পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষেরই মনে হয়, আমি অনেক ধনী কিংবা সমাজের নামকরা কোন ব্যক্তি হবো।
কিন্তু এমন টা শুধু তো মনে মনে ভাবলেই হবে না।
কল্পনাকে বাস্তব রূপ দিতে হলে সেই অনুযায়ী কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
তবে এমনও অনেক মানুষ আছে, যারা শুধু এমন করে ভাবতেই ভালোবাসে।আর এসব ভাবতে ভাবতে নিজেই উপর থেকে নিচে ধপাস করে পড়ে যায়।
মিনুর দাদু মিনুকে এসব উপদেশমূলক গল্প শোনাচ্ছিলেন।
মিনুর দাদু মিনুকে বললেন, আজকে তোমাকে এমনই এক মানুষের গল্প শোনাবো।
"এক ছিল ধনী ব্যক্তি। তার ছিল এক জন চাকর।ধনী ব্যক্তি টি খুবই মহৎ মানুষ ছিলেন। তিনি তার চাকরটিকে খাওয়ার সময় প্রত্যেকবারই কিছু ঘি দিতেন।
চাকরটা তার অংশের ঘি না খেয়ে একটি পাত্রে জমিয়ে রাখতো।
এভাবে জমিয়ে রাখতে রাখতে অনেকটা ঘি জমা হলো।
আর তা দেখে চাকর টা র মন খুশিতে ভরে গেল।
একদিন চাকরটা ঘি এর পাত্র টা সাথে নিয়ে ভেড়াগুলোকে ঘাস খাওয়াতে মাঠে নিয়ে গেল।
ভেড়াগুলো মাঠে ঘাস খাচ্ছে।
আর রাখাল ভেড়া তাড়ানোর লাঠি নিয়ে খেলা করতে করতে ভাবতে লাগলো,এই ঘি টা সে বিক্রি করে দিবে।
তারপর সেই টাকা দিয়ে সে একটা ভেড়া কিনবে।
একটি ভেড়া আবার বাচ্চা দেবে।
সেই বাচ্চা থেকে আবার বাচ্চা হবে।
এভাবে আস্তে আস্তে তার একটা ভেড়ার খামার হবে।
এভাবে ভাবতে ভাবতে রাখাল ছেলে কল্পনার জগতে হারিয়ে গেল।।
গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল- এমন ভাবে সে একটার পর একটা স্বপ্ন দেখতেই লাগলো কল্পনায়।
সে ভাবলো, তার যখন অনেক গুলো ভেড়া হবে।
সেগুলো সে বাজারে বিক্রি করে দিবে।তার অনেক টাকা উপার্জন হবে।
তারপর একটা সুন্দরী মেয়ে দেখে বিয়ে করবে। সুখে শান্তিতে বসবাস করবে।
ছেলে ও মেয়ের জন্ম হবে।
দুজনেই ছোট থেকে আসতে আসতে বড় হবে।
তারা পড়ালেখা শিখবে।
তার ছেলে যদি ঠিক মতো পড়ালেখা করতে না চায়।
তখন সে কিভাবে তার ছেলেকে শায়েস্তা করবে?
সে তার ছেলেকে কিভাবে শায়েস্তা করবে , এটা ভাবতে গিয়ে তার হাতে ভেড়া তাড়ানোর লাঠি দিয়ে জোরে ঘা মারলো।
লাঠির আঘাত গিয়ে লাগলো ঘিয়ের পাত্রে। লাঠির আঘাতে ঘি এর পাত্র ভেঙে খান খান হয়ে গেল।"
মিনুর দাদু মিনুকে বোঝালেন, যে সব মানুষ শুধু মাত্র কল্পনায় বড় হতে চায়।
তাদের পরিণতি ঠিক এই রাখালের মতোই হয়।