বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে সারা বছরের বিভিন্ন ঋতুতে সব ধরনের জীব গোষ্ঠীর মধ্যে ভিন্নতা বিভিন্নতা অপরপক্ষে আণুবীক্ষণিক জীবের অস্তিত্ব-সক্রিয়তা জলবায়ুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুতে শীতকালে ঠান্ডা আবহাওয়া দেখা যায় অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস পর্যন্ত। এই শীতকালীন আবহাওয়া -তে বিভিন্ন রকমের দেশী ও বিদেশি প্রকারের ফল, বিভিন্ন রকম শাক সবজি অন্যদিকে বাঙ্গালীদের জনপ্রিয় শীতকালে ভোরবেলা উপরি পাওয়া সুস্বাদু তরল মিষ্টি খেজুরের রস শরীরের পক্ষে বেশ উপকারী। বর্তমান সময়ে অনেক বেশি সংখ্যক ছেলে মেয়ের কাছে খেজুরের রসের কথা অজানা। উচ্চ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ও যান্ত্রিক যুগে আগামী কয়েক বছর পর খেজুরের বৃক্ষ গুলির সংখ্যা অবনতি ঘটলে হয়তো খেজুরের রস আহরণ করা সহজ হবে না।
বছরের প্রতিটি মাসে খেজুরের রস সংগ্রহ করা সম্ভব নয়, এর জন্য উপযুক্ত সময় সাধারণত আশ্বিন মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় কয়েকটি ধাপ ও বিশেষ কিছু জিনিস দরকার হয়, যেমন- দা, কাচি, একগাছি দড়ি, কোমরে ঝোলানো লম্বা গোলাকৃতির বিশেষ পাত্র ও বাঁশ। রস সংগ্রহ করার জন্য প্রাথমিক কাজ হল নির্দিষ্ট খেজুর গাছের সঙ্গে সোজাভাবে বাঁশটিকে দাঁড় করিয়ে ভালো করে রশি বা দড়ি মাধ্যমে বেঁধে ফেলা। তারপরে গাছটির অগ্রভাগে পনেরো থেকে ষোলোটি পাতা রেখে বাকি পাতাগুলো ছেঁটে ফেলতে হবে। গাছটির অগ্রভাগের পাতাগুলির ঠিক নিচে কিছুটা চেছে ফেলতে হবে। ধারালো দা দিয়ে চার থেকে পাঁচ দিন নিয়মিত চেছে ফেলা জায়গাটা সামান্য পরিমাণে চাছা হয়। একসময় দেখা যায় এই অংশটি থেকে রস ঝরে ঝরে পড়ে, কেটে ফেলা জায়গাটির নিম্নভাগের মধ্যে একটি পাইপের আকারে ছোট বাঁশকাঠি পোতা হয়, যার মাধ্যমে রস ফোটা ফোটা করে কিছুটা নিম্ন অংশে রস সংগ্রহের জন্য ঝোলানো ভাড়ে সঞ্চিত হতে থাকে। সন্ধ্যার থেকে রস সংগ্রহ শুরু হয় এবং খুব ভোরবেলায় ভাঁড় খুলে নেয়া হয় ও রস সংগ্রহ হয়। এইভাবে নির্দিষ্ট মাসগুলোতে প্রতিদিন রস সংগ্রহ করা হয়, বিশেষত ঠান্ডা আবহাওয়ায় রস সংগ্রহ, রসের পরিমাণ বেশি হয়। এই রস সুস্বাদু মিষ্টি এবং শক্তি যোগান দেয়। দিনের বেলায় বেশি সময় ধরে খাওয়া যায় না। দিনের আলোর উপস্থিতিতে সন্ধান বা ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়া দ্বারা গেজিয়ে যায়, সাদা বুদবুদ তৈরি হয়, সুস্বাদু সব নষ্ট হয়ে যায়, অম্লতা বৃদ্ধি পায়, টক হয়ে যায়, টক স্বাদ দূরীকরণের জন্য সামান্য পরিমাণে কলিচুন ব্যবহার করা হয়। খেজুরের রস গরম করার মাধ্যমে গুড় ও খেজুর গুড় প্রস্তুত করা হয় যা সারা বছর বিভিন্ন সুস্বাদু খাদ্য তৈরি করতে দরকারি। এই গুড় -এর মধ্যে থাকা খনিজ উপাদান লৌহ বা আয়রন আমাদের শরীরের একটি প্রয়োজনীয় ম্যাক্রো অ্যালিমেন্ট। এছাড়াও প্রোটিন, ফ্যাট উপস্থিত রয়েছে এই গুড়ের মধ্যে যা শক্তি সরবরাহ ও পুষ্টি জোগাতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেজুর গুড় থেকে পাটালি তৈরি হয় যা বাঙ্গালীদের একটি প্রিয় খাদ্য। খেজুর গুড় পিঠা, পুলি, ভিন্ন মিষ্টি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
সবুজ শাকসবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, হলুদ ফল ইত্যাদি মানুষের খাদ্য তালিকার প্রথম সারিতে নিয়মিত স্থান অধিকার করে নিয়েছে। এগুলো পুষ্টি ও ভিটামিন -এ ভরপুর যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, অন্যদিকে দেহে শক্তি সরবরাহ করে থাকে। মানুষের শরীরে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান গুলির মধ্যে দরকার শক্তি সরবরাহকারী ও রোগ প্রতিরোধক খাদ্য উপাদান। শক্তি সরবরাহকারী খাদ্য উপাদান গুলি কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয়। রোগ প্রতিরোধক খাদ্য উপাদান গুলি ভিটামিন, খনিজ উপাদান ইত্যাদি। শুধুমাত্র শীতকালে মানুষের বিশেষ পরিকল্পনার মাধ্যমে খেজুর গাছ থেকে সংগৃহীত রস প্রচুর খনিজ উপাদান ও পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে পনেরো থেকে কুড়ি শতাংশ দ্রবীভূত শর্করা যা শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করতে পারে। তাই শীতকালে এটি এনার্জি-ড্রিংক হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে উপস্থিত ম্যাক্রো অ্যালিমেন্ট আয়রন যা শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।বাঙ্গালীদের মধ্যে খেজুরের রস ও খেজুর গুড় উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ। সংগৃহীত খেজুর রস আহরণের জন্য রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন নিশাচর প্রাণী যেমন বাদুড়, চামচিকা ইত্যাদি থেকে রক্ষা করার জন্য চাষি বন্ধুদের বিশেষ সুরক্ষা জাল ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ, এতে রসের পরিমাণের নির্দিষ্টতা বজায় থাকে, অন্যদিকে সুরক্ষা জালের মাধ্যমে বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ প্রতিরোধ হয়ে থাকে।
