আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন, আশাকরি সবাই ভালই আছেন, আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল আছি।
আবারো হাজির হলাম আপনাদের সামনে আমার আরেকটি নতুন পোস্ট নিয়ে। এবার আমি লিখতে যাচ্ছি' বাংলাদেশের সোনালী আঁশ পাট সম্পর্কে। আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনাদের সবার ভালো লাগবে।
পাট উদ্ভিদ জাতীয় একপ্রকার গাছের আঁশ। পৃথিবীর পাটের তিন চতুর্থাংশ বাংলাদেশ জন্মে। অন্যান্য দেশে উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। সেজন্য বাংলাদেশের এ প্রধান অর্থকরী ফসলকে সোনালী আঁশ বলা হয়।
পাটের বর্ণনা:
পাট এক প্রকার মৌসুমী উদ্ভিদ। এটা সাধারণত শুরু অথচ পাঁচ থেকে নয় দশ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। কাঁচা পাট গাছ সবুজ রংয়ের হয়। আবার লাল রংয়ের পাট গাছ পাওয়া যায়। পাট গাছের ভেতরের অংশকে পাটকাঠি বলা হয়। এর কোনো বিশেষ ডালপালা হয় না। শুধু মাথার দিকে কয়েকটা পাতা হয়।
পাট উৎপাদন এলাকা:
নিম্ন অঞ্চলের পলিযুক্ত দোআঁশ সমতল ভূমি, যেখানে বর্ষায় পানি অনেকদিন জমে থাকে, সেখানে পাট ভালো জন্মে। সেজন্য বাংলাদেশের জমি চাষের বিশেষ উপযোগী। বাংলাদেশ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পাট উৎপাদন কেন্দ্র।
বাংলাদেশের সব জেলাতেই কমবেশি পাট জন্মে। তবে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ঢাকা, কুমিল্লা, ফরিদপুর, পাবনা, রংপুর, রাজশাহী জেলায় পাট বেশি জন্মে।তুলনামূলকভাবে ময়মনশাহী, কুমিল্লা ও পাবনার পাট উৎকৃষ্ট। এর আঁশগুলো দীর্ঘ শক্ত ও সুন্দর।
পাট চাষের পদ্ধতি:
পাট চাষের জন্য যথেষ্ট রস যুক্ত শক্ত নির্দিষ্ট জমি উত্তমরূপে চাষ করে ফাল্গুন চৈত্র মাসে বীজ বুনতে হয়। পাট বীজ বোনার পর মাঝে মাঝে অল্প অল্প বৃষ্টি হলে ভালো হয়। এতে চারাগুলো অল্প সময়ে সবল হয়ে বেড়ে ওঠে।
তবে অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টি উভয়ের পক্ষে ক্ষতিকর। চারা গাছ গুলো একটু বড় হলে পাটক্ষেত নিভিয়ে আগাছা মুক্ত করতে হয়। সবল গাছ গুলো রেখে দুর্বল গাছ গুলো ফেলে দিতে হয়। এতে সফল গাছগুলো আরো খাদ্য পায় এবং অধিক তো আর সবল ও লম্বা হয়ে ওঠে।
অতঃপর এ আঁশ রৌদ্রে শুকিয়ে নিলেই ব্যবহারের উপযোগী হয়। পাট ছাড়ানোর পর পাট গাছের যে শক্ত অংশ থাকে, তাকে পাটকাঠি বা পাটশোলা বলে।
পাটের ব্যবহার:
পাদ দিয়ে দড়ি, রশি, চট, ত্রিপল, থলি, কার্পেট, ছালা ইত্যাদি তৈরি করা হয়। বর্তমানে পাটকাঠি দিয়ে মূল্যবান কাগজ, পারটেক্স ও অন্যান্য জিনিসপত্র তৈরি করা হয়। পাটকাঠির জ্বালানি ও গৃহের কাজে ব্যবহৃত হয়। পাট গাছের কচি পাতা গুলো শাক হিসেবেও খাওয়া যায়। ঝরে যাওয়া পাতা সবুজ সার এ পরিণত হয়। মোট কথা, পাটের কোন অংশেই ফেলনা নয়। এর প্রতিটি অংশই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
তাই পাট বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকারী ফসল। পাটগাছের প্রতিটি আজ ব্যবহৃত হয়। সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে পাট চাষীদের সার্বিক সহযোগিতায় সকলের এগিয়ে আসা অত্যাবশ্যক।