নারীদের পিরি’য়ড বা ঋতু’স্রাব খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। মাসের নির্দিষ্ট একটি সময়ে নারীদের পিরিয়ড হয়ে থাকে। মাঝে মধ্যে এই সময়ের হের ফেরও হতে পারে, এতে ভয়ের কিছু নেই।
এ সময়ে শরীরে বিভিন্ন হরমোনাল পরিবর্তন হয় বলে নারীদের মধ্যে কিছু শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়। যেমন- পেটব্যথা, মাথাব্যথা, গা ব্যথা, মনখারাপ, খিটখিটে মেজাজ, রাগ ইত্যাদি। এগুলোকে অস্বাভাবিক মনে করার কিছু নেই। তবে এসব ছাড়া পিরিয়ড চলাকালীন সাতটি সমস্যা দেখে দিলেই বিপদ।
নারীস্বাস্থ্যের চিকিৎসক ডা. রিতা হাজরা জানান, এসময় কিছু শারীরিক অথবা মানসিক সমস্যা অধিক মাত্রায় দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। চলুন জেনে নেয়া যাক সেগুলো-
জমাটবাঁধা রক্ত নিঃসরণ
পিরিয়ডের বেশি ব্যথা হওয়ার একটি অন্যতম কারণ হলো জমাটবাঁধা রক্ত নিঃসরণ। মাঝে মাঝে এমন হতেই পারে। যদি পরপর কয়েকবার পিরিয়ডের সময় এই সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি। এটি জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে কোনো সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।
প্রচণ্ড পেটব্যথা
পিরিয়ডের সময় পেটব্যথা কমবেশি সব নারীরই হয়ে থাকে। তবে প্রচণ্ড রকমের পেটব্যথা করলে তার কথা আলাদা। প্রচণ্ড এই ব্যথা হতে পারে হরমোন, জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের সমস্যার কোনো লক্ষণ। তাই পিরিয়ডের সময় প্রচণ্ড পেটব্যথা হলে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
জ্ঞান হারানো
পিরিয়ডের সময় যা নিঃসরণ হয়, তা রক্ত ছাড়া আর কিছু নয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে অনেকেরই শরীর দুর্বল লাগে। যদি এই দুর্বলতার কারণে জ্ঞান হারান, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
বমি
দুর্বলতা, মাথা ঘোরা ইত্যাদির কারণে বমি বমি ভাব হতেই পারে। যদি বারবার বমি হতে থাকে তাহলে চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। বিশেষ করে যদি পেট বা মাথা ব্যথার কারণে বমি হতে থাকে তাহলে তা মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। এসব ক্ষেত্রে ভিন্নতর চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
জ্বর
পিরিয়ডের সময় শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি থাকে। এই উত্তাপ যদি ১০২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান। নিজে নিজে ওষুধ খেয়ে ফেলবেন না।
মাথাব্যথা
পিরিয়ডের সময় মাথা ধরা, মাথা ঝিমঝিম করা বা মাথায় চাপ অনুভব করাটা স্বাভাবিক। মাথাব্যথা প্রচণ্ড আকার ধারণ করলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। বিশেষ করে যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে। কারণ মাইগ্রেনের সাধারণ ওষুধ এ সময় কাজ নাও করতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী বিষণ্নতা ও রাগ
মাসের এই বিশেষ দিনগুলোতে অনেকেই বিষণ্ন থাকেন। তেমন কোনো কারণ ছাড়াই মন থাকে খারাপ। তবে এই মন খারাপ যদি দীর্ঘদিন ধরে থাকে তাহলে তা ডিপ্রেশন রোগে রূপান্তরিত হতে পারে।
একই কথা রাগের ক্ষেত্রেও। পিরিয়ডের সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া রাগ হয়ে যেতে পারে আপনার রোগ। রেগে গিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি, ভাঙ্গচুর করার অভ্যাস থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াটাই ভালো।