বিশ্বের প্রতিটি দেশেই শিশু অধিকার একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করি জাতিসংঘ সনদে শিশু অধিকার সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে।
জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশও এ সনদে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। তাই রাষ্ট্র দেশের শিশুদের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে শিশু অধিকার এর আওতায় আঠারো বছরের নিচে পর্যন্ত বয়সে সকলকে শিশু হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
শিশু অধিকার আইনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে জুকিপুন্য কাজ অর্থনৈতিকভাবে শোষণ শিশুদের অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়। শিশুর সামাজিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করে ভেজে সব সে সব বিপদ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হবে (ধারা ৩২)।
শিশুদের সকল প্রকার হয়রানি নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে হবে (ধারা ৩৫) এ বলা আছে। এমনকি শিশু শিক্ষা লাভের অধিকার কে স্বীকৃতি দিতে হবে (ধারা ২৮) বলা আছে।
কিন্তু বড় দুঃখের ব্যাপার এই যে আমাদের বাংলাদেশে এসব কথা আর কোন বাস্তবায়ন আজও সম্ভব হয়নি বলে আমি মনে করি। কারণ বিশ্বের নানান জায়গায় চলছে যুদ্ধ আর এসব যুদ্ধে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই শিশুরা শেষ পাঁচটি মৌলিক অধিকার রয়েছে এই অধিকার শুধু ঘোষণাপত্রকে মধ্যে সীমাবদ্ধ।
শিশুর ভবিষ্যৎ গড়ে উঠেছে অমানবিকতায় অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে আমাদের দেশের হাজার হাজার শিশুর। তারা খাবারের অনাটনে এবং পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে অল্প বয়স থেকেই কাজ করতে নেমে পড়ছে।
শিশুশ্রম বন্ধকরণে কতিপয় কিছু পদক্ষেপ
এদেশে জনসংখ্যার প্রায় ৪৪% দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। পরিবারের আর্থিক চাপে শিশুরা শ্রম এ নিয়োজিত হচ্ছে দরিদ্র পরিবারের অধিক জন্মের হার শিশুশ্রম এর অন্যতম কারণ।
বাংলাদেশ সরকার শিশুশ্রম প্রতিরোধে সীমিত আকারে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তা হল।
১) শিশুদের জন্য শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রণয়ন করতে হবে।
২) মেয়েদের জন্য এসএসসি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা প্রবর্তন।
৩) বাধ্যতামূলকভাবে প্রাথমিক শিক্ষায় এবং বিনামূল্যে শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করতে হবে।
৪) উপবৃত্তি কার্যক্রম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
৫) পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা ।
আমার মতে সরকারের এসব নীতিমালার পাশে আরো কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত কারণ এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করার পাশাপাশি যদি এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় তাহলে শিশুদের জন্য আরো ভালো কার্যকলাপ হবে ।
১) সরকারের পাশাপাশি N G O গুলো প্রাতিষ্ঠানিক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে এগিয়ে আসতে পারে এ ব্যবস্থায় পথশিশু ও অবহেলিত শিশুদের সম্পৃক্ত করা উচিত।
২) কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ও কারিগরি শিক্ষাকে বিশেষ মর্যাদা দিতে হবে ।
৩) শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে এ ব্যাপারে সরকারের শিশুমনের মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা উচিত ।
৪) শিশুশ্রমের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে এজন্য সংবাদপত্রসহ গণমাধ্যমকে কাজে লাগাতে হবে ।
৫) শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হবে এ ব্যাপারে গণসচেতনতা ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন ।
৬) দরিদ্র বিমোচন কর্মসূচিতে দরিদ্র শিশুদের সম্পর্ক করা যায় কিনা ভেবে দেখতে হবে তাদের সাহায্যের জন্য অন্য কোনো কর্মসূচি নেওয়া যায় কিনা তা যাচাই করা দরকার ।
বাংলাদেশের শিশু বাজারে শিশুশ্রম একটি বিরাট অংশ জুড়ে আছে হঠাৎ করে শিশুশ্রম বন্ধ বা নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়। এর জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করার আগে দেখা প্রয়োজন শিশুরা কোন শ্রম দিতে বাধ্য হয়।
এর কারণগুলো চিহ্নিত করে বাস্তবমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে শেষ করতে হবে বাংলাদেশ জাতীয় সংগ্রহশালা স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে সরকারের যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে তেমনি জনগণের ও শিশুশ্রমের ভবিষ্যৎ পরিনিত ও ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। তবেই বাংলাদেশে শিশুশ্রম প্রতিরোধ করা সম্ভব।