জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খেয়ে পিরিয়ড বন্ধ রাখছে কৈখালীর কিশোরীরা

in blurthealth •  2 years ago 

সাতক্ষীরার কৈখালী ইউনিয়নে যেদিকে চোখ যায় শুধুই লোনা পানি। পিরিয়ড চলাকালে এখানকার মেয়েদের এই লোনা-নোংরা পানিই ব্যবহার করতে হত।

লোনা পানি ব্যবহার করলে জরায়ুর বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হয় নারীরা। তাই এই ঝামেলা এড়াতে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খেয়ে মাসিক বন্ধ রাখছিল স্থানীয় কিশোরীরা।

শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও কৈখালীতে এতদিন এমনটাই চলছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, “কিশোরীরা যদি দিনের পর দিন পিল খেয়ে পিরিয়ড বন্ধ রাখে তাহলে তাদের আর নিয়মিত পিরিয়ডই হবে না। এছাড়া নানান শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি বন্ধ্যাত্ব পর্যন্ত হতে পারে।”

কৈখালীর অসহায় কিশোরীদের এমন পরিস্থিতিতে পাশে দাঁড়ায় স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্র্যান্ড সেনোরা। শুরু করে ‘মেয়ে, তোমার স্বস্তির জন্য’ ক্যাম্পেইন।

কৈখালীতে বৃষ্টি হয় প্রচুর, তাই এই ক্যাম্পেইনে সেনোরা উদ্যোগ নেয় বৃষ্টির পানি সংগ্রহের। ইউনিয়নের ৬টি পয়েন্টে বসানো হয় ১২টি পানির ট্যাংক, যেন মেয়েরা পিরিয়ডসহ অন্যান্য প্রয়োজনে এই নিরাপদ পানি ব্যবহার করতে পারে।

সেনোরার উদ্যোগে কৈখালী ইউনিয়নে কিশোরীদের নিয়ে কয়েকটি উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হয় আর দেওয়া হয় ৩ মাসের ফ্রি স্যানিটারি ন্যাপকিন।

এছাড়া যেকোনো প্রয়োজনে তারা যোগাযোগ করতে পারবে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের কল সেন্টারে (০৮০০০৮৮৮০০-টোল ফ্রি)।

মুখে একরাশ হাসি নিয়ে কৈখালীর দশম শ্রেণির এক ছাত্রী জানান, “পিল এখন আর খাচ্ছি না। মাসিকের সময় ভালো পানি পাচ্ছি, প্যাড পাচ্ছি...।”
তেরো বছরের অন্য এক কিশোরী ট্যাংক থেকে পানি নিয়ে বাসায় ফিরছিল। সে বলে, “যারা আমাদের জন্য এই উদ্যোগগুলো নিয়েছে তাদের ধন্যবাদ। আগে আমরা পুরাতন কাপড় ব্যবহার করতাম, এখন প্যাড পাচ্ছি। পিলও খাচ্ছি না।”

সেনোরার এই উদ্যোগ সম্পর্কে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের অপারেশন বিভাগের প্রধান মো. সাঈদ বলেন, “সেনোরার জন্মলগ্ন থেকেই আমরা মেয়েদের নিরাপদ পিরিয়ড নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় কৈখালীর মেয়েদের সমস্যাতেও আমরা পাশে দাঁড়িয়েছি।”

স্কয়ার টয়লেট্রিজের বিপণন বিভাগের প্রধান ড. জেসমিন জামান বলেন, “আমাদের উদ্যোগ শুধু এখানেই থেমে থাকবে না। আমরা কৈখালী গ্রামে কিছু মেয়েকে প্রশিক্ষিত করেছি যারা স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন প্রয়োজনে কিশোরীদের পাশে থাকবে। গ্রামজুড়ে তারা পরিচিত হচ্ছে ‘নোরা আপা’ নামে।”

সেনোরার এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিল বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনী এজেন্সি সান কমিউনিকেশনস লিমিটেড।

এই প্রজেক্টে সরাসরি যুক্ত সান কমিউনিকেশনসের কপি সুপারভাইজার রিয়াজুল আলম শাওন জানান, “ট্যাংক বসানো, উঠান বৈঠক, ফ্রি স্যাম্পলিং, ভিডিওচিত্র নির্মাণ সবক্ষেত্রেই আমাদের আন্তরিকতা আর ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না। আমাদের কাজ এখানেই শেষ না, ভবিষ্যতেও আমরা সবসময় কৈখালীর মেয়েদের পাশে থাকব।”

সবারই চাওয়া কৈখালীর মেয়েরা থাকুক স্বস্তিতে আর বাংলার সবখানে এই স্বস্তির গল্প ছড়িয়ে পড়ুক। প্রতিটি নারীর পিরিয়ড হোক নিরাপদ।
girl.JPG

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE BLURT!