ে হাটছি এমন সময় ওর চাচাতো ভাইয়ের সাথে দেখা। কিছুক্ষণ কথা বলার পর সে বললো সুমাইয়া নাকি বাড়িতে এসেছিলো। ৩ ছিলো আবার চলে গেছে। ওর কথা শুনে আবারও বিশাল আকারের একটা শকট খেলাম।

বাড়িতে আসলো অথচ একবার দেখাও করলো না। যে নাকি একদিন কলেজে দেখা না করলে আমার সাথে রাগ করে দুই দিন কথা বলতো না।
সেদিন রাতে আমি ওরে মেসেজ দিই।
আমিঃ কি ব্যাপার বাড়িতে আসছো অথচ একবারও বলো নি।

সুমাইয়াঃ মনে ছিলো না। আর আমি খুব একটা সময় নিয়ে যাই নি।

আমিঃ ৩ দিন ছিলে তারমধ্যে ৩ মিনিটও তোমার সময় ছিলো না?
সুমাইয়াঃ থাকলে কি আর তোমার সাথে মিথ্যা বলছি নাকি?

আমিঃ সারাদিন অনলাইনে থাকো। কিন্তু আমি মেসেজ দিলে আন্স দাও না। কারণ কি?
সুমাইয়াঃ আমরা অনলাইনে গ্রুপ স্টাডি করি। পড়ার অনেক চাপ। তুমি তো ন্যাশনালে পড়ো। তুমি এগুলো বুঝবে না।

বোকা মনে এই কথা গুলোও বিশ্বাস করলাম। সেদিন আমাদের আর কথা হয়নি।
তার কয়েকদিন পরে সে তার অনেক গুলো ফ্রেন্ডের সাথে ছবি আপলোড করেছে। যেখানে সে জিন্সের প্যান্ট পড়া ছিলো। আর ৩ জন মেয়ে ৫ জন ছেলে।

ওর এই কর্মকাণ্ড দেখে আমার মাথায় রক্ত উঠে গেলো। কিছু বলতে গিয়েও বলিনি৷ কারন যতোই হোক ভালোবাসি তো। সাথে সাথে আমি ফেসবুক থেকে বের হয়ে গেলাম।

সে আমাকে কথা দিয়েছিলো কখনো নিজের রিয়েল পিক আপলোড করবে না। অন্য কোনো ছেলের সাথে রিলেশন তো দূরে থাক ফ্রেন্ডশিপও করবে না। আমিও ওরে ওয়াদা দিয়েছিলাম৷ আমিও কোনো মেয়ের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করবো না। আমার ফ্রেন্ডও সে, গার্লফ্রেন্ডও সে, বউও সে। আমার সব কিছু জুড়েই সে আছে।

এর মাঝে আমি ওরে অনেক গভীর রাতে অনলাইনে দেখার পর নাম্বারে কল দিলাম। নাম্বার ওয়েটিং। বেশ কয়েকবার দিলাম। বার বার ওয়েটিং।
১২ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত ট্রাই করলাম নাম্বার ওয়েটিং। তারপর একটা টেক্সট করলাম। “একটু কথা বলবো তোমার সাথে “

১ ঘন্টা পর রিপ্লাই দিলো সে নাকি পড়তেছে। আমিও আর ২য় বার টেক্সট করিনি।
এর কয়েকদিন পর সে আবার অনেক গুলো ছবি আপলোড করলো৷ যেখানে একটা ছেলের সাথে খুব কাছাকাছি অবস্থায় আছে। ছেলেটাও ওর কাঁধে ভয় দিয়ে বিভিন্ন স্টাইলে ছবি তুলতেছে। ৪-৫ টা ছেলের মাঝে সে একাই একটা মেয়ে।

ছবি গুলো দেখে আমার শরীর কাঁপতে শুরু করলো। সাথে সাথে ওরে কল দিলাম। নাম্বার ওয়েটিং। আমিও বার বার দিতে লাগলাম৷
কয়েকবার দেওয়ার পর সে কল ব্যাক দিলো। তারপরেই…

২য় পর্বের জন্য অপেক্ষা করুনঃ-

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE BLURT!