বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
আমি আজকে আপনাদেরকে বলবো ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ আশা।
প্রিয় বন্ধুরা আপনারা অবগত আছেন যে আমি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করি। করোনার দীর্ঘ ছুটির পর মাদ্রাসায় গিয়েছি। লেখাপড়া আলহামদুলিল্লাহ ভালোই চলছে। লেখাপড়া করতে করতে হঠাৎ মা বাবার কথা মনে পড়ে গেল তাই ইচ্ছা করলাম একটু বাড়ি থেকে ঘুরে আসি।
এজন্য শিক্ষকদের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছি এবং বলেছি যে আমি আজকে ক্লাস শেষ করে বাড়িতে যাব, দিনটি ছিল মঙ্গলবার, হুজুর আমাকে ছুটি দিলেন, বললেন ঠিক আছে তুমি যাও, এরপরে আমি ব্যাগটা গুছিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। প্রথমে আমি একটা অটোতে করে নবাবগঞ্জ আসি এরপর ওখান থেকে সিএনজিতে করে হেমায়েতপুর আসি, আসার পর আমাকে নেমে দেওয়া হয়, আমার কাছে 1000 টাকার নোট ছিল আর সিএনজি ড্রাইভার এর কাছে খুচরা ছিল না তাই সে একটা গ্যাস পাম্পে গেল এরপর সে ওখানে গ্যাস উঠিয়ে টাকাটা খুচরা করল। এরপর আমাকে টাকা দিল হঠাৎ করে একটা লোক এসে এসে আমার সামনে উপস্থিত হল,
তার হাতে ছিল কয়েকটা টিকেট, আমাকে বলল! হুজুর কোথায় যাবেন? আমি লোকটাকে দেখে তেমন একটা সুবিধার মনে করলাম না যাইহোক আমি বললাম একটু অপেক্ষা করেন আমি আগে টাকাটা বুঝিয়ে নেই। লোকটি বললো আচ্ছা ঠিক আছে। এরপরে আমার টাকা নেওয়া শেষ হলো লোকটি আমাকে ডাক দিয়ে বললো কোথায় যাবে আমি বললাম সিরাজগঞ্জ যাব। উনি আমাকে বললেন ঠিক আছে ভালো কথা আমার বাসা সিরাজগঞ্জ, কাজিপুর থানা, এরপরে আমি বললাম আমার তো কাজিপুর থানা উনি আমার সাথে হ্যান্ড শিপ করলেন এবং বললেন যাক ভালই হল একজন পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হলো। এবং খুব রস ভরা মুখে বলতে লাগলো ঠিক আছে তাহলে তুমি এখান থেকে টিকেট সংগ্রহ করো আমি তোমাকে বাসে উঠিয়ে দিই। আমি মনে মনে তাকে ততটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না পরে উনি আমাকে বলল আড়াইশো টাকা ভাড়া টাকা দাও। বললাম না, আমি আড়াইশো টাকা দিয়ে যাব না, উনি আমাকে বললেন দেখো এখানকার ভাড়া আড়াইশো টাকা করে, আমি বললাম না আমি অনেক সময় এখান দিয়ে যাওয়া আশা করি আমার থেকে দেড়শ টাকার ওপর ভাড়া নেয় না। উনি আমার সাথে অনেক পীড়াপীড়ি করলেন বললেন, ঠিক আছে 200 টাকা দাও আমি রাজি হলাম না অবশেষে দেড়শ টাকা লিখে দিলো, আমি বললাম আমি আপনাকে আগে টাকা দিতে পারবোনা, আপনার গাড়ি কই? উনি আমাকে বললেন গাড়ি আছে আমি তোমাকে গাড়িতে উঠিয়ে দেবো। বললাম আপনি আগে আমাকে উঠিয়ে দিন এরপর আপনাকে আমি টাকা দেব। এরপর উনি একটা গাড়ি দাঁড় করালেন
এবং আমাকে বললেন টাকা দাও এরপর আমি উনাকে টাকা দিয়ে দিলাম। উনি আমাকে গাড়ির কাছে নিয়ে গেলেন এরপর হেলপার বললো ভাড়া কত আর ওই লোকটি বলল 100 টাকা, হেল্পার বললো না 100 টাকাতে নেব না উনি খুব পিড়াপিড়ি করলেন কিন্তু হেলপার 100 টাকাতে নেবে না অথচ আমি তাকে ভাড়া দিয়েছি 150 টাকা 50 টাকা রেখে দিয়ে 100 টাকা ভাড়া দিচ্ছে! কিন্তু গাড়িওয়ালা আমাকে নেবেনা! বেচারা খামাখা আমাকে একটা পেরেশানির মধ্যে ফেলল এরপর আমি বললাম আমি যাবনা আমার টাকা আমাকে ফিরিয়ে দিন। আমার টাকা দিয়ে আমি যাব আপনি দালালি করেন কেন? এরপরে গাড়িতে উঠলো, উঠে আমাকে ডাক দিলো উঠ গাড়িতে!বলে আমার সাথে দুর্ব্যবহার করতে লাগলো,, টাকা দেওয়ার পর থেকে দুর্ব্যবহার শুরু,, হঠাৎ করে গাড়ি ছেড়ে দিল গাড়ি চলতেছে চলতেছে আমি অনেক পিছে পড়ে গেলাম এরপর চিন্তা করলাম লোকটি আমার টাকা নিয়েছে দেড়শো ওকে ধরতেই হবে তাই আমি খুব দ্রুত গাড়ির নিকট পৌছালাম এবং গাড়ির ভিতরে আমাকে ইঞ্জিন কভার এর উপর বসিয়ে দিলো বললো তোর ছিট এখানে,, এখানে সিট বস! আমি বললাম কেন আমার এখানে সিট হবে আর আপনি আমার সাথে দুর্ব্যবহার করছেন!!কেন আমি ভাড়া দিয়েছি দেড়শ টাকা,, ড্রাইভারকে বললাম আমাকে নিতে হবে উনি আমাকে বললেন না তোমার ভাড়া দেয়া হয়েছে 100 টাকা তোমাকে এখানে যাইতে হবে ঐ বেচারাকে আমি বললাম শুনুন দুনিয়াতে যেরকম আপনি আমার 50 টাকা মেরে খাওয়ার জন্য আমাকে পেরেশানি করলেন। কিয়ামতের দিন আমাকে 50 টাকায় আপনাকে দিতে হবে আমাকে এ কষ্টের প্রতিদান আপনাকে দিতে হবে। আমার খুব রাগ হয়েছিল কিন্তু কিছু বললাম না। যাইহোক এভাবে ধীরে ধীরে আমি বাড়ির দিকে আসতে লাগলাম এরপর এশার নামাজের সময় আমি বাড়িতে এসে পৌছালাম এরপরে শুকরিয়া আদায় করলাম আলহামদুলিল্লাহ।।
শিক্ষা,,, রাস্তাঘাটে এমন দালাল লোকের অভাব নেই বর্তমান শহরে,, তাই সকল ভাই ও বন্ধুদের প্রতি আমার এই বাণী যে, আপনারা কোন দালাল ব্যক্তির ধানদাই যেন না পড়েন,, আর যদি পড়েন তো এ কথাটি স্মরণ রাখবেন। তাদেরকে কখনো বিশ্বাস করবেন না ধোঁকা খেতে হবে, আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হেফাজত করুন আমিন।। খোদা হাফেজ।।