লোভ জিনিসটা কখনও আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না। কোনো কিছুর উপর অতিরিক্ত লোভ করাটা সব সময় আমাদের জন্য হানিকর। সেটা হতে পারে অর্থের উপর লোভ আবার হতে পারে খাবারের উপর।
একটা কথা প্রচলিত আছে, লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু। অতিরিক্ত লোভী ব্যক্তিদের নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না এবং নিজেকে সংযম রাখতে পারে না। আজ হঠাৎ করে লোভ নিয়ে কেন লিখছি? তার কারন এমন একটা ঘটনা শুনলাম যে এই বিষয়ে না লিখে পারছি না।
IMG_20240408_111836.jpg
আমাদের গ্রামে একজন লোক আছে। সে খেতে খুব ভালোবাসে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে লোকটা খুবই খাদ্যরসিক মানুষ। তার নিজের উপর খাওয়া নিয়ে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। বেশি বেশি খাবার খাওয়ার কারনে অন্যদের তুলনায় তার স্বাস্থ্যও তুলনামূলক অনেক বেশি।
নিজের ভালোর জন্যেও সে বেশি খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে না। সব থেকে মজার কথা হলো, কোনো নিমন্ত্রণ বাড়িতে খেতে গেলে, খাওয়া শেষ করার পর লোকটা নিজে নিজে উঠে দাঁড়াতে পারে না। ১/২ মিলে তাকে ধরে উঠায় দিতে হয়।
এজন্য যে সে অন্যদের নিকট হাসির পাত্র হচ্ছে সেটা সে খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে তবুও নিজের এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা মাত্র করেন না।
IMG_20240408_111829.jpg
এক পর্যায়ে তার শরীরের মেদ অনেক বেড়ে গেছে এবং নানা অসুখে অসুস্থ হয়ে পড়ে বারবার। অসুস্থ হলে সে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলো। তখন ডাক্তার বললো যে অতিরিক্ত মেদ জমেছে পেটে আর একারনেই নানা অসুবিধা দেখা দিচ্ছে।
তখন লোকটা ডাক্তারের কাছে পরামর্শ চাইলো। তখন ডাক্তার তাকে অপারেশন করে নিজের পেটের মেদ কেটে ফেলার পরামর্শ দিলো এবং এটাও বললো, সুস্থ হতে হলে অবশ্যই অপারেশন করে পেটের মেদ কমিয়ে ফেলতে হবে!
অনেকেই রয়েছে যাদের স্বাস্থ্য স্বাভাবিকভাবেই ভালো হয় আর অনেকে এমন অতিরিক্ত খাবার খেয়ে নিজের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়।কোনো উপায় না পেয়ে লোকটা অপারেশন করালো এবং মেদ কমিয়ে আনলো। এখন অবশ্য আগের মতো বেশি বেশি খাবার খায় না।
IMG_20240409_101824.jpg
আমরা নিজের খারাপ অভ্যাসগুলো সম্পর্কে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো গুরুত্ব দেই না যতক্ষণ না সেটা আমাদের জন্য অনেক বড় খারাপ অভ্যাস ডেকে আনে। ইচ্ছে করলে পরিবর্তন সবাই হতে পারে, প্রয়োজন শুধু পরিবর্তন হওয়ার মানসিকতা।
লোকটা যদি আগে থেকে নিজের লোভ কে সংবরণ করতো এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতো তাহলে হয়ত আজ এত বড় অসুবিধায় পড়তে হতো না।
এটা ঠিক যে পৃথিবীর সবাই এক রকম হয় না। কেউ কেউ হয়ত অতিরিক্ত খেতে পছন্দ করেন তবে সব কিছু একটা নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। ডাক্তারাও রোগীকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ঔষধ খাওয়া পরামর্শ দেন কারন অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়।