আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন? আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল আছি।
Sorsce
আমি এবার লিখব বাংলাদেশের চা সম্পর্কে।আজকালকার যুগে চা পান করা একটি অভ্যাস হয়ে গেছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় সকল লোকই চা পান করে থাকেন। আসলে এত চা পাতী গুলো কোথা থেকে আসে তা নিয়েই আমি আলোচনা করব।
বর্তমান সভ্যতা এক প্রকার পানীয় বস্তু। সর্বপ্রথমে চীন দেশে চা উৎপন্ন ও ব্যবহৃত হয়। করে চীন দেশ থেকে আমাদের দেশের আমদানি হয়। ইউরোপীয়রা খুব আনন্দের সাথে চা পান করে। আজকাল আমাদের দেশের সর্বস্তরের জনগণ চা পানে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশের চা কোথায় জন্মে:
বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় প্রায় আড়াই লক্ষ বিঘা জমিতে চায়ের চাষ হয়। এখানে প্রায় ১৩০ টি চা বাগান আছে। এতে বছরে প্রায় ৫ কোটি পাউন্ড চা উৎপন্ন হয়ে থাকে। একবার চা গাছ লাগানো হলে তা থেকে অনেক দিন পর্যন্ত চা পাতা সংগ্রহ করা যায়।
চা গাছের কচি কচি ও ছোট ছোট সাদা শাড়ির পাড় শাড়ি ঢালু ক্ষেত্রে সাজানো থাকে। চা চাষের জন্য পার্বত্য ভূমি অনুকুল। চা গাছ বাঁচাবার জন্য অতিশয় যত্ন ও পরিশ্রম সহকারে ক্ষেতের আগাছা গুলো নিড়িয়ে দিতে হয়।
চা গাছ দশ বার ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। সচারাচর তিন চার ফুটের বেশি বারলে চা পাওয়া যায় না। এজন্য বেশি বাড়ার সময় বাড়ার মাথা ছেঁটে দিতে হয়। মাথা ছেঁটে ফেলার পর চারা গাছ গুলো অতি সুন্দর ঝোপের মত দেখায়।
যখন বাগান থেকে চায়ের পাতা তোলা হয়, তখনকার দৃশ্য বড় চমৎকার। স্ত্রী-পুরুষ শ্রমিকরা অতি ভোরে বাঁশের ঝুড়ি পিঠের উপর নিয়ে, ঘাড়ের সঙ্গে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দলবেঁধে চা ক্ষেতে যায়, আর মহা উল্লাসে চায়ের পাতা সমান করে ঝুরি বোঝাই করে।
বছরের মধ্যে তিনবার এভাবে পাতা সংগ্রহ করা যায়। চা পাতা তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। প্রথমবার চারা থেকে পাতা সংগ্রহ করার পর বাতাসে পাতাগুলো শুকিয়ে নিতে হয়। তারপর একটু নরম হলে এসে গুলোকে মেশিনে রোল করার পরে ঠান্ডা গুদাম ঘরে রাখতে হয়। শেষে চালুনি দিয়ে চেলে নানারূপ শ্রেণীতে বিভক্ত করে বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়।
প্রস্তুত প্রণালী:
পানোউপযোগী চা প্রস্তুত করা অতি সহজ। একটি পাত্রে গরম পানি রেখে তাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ চায়ের পাতা দিয়ে পাত্রের মুখ কোন ঢেকে রাখতে হয়। একটু পরে পানি কোন পাত্রে ঢেলে ছেকে নিতে হয়। তারপর পরিমাণ অনুযায়ী দুধ ও চিনি মিশিয়ে পান করতে হয়। অনেকে দুধের পরিবর্তে লেবু আদা দিয়ে চা পান করে থাকেন।
চা উত্তেজক পদার্থ। এতে শরীরের জড়তা দূর করে। চা পান করে অধিক রাত পর্যন্ত জাগ্রত থাকলেও বিশেষ কষ্ট বোধ হয় না। চা পান করলে সর্দি কাশি প্রভৃতি রোগ এর উপশম হয়।
শীতপ্রধান দেশে চা পান শরীরের পক্ষে কি উপকারি, কিন্তু গ্রীষ্মপ্রধান দেশে এটা কম পান করা হয়। বেশি চা পান করলে খুদা নষ্ট হয়ে যায় এবং অধিক পান করার ফলে স্বাস্থ্যহানি ঘটতে থাকে।