বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই??
আমি ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
বন্ধুরা, আমরা সবাই জানি যে- টাকা ছাড়া আমাদের জীবন যাপন অসম্ভব।টাকা কে তাই অনেকেই " দ্বিতীয় গড " বলে থাকে। এক কথায় মানুষের জীবনে টাকার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। আমরা দেখতে পাই যে, আমাদের সমাজে যার অনেক টাকা আছে - তাকে সব মানুষ স্যার স্যার করে। মানুষ টাকার প্রয়োজনীয়তার ফাঁদে এমন ভাবে আবদ্ধ হয়ে গেছে যে, যেনো টাকা ই জীবন। এটা সত্য যে, টাকা থাকলে হয়তো আমরা অসাধ্য কে সাধ্যে আনতে পারি। কিন্তু টাকা দিয়ে কি জীবনে সুখ- শান্তি কেনা যায়???
আমি যদি কোন বিত্তবান মানুষ কে বলি যে, টাকা দিয়ে কিনে তার ফেলে আসা শৈশবকাল কে ফিরিয়ে আনতে। সম্ভব কি এটা?বৃদ্ধকালে টাকা দিয়ে কি যৌবনের সেই সোনালী দিনগুলো ফিরিয়ে আনা সম্ভব?
টাকা উপার্জন করতে গিয়ে যে আমি বা আমরা খেয়ে না খেয়ে , শরীরের যত্ন না নিয়ে , পরিবারের সদস্যদের ভালোবাসার মূল্য না দিয়ে টাকার পেছনে ছুটছি। এতে হয়তো আমরা সফল হয়েছি অনেক টাকা আয় করতে। কিন্তু আমাদের সেই সুস্থতা কি টাকা দিয়ে কিনতে পারবো?
টাকা উপার্জন করতে গিয়ে পরিবার ও আদরের বাচ্চাদের সময় দিতে পারি না আমরা। অথচ সময় টাকার চেয়েও দামি।এ কথা টা আমরা ভুলে যাই। জীবনের জরুরী প্রয়োজন গুলো মেটানোর জন্য আমাদের যতটুকু টাকার প্রয়োজন, ঠিক ততটুকু ই টাকার পেছনে আমাদের ছোটা উচিত।আর বাকি সময়টা আমাদের পরিবার, আত্নীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব,পাড়া প্রতিবেশী র জন্য ব্যয় করা উচিত।
কারণ টাকা দিয়ে সম্মান কেনা যায় না। টাকাওয়ালা লোককে হয়তো অনেকেই হুজুর হুজুর করে। কিন্তু সত্যিকারের সম্মান, ভালোবাসার জন্য টাকার প্রয়োজন হয় না।
টাকা দিয়ে মানসিক সুখ শান্তি কেনা যায় না। জীবনে প্রকৃত সুখ শান্তি পাওয়ার উপায় হলো একে অপরের জন্য ছোট ছোট ত্যাগ স্বীকার, সুমিষ্ট ব্যবহার ও আন্তরিকতা দেখানো।
টাকা দিয়ে ভালো ব্যবহার ও সততা বাজার থেকে কিনে আনা সম্ভব নয়। টাকা দিয়ে মানুষকে দায়িত্ববান বানানো সম্ভব নয়।
একটা বাস্তব উদাহরণ বলি। আমার হোম ডিস্ট্রিক এর একজন বিত্তবান মানুষ,যার অঢেল সম্পদ।সাত তলা বিল্ডিং এর মালিক তিনি। টাকা পয়সার কোন অভাব নেই। অথচ তিনি কিছু দিন আগে তার নিজের সাত তলা বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে তিনি মারা যাবার আগে একটা সুইসাইড নোটে লিখে গেছেন যে, আমার জীবনে সম্পদের কোন অভাব ছিল না। কিন্তু তারপরেও আমি কোন কিছুতে মানসিক সুখ শান্তি অনুভব করতে পারি নাই। বিশাল এই সম্পদের পাহাড় তাই আমার পক্ষে আর বহন করা সম্ভব হলো না। এজন্যই আমি আত্নহত্যার পথ বেছে নিয়েছি।
পোস্টের শেষে এ কথা মনে পড়তেই শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে।টাকা ই যদি জীবনের মূলমন্ত্র হতো, তবে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষটার সাথে তার ওয়াইফের ছাড়াছাড়ি হয়ে যেত না। তার মানে বুঝা গেল যে, "অর্থ ই অনর্থের মূল " কোন কোন সময়।
তাই জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের ব্যালেন্স করে চলা উচিত।