Translation:
In a diverse world, the diversity of all species at different seasons throughout the year, on the other hand, is related to the survival and activation of microscopic organisms. The winter climate in West Bengal is cold from October to February-March. In this winter climate, a variety of local and foreign fruits and vegetables are available. At present a large number of boys and girls are unaware of date juice. Extracting date juice may not be easy if the number of date palms declines in the next few years due to high population growth rate and mechanical age.
It is not possible to collect date juice in every month of the year, the best time for this is usually from the third week of Ashwin month to the first week of Baishakh month. The collection of date juice requires a few steps and special things, such as da, kachi, a single rope, a long round special pot and bamboo hanging around the waist. The primary task for collecting sap is to make the bamboo stand upright with a certain date palm and tie it tightly with a rope. Then leave fifteen to sixteen leaves on the top of the tree and prune the rest. The top of the tree should be slightly scratched just below the leaves. The area is regularly scrubbed for four to five days with a sharp knife. Once the sap drips from this part, a small bamboo pole in the form of a pipe is planted in the lower part of the cut, through which the sap drips and is stored in the lower part of the sap to collect the sap. Juice collection starts from evening and very early in the morning the clown is opened and juice is collected. Thus juice is collected daily in certain months, especially in cold weather, the amount of juice is more. This juice provides delicious sweetness and energy. Can't be eaten for long during the day. In the presence of daylight the process of detection or fermentation is slowed down, white bubbles are formed, all the flavors are lost, acidity is increased, it becomes sour, a small amount of lime is used to remove the sour taste. Molasses and date molasses are prepared by heating the date juice which is necessary to make various delicious food throughout the year. The mineral iron in this molasses is an essential macro element in our body. It also contains proteins and fats which play a vital role in providing energy and nutrition. Patali is made from date molasses which is a favorite food of Bengalis. Date molasses is used to make cakes, puli, different sweets.
Starting from green vegetables, fish, meat, eggs, milk, yellow fruits, etc., have taken regular place in the first row of human food list. They are rich in nutrients and vitamins which help in increasing the immunity of our body, on the other hand it provides energy to the body. Among the essential nutrients in the human body are energy supplements and disease-fighting nutrients. Energy supplements include carbohydrates, proteins and fats. Immunosuppressive foods include vitamins, minerals, etc. Only in winter, the juice collected from date palms through special human planning is rich in mineral and nutritional value. It contains fifteen to twenty percent dissolved sugars which can provide fast energy to the body. So in winter it is known as energy-drink. It contains macro element iron which plays an important role in making hemoglobin in the body. Both date juice and date molasses are important among Bengalis. It is important to use special safety nets to protect the collected date juice from various nocturnal animals such as bats, ticks, etc. in the dark of night.
Your post has been upvoted (1.22 %)
Delegate more BP for better support and daily BLURT reward 😉
Delegate BP Here
Thank you 🙂 @tomoyan
https://blurtblock.herokuapp.com/blurt/upvote