আবারো হাজির হলাম আপনাদের সামনে আমার আরেকটি নতুন পোষ্ট নিয়ে। আশা করি পোস্টটি পড়ে সবার ভালো লাগবে। আমি এবার লিখতে যাচ্ছি আমার প্রিয় শখ (বাগান তৈরি করা) এ ব্যাপারে ।
আসলে প্রিয় শখ বলতে কি বুঝায়: অবসর অথবা ছুটির দিনে সানন্দচিত্র ঔৎসুক্যের সাথে দিনের পর দিন যে কাজ করা হয় তাই প্রিয় শখ। বিশেষভাবে যে কাজে আনন্দ নেই, তা প্রিয় শখ হতে পারে না। প্রিয় শখের কাজে আমরা আনন্দ পাই। তাই আমাদের প্রিয় শখ আরো প্রিয় হয়ে ওঠে বলা যেতে পারে।
অনেক ছেলে-মেয়ের ডাক টিকিট সংগ্রহ করা প্রিয় শখ। বড়শিতে মাছ শিকার করাও অনেকের শখ। খেলাধুলা ও আবার অনেকের সখ। সুতরাং কার কি শখ, তা নির্ভর করে যে শখের কাজ করে তার উপর।
শখের কাজ পেশা নয় তবুও এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রিয় শখের কাজ মানুষের নিত্য নৈমিত্তিক একঘেয়েমি দূর করে তার মন সতেজ ও আনন্দিত করে তোলে।
আমি কলেজের ছাত্র। আমার অনেক শখ আছে। তন্মধ্যে প্রিয় শখের কাজ হল বাগান তৈরি করা। এটি অন্যের নিকট পেশা হলেও আমার নিকট সখ। আমি বাগান তৈরি করি, বাগানে বীজ বপন ও চারা রোপণ করি। এ পরিচর্যা, যত্ন, সংরক্ষণ করলে গরু-ছাগলের অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করা যায়।
আমাদের বাসস্থানের সম্যক একটি খালি জায়গা আছে। এতে আমি সুন্দর বাগান তৈরি করার প্রেরণা পাই। আমাদের কলেজে একটি সুন্দর বাগান আছে তা অত্যন্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। সেখানে অনেক সুন্দর ফুল ফোটে, ফল হয়, সবজি হয়।
মালি নিয়মিত পরিচর্যা করে, যত্ন নেয়। বাগানটি কয়েক খণ্ডে বিভক্ত। বিভিন্ন খন্ডে বিভিন্ন রকম ফুল ও ফলের গাছ রয়েছে। বাগানের ভিতর বিভিন্ন খন্ড করে যাতায়াতের জন্য সুন্দর ও সরু পথ আছে। কলেজের এ বাগান ও মালির কাজ আমাকে খুবই আকর্ষণ করে। আমাদের কলেজের বাগান ও মালির পরিচর্যা পর্যবেক্ষণ করতাম। আমি সময়সূচী ঠিক করে কাজ শুরু করলাম।
কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে এসে বাগানে কাজে লেগে যায়। দা, কোদাল, খুন্তি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করলাম। জমি থেকে বিভিন্ন খণ্ডে বিভক্ত করলাম এবং বিভিন্ন ফল ও ফুলের বীজ সংগ্রহ করলাম। পরিকল্পনা মোতাবেক কর্মসূচি ঠিক করে ফল ও ফুলের বীজ বপন করলাম। কিছু চারা গাছ ও শাকসবজি গাছ লাগাইলাম। আমি প্রতিদিন বিকেলে বিদ্যালয় হতে এসে বাগানে কাজ সময় কাটাতে লাগলাম। প্রতিদিনকার বাগানের কাজে আমি খুবই আনন্দিত হতে থাকি।
বীজের অঙ্কুর ছাড়াও রোপন করা তারা বড় হওয়ার সাথে সাথে বাগানে চারদিক দিয়ে বেড়া দিলাম। প্রতিদিন কলেজ থেকে ফিরে বিকেলে বাগানের পরিচর্যা কাজে লেগে পড়ি। ফলে আমি আর অলস ভাবে সময় কাটাতে পারি না। আমার যত্নে চারা গাছ গুলো বড় হয়ে উঠল।
নিড়ানি দিয়ে মাটিকে নিয়মিত ঝরঝরে করে দিতাম। অল্পদিনের মধ্যেই চারাগুলো বড় হল এবং ফুল ধরা শুরু করলো। এখন আমার বাগানকে দেখতে খুবই ভালো লাগে। বাগান রচনা আমার পড়া লেখার কোন ক্ষতি করেনি। পূর্বের চেয়ে বরং এখন পড়াশোনায় আগ্রহ আরো বেড়ে গেছে।
শারীরিক ও মানসিক শক্তি বেড়ে গেছে ফলে পড়াশোনার পূর্ব অপেক্ষা বেশি করতে লাগলাম। একদিকে আমার বাগানে ফুলে ফলে এসব আবৃত হয়ে এক মনোরম দৃশ্য সৃষ্টি করলো। অনেক বন্ধু-বান্ধবও পাড়া-প্রতিবেশী আমার বাগান দেখতে আসতে লাগল আমি পরিকল্পনা মোতাবেক কর্মসূচি গ্রহণ করে নিয়মিত কাজ করে যেতে লাগলাম। এখন আমার পরিবারের বাজার থেকে তরিতরকারি করতে হয় না।
বাগান তৈরি করে আমার জীবনে অলসতার দূর হয়ে গেছে। এবং টাটকা ফলমূল শাকসবজি তরিতরকারি বিনা পয়সায় খেতে পারছি পরিবারের সবাই। সুতরাং আমি মনে করি সাতটা প্রিয় শখ হিসেবে বাগান তৈরি করতে পারে। সকল দিক দিয়েই বাগান করা সর্বোৎকৃষ্ট প্রিয় শখ।