খেলাধুলা যে মানুষকে সুস্থদেহী, সবল ও কর্মক্ষম করে তোলে, তা প্রাচীনকাল থেকেই সর্বজন স্বীকৃত।
কারণ, দেহের সঙ্গে মনের সংযোগ অত্যন্ত নিবিড়। দেহকে সতেজ না রাখলে মন দুর্বল হয়ে পড়ে। আনন্দের মাধ্যমে শরীর গঠনের সুন্দর ব্যবস্থা আমাদের খেলাধুলা। সুস্থ শরীর ও মন গঠনের জন্য প্রত্যেকের খেলাধুলা করা উচিত। একটি জাতির প্রাণশক্তির পরিচয় পাওয়া যায় তার খেলাধুলার ব্যবস্থায়। তাই অধ্যয়নের সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত শরীর চর্চা ও খেলাধুলার প্রয়োজন। স্বাস্থ্যই সম্পদ – আর এ স্বাস্থ্য গঠন করা যায় খেলাধুলার মাধ্যমে। ব্যক্তিজীবনে যেমন, তেমনি জাতীয় জীবনেও খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা শরীর ঠিক রাখার জন্য ব্যায়ামচর্চা একান্ত প্রয়োজন। জাপানে প্রত্যেকেই প্রতিদিন কিছু না কিছু ব্যায়াম বা শরীর চর্চা করে। জাপানের কলকারখানায় কাজ শুরুর আগে হাজার হাজার কর্মী খোলা মাঠে পনের মিনিট ধরে খালি হাতে ব্যায়াম করে। কাজ শুরুর আগে
এই ব্যায়ামচর্চা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। দিনের কাজ শুরুর আগে ব্যায়ামচর্চা করলে ফিটনেস বাড়ে। শরীর ভালো থাকলে মনও ভালো থাকে। এতে
কাজ ভালো হয়। আর এ ব্যায়ামচর্চার একটা বিশেষ দিক খেলাধুলা। নানা প্রকার খেলাধুলার মাধ্যমে ব্যায়ামের কাজ হয়। বর্তমানে বিশ্ব ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পৃথিবীর প্রায় সব দেশ অংশগ্রহণ করে। মানবজীবনে ও জাতীয় জীবনে আজ খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অনেক। খেলাধুলা শরীর গঠন ও মনের আনন্দের জন্য শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। খেলাধুলায় যে নিয়ম প্রচলিত আছে, তার মাধ্যমে সুশৃঙ্খল জীবন গঠিত হয়। পাঠ্যপুস্তক থেকে যে শিক্ষা লাভ করা যায়, তার চেয়ে অনেক বেশি বাস্তব শিক্ষা লাভ করা সম্ভব হয় খেলাধুলার মাধ্যমে। তাই খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। শিক্ষা ও চরিত্র গঠনে | শিক্ষার নতুন বিন্যাস করে খেলাধুলাকে শিক্ষার অঙ্গীভূত করা প্রয়োজন। কারণ, শিক্ষা মানসিক শৃঙ্খলার কারিগর নয়,
দৈহিক শৃঙ্খলারও বিধায়ক। শারীরিক শৃঙ্খলাকে বাদ দিয়ে মানসিক শৃঙ্খলার ভিত্তি রচনা ব্যর্থ এবং অর্থহীন। শরীর এবং মনের যৌথ শৃঙ্খলাই মানুষের চরিত্রের
ভিত্তিভূমি রচনা করে দেয় এবং তাই-ই শিক্ষার লক্ষ হওয়া উচিত। তাই সকল দেশেই শিক্ষাদীক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলার বিধিব্যবস্থা থাকা দরকার।