বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
আল্লাহর রহমতে আমি ভালো আছি। আপনারা কেমন আছেন? মনে হয় আপনারা ভালো আছেন।
আমি এবার লিখতে যাচ্ছি' কলমের অভিমান সম্পর্কে।
বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুর অভিমান হয়, এমনকি মায়ের সাথে সন্তানেরাও অভিমান হয়। কিন্তু লেখক এর সঙ্গে কলমের অভিমান! নাহ, এমন কথা কখনো শুনিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার সাথেই কি না ঘটে সে অদ্ভুত ঘটনা। আমার সঙ্গে আমার কলমের অভিমানের ঘটনা। শোনো সে কাহিনী।
মিনতি জানালাম, হে কলম! হে বন্ধু আমার! তোমার প্রতি এতদিনের অবহেলার জন্য আমি অনুতপ্ত। ক্ষমা করো বন্ধু! অভিমান করে আর লুকিয়ে থেকো না! এসো, কাছে এসো! আমার হাতে ওঠো, আমাকে শব্দ দাও, বাণী ও বক্তব্য দাও। আমাকে ভাব ও মর্ম উপহার দাও।
এবং আশ্চর্য! আমার আকুতি ও মিনতিতে আমার কলমের অভিমান বিগলিত হলো । দুটি বইয়ের ফাঁক থেকে উঁকি দিয়ে আমার কলম যেন বলে উঠলো, এই যে আমি এখানে।
আমিতো অবাক! এত তন্ন তন্ন করে খোঁজার পর কিভাবে আমার নজর ফাঁকি দিয়ে ছিলে এতোক্ষন! যাহোক মনটা আনন্দে নেচে উঠলো। আলতো করে কলমটাকে হাতে তুলে নিলাম এবং খাতা খুলে লিখতে বসে গেলাম। আর তখনই দেখা দিল দ্বিতীয় বিপত্তি। কলম থেকে কালি ঝরছে না। অনেকদিনের অযত্নে কলমের নিব শুকিয়ে গেছে। আমার মনে হল, আসলে কলমের অভিমান কখনো ভাঙ্গেনি।
এটাই স্বাভাবিক। এত দীর্ঘ দিনের অনাদর অবহেলা কে-ই বা সইতে পারে । অনেক যত্নে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে কলমে নতুন কালি ভারলাম। তারপর নতুন উৎসাহে লিখতে বসলাম। তখন দেখা দিল আসল বিপত্তি। মনের পদ্মায় ভাসমান ভাব ও ভাবনাগুলো উধাও। কাগজের ময়দান বিলকুল ফাঁকা, যেন ঊষর মরুভূমি। এভাবে ভীষণ মুষড়ে পড়লাম। আমার প্রিয় কলম কি তাহলে চিরজনমের মতই আমার সঙ্গে অভিমান করল!
হতাশায় যখন ভেঙে পড়ার উপক্রম তখনই আমার মনে পরল একটা কথা। হতাশা মুমিনের জন্য নয়, তোমার কাজ চেষ্টা করা, তুমি চেষ্টা করো। মনের ভাব ও ভাবনা যদি খুঁজে না পাও তাহলে কলমের সঙ্গে অভিমানের কথায় লিখ। সেও তো এক চমৎকার ভাবনা।
তখন আমার বোধোদয় হল। আমি লিখতে বসলাম এবং আশ্চর্য! কলমের গতি সাবলীল হতো। শব্দের পর শব্দ ঝরতে লাগল, যেন জলপ্রপাত! আমার কলম যেন আমার প্রতি আগের মতোই প্রসন্ন। দেখো কলম আমাকে কেমন চমৎকার একটি লেখা উপহার দিল!
আমি প্রতিজ্ঞা করলাম, আজ থেকে কলমের প্রতি আর কোনো অবহেলা করবো না। সব সময় আমি আমার কলমের যত্ন নেব। কলম কে আর কখনো অভিমান করার সুযোগ দিব না।