খেলাধুলা ও জাতীয় জীবন : খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অনেক আগে থেকেই বিশ্বের সর্বত্র অনুভূত হয়েছে। প্রত্যেক দেশেই নিজ নিজ পরিবেশ অনুযায়ী বিশেষ বিশেষ খেলার উদ্ভব ও প্রচলন হয়েছে। প্রথমে আনন্দের উপকরণ হিসেবে শুরু হলেও পরে তা শিক্ষার উৎসে পরিণত হয়েছে। তাই খেলা শুধু খেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে নি, হয়েছে শিক্ষার অঙ্গ। তাছাড়া যেকোনো খেলাই উদ্ভবের পর থেকে ক্রমে ক্রমে অগ্রসর হয়েছে বৈচিত্র্যের দিকে। পৃথিবীতে এখন অনেক খেলার সমারোহ। তার মধ্যে কিছু কিছু ব্যয়বহুল খেলা আছে, আবার ব্যয়হীন খেলারও অভাব নেই। বয়সের ভিন্নতার পরিপ্রেক্ষিতে খেলার স্তরবিন্যাসও আছে। কিছু কিছু খেলা আছে যা কেবল ছোটরাই খেলে। তবে খেলাধুলার একটি বিশেষ গুণ এর সর্বজনীনতা। ফলে বিশ্বের এক দেশের খেলা অন্য দেশে প্রচলিত হয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা সারা বিশ্বের মানুষের কাছে স্বীকৃত বলে বহু খেলা আন্তর্জাতিকতার মর্যাদা লাভ করেছে। তাই খেলাধুলা ব্যক্তিজীবনের গন্ডী ছাড়িয়ে, ভৌগোলিক সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক হয়ে উঠেছে। এক দেশের পরিচয়কে তুলে ধরছে আরেক দেশের মানুষের কাছে। ব্যক্তিজীবনে খেলাধুলার গুরুত্ব স্বীকৃত হয়েছে বহু আগে থেকেই। অনেক ব্যক্তির সমন্বিত রূপই হলো জাতি। স্বভাবতই জাতীয় জীবনে খেলাধুলার গুরুত্বের কথা অস্বীকার করা যায় না। খেলার মাঠ থেকেই লোকেরা নিয়মনীতি শেখে, প্রতিকূল ভাগ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে কীভাবে বিজয় আনতে হয়, তাও শেখে মানুষ খেলার মাঠ থেকে। আবার পরাজয়ের মধ্যে থেকেও শেখা হয় সহনশীলতা এবং ভবিষ্যতের প্রস্তুতি। অর্থাৎ, খেলাধুলার মধ্যে দিয়ে মানুষ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার উপায় সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। আর এ শিক্ষা এবং চেতনা জাতীয় জীবন গঠনে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
খেলাধুলা ও ব্যায়ামচর্চার দিক-দিগন্ত : জীবনের শুরু থেকে প্রতিটি মানুষের শরীরচর্চা সূচিত হওয়া উচিত। সব দেশে সব কালে সাধারণত জননীদের হাতেই সন্তানদের সুস্থ সাবলীল জীবনের ভিত্তি স্থাপিত হয়। পরবর্তীকালে মানুষ নিজের হাতেই গ্রহণ করে শরীরচর্চা ও শরীর গঠনের দায়িত্ব। নানা প্রকার খেলাধুলার মাধ্যমেও এই দায়িত্ব পালন করা যায়। কুচকাওয়াজ থেকে শুরু করে নৌকাবাইচ, কুস্তি, হা-ডু-ডু, গোল্লাছুট, ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, টেনিস ইত্যাদি খেলার মাধ্যমে সুন্দর ব্যায়ামচর্চা হয় এবং এগুলো শরীর গঠনের পক্ষে হিতকর।