বিবি নিউজ ২৪ ডট কম পত্রিকা - থেকে এই মাত্র জানতে পারলাম যে, পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেইনের সাইবার যোদ্ধারা।
যুদ্ধ নির্ধারণ করে না কে সঠিক। এটি নির্ধারণ করে কে জীবিত।
রাশিয়া-ইউক্রেইনের সামরিক উত্তেজনার শুরু থেকেই রাশিয়ার হ্যাকারদের দৌরাত্বের খবর শোনা গেলেও এবার হয়তো পাল্টে যাচ্ছে সেই দৃশ্যপট। রাশিয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা এবং রেল ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোয় হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেইনের সাইবার যোদ্ধারা।
রাশিয়ার গুরুত্বপূল্ণ অবকাঠামোয় সাইবার হামলা চালানোর খবর বার্তাসসংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে ইউক্রেইনের বেসামরিক হ্যাকার দলটির মূল সমন্বয়কারী।
গেল সপ্তাহেই সাইবার হামলা থেকে দেশ রক্ষায় স্থানীয় হ্যাকারদের সাহায্য চেয়েছিল ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ইগর অশেভের মাধ্যমে হ্যাকারদের সংগঠিত করেছে ইউক্রেইন সরকার।
অশেভ রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং সামরিক অস্ত্রের সরবরাহ ব্যবস্থার উপর সাইবার হামলার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন সোমবারেই।
রয়টার্সকে অশেভ বলেন, “লক্ষ্য হচ্ছে এই অস্ত্রসরঞ্জাম আমাদের দেশে নিয়ে আসা অসম্ভব করে তোলা।”
তার সংগঠিত হ্যাকারদের দল এর মধ্যেই রাশিয়ার কয়েক ডজন সরকারি ও ব্যাংকিং ওয়েবসাইট অকেজো করে দিয়েছে অথবা চেহারা পাল্টে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন অশেভ; ক্ষেত্রবিশেষে ওয়েবসাইটের কনটেন্ট পাল্টে পোস্ট করা হয়েছে যুদ্ধের ভয়াবহতার ছবি।
রাশিয়ান শক্তির কাছে নিজ দেশের হ্যাকারদের পরিচয় ও অবস্থান গোপন রাখার স্বার্থে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি তিনি।
ইউক্রেইনে সামরিক অভিযানকে ‘বিশেষ অভিযান’ বলে আখ্যা দিচ্ছে রাশিয়া। রাশিয়ার দাবি, দখলদারি চালাতে নয় বরং দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিবেশির সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করতে এবং ‘বিপজ্জনক জাতীয়তাবাদীদের’ আটক করতে অভিযান চালাচ্ছে তারা।
অন্যদিকে, অশেভ এবং তার হ্যাকারদের দলকে নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইউক্রেইন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা। অশেভ বলছেন তার দলে অন্তত এক হাজার ইউক্রেইনীয় নাগরিক এবং বিদেশি স্বেচ্ছাসেবক আছে।
এর মধ্যেই বিদেশি হ্যাকারদের একটি সংগঠনের সঙ্গে জোট বেঁধে রাশিয়ার রেল ব্যবস্থার উপর হামলা চালানোর দাবি করেছেন তারা। অশেভের হ্যাকারদের দলটির খবর প্রচারিত হওয়ার পর ‘বেলারুশিয়ান সাইবার পার্টিশান’ নামের হ্যাকারদের আরেকটি দল বেলারুশের রেলওয়ে ব্যবস্থার উপর সাইবার হামলা চালানো শুরু করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। বেলারুশের রেললাইন ব্যবহার করে রাশিয়ার সৈনিকদের পরিবহন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
অশেভের দলের সঙ্গে জোট বেঁধে কাজ করার খবর রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন ‘সাইবার পার্টিশান’-এর এক মুখপাত্র।
“আমরা ইউক্রেইনের নাগরিকদের পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছি। তারা শুধু নিজেদের স্বাধীনতার জন্য লড়ছে না, আমাদের স্বাধীনতার জন্যেও লড়ছে। স্বাধীন ইউক্রেইন ছাড়া বেলারুশের টিকে থাকার কোনো সুযোগ নেই।”
বেলারুশের রেলওয়ে ব্যবস্থার উপর সাইবার হামলার খবর নিশ্চিত করেনি রাশিয়া। তবে মঙ্গলবার দুপুরেও বন্ধ ছিল বেলারুশের রেলওয়ে ব্যবস্থার ওয়েবসাইট।
এ প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি ওয়াশিংটনে অবস্থিত রাশিয়া দূতাবাসের মুখপাত্র।
তবে, মঙ্গলবার রাশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে সাইবার হামলার খবর নিশ্চিত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। রাশিয়ান দূতাবাসগুলো “ইউক্রেইনের সাইবার সন্ত্রাসীদের” হামলার শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মস্কোয় পাল্টা হামলা চালানোর পাশাপাশি, দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন শহরে ছদ্মবেশে লুকিয়ে থাকা রাশিয়ার গোয়েন্দা ইউনিটগুলোকে ধরতে তার হ্যাকার দল ইউক্রেইনের সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন অশেভ।
সেলফোন ট্র্যাক করার প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর লুকিয়ে থাকা ইউনিটগুলোকে চিহ্নিত করার কৌশল আবিষ্কারের দাবি করেছেন অশেভ। তবে, এ প্রসঙ্গেও বিস্তারিত জানাননি তিনি।
একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইউক্রেইনের মধ্যে যোগাযোগ করতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বাজারজাতকৃত সেলফোন ব্যবহার করছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।
রয়টার্স বলছে, গেল সপ্তাহের পুরোটা জুড়েই ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অফ সার্ভিস (ডিডিওএস) হামলার শিকার হয়েছে রাশিয়ার সরকারি ওয়েবসাইটগুলো। ভুক্তভোগী সাইটের তালিকায় আছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি কার্যালয়ের ওয়েবসাইটটিও।
খবরটা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে।