বন্ধুরা, আজকে আমি একটা ব্যতিক্রমী বিষয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। বেশ কিছুদিন আগে আমি কয়েকটা পথ শিশুদের সঙ্গে কথা বলি ও তাদের ছবি তুলি। এই করোনা ভাইরাস এর পরিস্থিতিতে প্রায় দেখি " পথ শিশুদের" নানান রকম দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা। অথচ একথা আমরা সবাই জানি যে, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই তাদের সঠিকভাবে পরিচর্যা করাটাও অত্যন্ত জরুরি।শিশু আর পথশিশু শব্দ দুটোকে আলাদা মনে হলেও শিশু-পথশিশু কিন্তু একই। শিশু তো শিশুই। এর কোনো ভেদাভেদ নেই। পার্থ্যক শুধু এটুকুই যে, রাস্তায় জীবনযাপন করার কারণে তারা পরিচিতি পায় পথশিশু হিসেবে।
অথচ এই শান্তিময় পৃথিবীর অন্বেষণ মানব সভ্যতার আদি লক্ষ এবং নিঃস্বার্থ ভালবাসাই সেই লক্ষ্য পূরণের একমাত্র হাতিয়ার। শিশুরা সৃষ্টির জন্ম লগ্ন থেকে নিঃস্বার্থ ভালবাসার একমাত্র প্রতীক। তথাকথিত আধুনিক সভ্যতার জাঁতাকলে পিষ্ট এই নিঃস্বার্থ শিশুর পরিচয় আজ বিভক্তিময়। আজ তার একটি অংশ সমাজে বিবেচিত ‘পথ শিশু’ হিসেবে।
ইট-পাথরের নগরীর আনাচে-কানাচে, পথে-প্রান্তরে দেখা মেলে সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের। জীবনের সুখ-দুঃখ, হারানোর গল্প, পাওয়া না পাওয়ার হিসাব কষে তারা পথের ধারে। কারও বাবা নেই, কারও মা নেই অথবা দু'জনেই পাড়ি দিয়েছেন পরপারে। রেখে গেছেন অসহায় শিশুসন্তান। যাদের এই সমাজ বলে পথশিশু। সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুরা নিরুপায় হয়ে পথের ধারে বসে থাকে একটু সহানুভূতি অথবা কিছু পাওয়ার আশায়।
এরা স্বপ্ন দেখে খোলা আকাশের নিচে, ঘুমায় পথের কোলঘেঁষে। ওদের পরনে নেই ভালো জামা-কাপড়। বঞ্চিত এই মানুষগুলো একটা ছেঁড়া জামা পরে বছর পার করে দেয়। কোনো কিছু পাওয়ার আশায় আমাদের মনে যে সুভাস ছড়ায় সুবিধাবঞ্চিত বা পথশিশুদের মনে কি একই পরশ আসে?
কখনো আমরা খেয়াল করেছি কি ?প্রতিটি পথ শিশুর মধ্যেও থাকতে পারে কিন্তু অনেক সুপ্ত প্রতিভা। তেমনিভাবে সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের ভেতরও রয়েছে আলাদা একটি জগৎ। তাদের চিন্তাধারাও আলাদা আলাদা। একটু সহযোগিতা, একটু সহানুভূতি, একটু ভালোবাসায় বদলে যেতে পারে তাদের জীবন।
তাই আমাদের সবার উচিত বিশেষ করে এই মহামারীতে এই পথ শিশুদের প্রতি অধিক যত্নশীল হওয়া। তাদের সুপ্ত প্রতিভার মূল্যায়ন করা।