সুন্দর ও আদর্শ চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে আদব-কায়দা একটি অন্যতম গুণ। গুরুজনের প্রতি ভক্তিভাব, সম্ভ্রমপূর্ণ আচার-আচরণ, শিষ্ট এবং বিনয়-নম্র কথাবার্তা ইত্যাদির সমন্বয়ে ব্যক্তির স্বভাবে যে সুকুমার বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে তাকে আদব-কায়দা বলা হয়।
সুন্দর স্বভাবের প্রধান অঙ্গ হচ্ছে আদব-কায়দা। একজন মানুষ যখন তার চারপাশে ছোট-বড়, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিত মহল এবং নিতান্তই অপরিচিত মানুষের সাথে ভক্তি, শ্রদ্ধা ও স্নেহ-প্রীতি বাজায়ে রেখে ও ভদ্র ব্যবহার করে তখন অন্যেরা তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে।
শিষ্ট অশালীন স্বভাব-চরিত্রের জ্যোতি চতুর্দিকে বিকশিত হয়। আদব কায়দায় শিষ্টতা শালীনতার নামান্তর।
সুন্দর ও আদর্শ চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে আদব-কায়দা একটি অন্যতম গুণ। গুরুজনের প্রতি ভক্তিভাব, সম্ভ্রমপূর্ণ আচার-আচরণ, শিষ্ট এবং বিনয়-নম্র কথাবার্তা ইত্যাদির সমন্বয়ে ব্যক্তির স্বভাবে যে সুকুমার বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে তাকে আদব-কায়দা বলা হয়।
Sorsce
সুন্দর স্বভাবের প্রধান অঙ্গ হচ্ছে আদব-কায়দা। একজন মানুষ যখন তার চারপাশে ছোট-বড়, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিত মহল এবং নিতান্তই অপরিচিত মানুষের সাথে ভক্তি, শ্রদ্ধা ও স্নেহ-প্রীতি বাজায়ে রেখে ও ভদ্র ব্যবহার করে তখন অন্যেরা তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে।
শিষ্ট অশালীন স্বভাব-চরিত্রের জ্যোতি চতুর্দিকে বিকশিত হয়। আদব কায়দায় শিষ্টতা শালীনতার নামান্তর।
মানব শিশুর জন্মের পর থেকে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে এবং শিক্ষা ও জ্ঞান লাভের মাধ্যমে চরিত্রগঠনের নানা গুণাবলী অর্জন করে। শিশু যাতে সৎস্বভাব ও সুন্দর চরিত্র সম্পূর্ণ আদর্শ মানুষ রূপে গড়ে উঠতে পারে সে জন্য অত্যন্ত অল্প বয়স থেকেই তাকে চরিত্রগঠনের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া হয়।
আদব-কায়দা তার মধ্যে অন্যতম। পরিবারের পিতামাতা এবং মাদ্রাসা ও শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ শিশুকে আদব-কায়দার সম্পর্কে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। পিতা মাতা কে ভক্তি শ্রদ্ধা করা, গুরুজনকে সম্মান করা, শিক্ষককে মান্য করা, বড়দের সঙ্গে বিনয়ভাবে কথা বলা, দেখা হলে সালাম, দেওয়া তাদের কথা মেনে চলা ইত্যাদি আদব-কায়দার লক্ষণ।
শিষ্টতা চারিত্রিক গুন:
যে ব্যক্তির আচরনে কথাবার্তায়, আদব-কায়দা, শিষ্টতা ও ভদ্রতা বজায় থাকে তাকে সকলে ভালোবাসে। সমাজের সেই হয় বিশেষ সম্মানের অধিকারী। বাদরা অভিনয় ব্যক্তি সর্বদা সুখের। চরিত্রের এই বিশেষ গুণ অর্জন করতে কোন টাকা পয়সার প্রয়োজন হয় না।
টাকা-পয়সার দিয়েও পৃথিবীতে অনেক জিনিস পাওয়া যায় না; অথচ সুন্দর আচরণ দিয়ে বিশ্ব জয় করা যায়। সুন্দর সৃষ্টি স্বভাবের মানুষ সবসময় ক্রোধ, ঈষা, অহেতুক রাগ, ভিত্তিহীন বিতর্ক, পা যুক্তিক কথাবার্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে চেষ্টা। বিনস্র ভাষণ, শান্ত মেজাজ, ব্যক্তির যোগ্য সম্মান প্রদান ইত্যাদি ক্ষমতা বলে তিনি খুব সহজে লোকের প্রিয় হয়ে ওঠেন। জীবনের সকল ক্ষেত্রে সকল কাজেই প্রতিবন্ধকতা জয় করার ক্ষেত্রে আদব-কায়দা একটি অন্যতম শক্তি।
আদব কায়দার গুরুত্ব:
ব্যক্তি জীবনের সকল ক্ষেত্রে আদব-কায়দা প্রয়োজন আছে। সংসারে পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, এবং অতিথি সকলের সাথে সম্ভ্রম ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণে পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে ওঠে। সমাজে একে অন্যকে যথার্থ মর্যাদা ও সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বন্ধ হয়।
রাস্তাঘাট, দোকানপাট, অফিস-আদালত, মক্তব-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ, সভা-সমিতি, সকল ক্ষেত্রেই ব্যক্তির শিষ্ট ও ভদ্র আচরণ পরিবেশ সুস্থ ও সুন্দর হয়ে ওঠে।
পরিবারের পিতা-মাতা-সন্তান এর মানুষ ও চরিত্র গঠনের প্রতি তেমন মনোযোগ দিতে পারছে না। শিক্ষা কেন্দ্র গুলো দুঃখজনকভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের সংগঠনের পাদপীঠ এর ভূমিকা থেকে সরে গিয়ে নিছক অর্থোপার্জনের প্রস্তুতি কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে।
তার ফলে সমাজে চরমভাবে আদব-কায়দার অভাব দেখা যাচ্ছে। আজকালকার ছেলেমেয়েরা অল্প বয়সে পিতা-মাতার অবাধ্য হয়ে উঠেছে। গুরুজনের সঙ্গে মুখে মুখে তর্ক করা, তাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন না করা, এমনকি ছাত্র কর্তৃক নিয়োগকৃত পেশাদার খুনি দের দ্বারা শিক্ষক প্রহৃত ও নিহত হওয়ার ঘটনা ও বর্তমান সমাজে ঘটেছে।
এর ফলে নানা সামাজিক সমস্যার জন্ম হচ্ছে। অভদ্র, অবাধ্য, উৎশৃংখল ছেলেমেয়েদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মদ, জুয়া ইত্যাদির নেশা, হাইজ্যাক, ডাকাতি, রাহাজানি, দাঙ্গা, মারপিট ইত্যাদি দুষ্কৃতী সঙ্গে যারা জড়িত থাকে তাদের চরিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে শৈশব থেকে আদব-কায়দার অভাবে তাদের মধ্যে ক্রমান্বয়ে নানা দোষ-ত্রুটির বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে।
শেষ কথা:
আদব-কায়দা সুন্দর স্বভাবের ক্ষেত্র স্বরূপ। চরিত্র একবার ভদ্রতা, বিনয় ও শিষ্টাচার ক্ষেত্রে প্রস্তুত হয়ে গেলে সেখানে চরিত্রগঠনের অন্যান্য যে কোন সৎ গুনের বীজ বপন করা হোক না কেন তা সহজে শত শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে অঙ্কুরিত হয়ে উঠবে। তাই আমাদের সকলেরই আদব-কায়দা শিক্ষার প্রতি যত্নবান হওয়া দরকার।