আমি ভাগ্য বা কর্মে বিশ্বাস করি কি না ?
এটা অনেক কঠিন একটা প্রশ্ন !
অনেক মানুষের মতে, কর্মই মানুষের ভাগ্য ঠিক করে দেয়। ভাগ্য বলতে কিছু নাই।
এই কথাটা শুনতে বেশ আকর্ষণীয় ও মুখরুচক মনে হলেও এটি মূলত মিথ্যা এবং অযৌক্তিক। আর এই কথাটি ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতেও একজন ঈমানদারের ঈমানকে ধ্বংস করে দেয়ার মতো কথা।
অযৌক্তিক এবং অবাস্তব এ জন্য যে, ‘মানুষের কর্মই তার ভাগ্যকে ঠিক করে দেয়’ এটি অসত্য কথা আমরা জানি। কারণ আমাদের সমাজে বহু মানুষ আছেন তারা অনেক পরিশ্রম করেন, অনেক সাধনা করেন, অনেক কাজ করেন, নিয়মিত সুচারুরূপে পরিশ্রম করেন ।কিন্তু সেভাবে কাক্ষিত ফলাফল পান না। এরকম বহু উদাহরণ আমাদের চারপাশে রয়েছে। আবার অনেকে খুব বেশি পরিশ্রম যে করেছেন তা নয়। কিন্তু তারপরেও তার ফল তিনি বেশ ভালো পেয়েছেন।
কর্মই যদি ভাগ্য ঠিক করে দেয় তাহলে যত জন কাজ করছে সবাই তো ফলাফল ভালো পাওয়ার কথা। অথচ আমরা দেখছি কর্ম সঠিকভাবে করার পরেও অনেকে কাক্ষিত ফলাফল পাচ্ছেন না। সুতরাং বোঝা গেল ‘কর্মই আমাদের ভাগ্য ঠিক করে দেয়’ এটি অযৌক্তিক - অসত্য এবং অবাস্তব কথা।
তবে উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমি এই সিদ্ধান্ত এ উপনিত হলাম যে, আমি কর্মের পাশাপাশি ভাগ্য কে বিশ্বাস করি।
আজ থেকে প্রায় কয়েক বছর আগের ঘটনা।
আমার বড় বোন গ্রাজুয়েশন শেষ করার জন্য ফাইনাল পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
সাথে তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুও পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
দুজনেই কঠোর পরিশ্রম করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
পর্যায়ক্রমে সব পরীক্ষা শেষ করে দুজনেই।
তারপর নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার রেজাল্ট আউট হয়।
এতে আমার বড় বোন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
তার ভাগ্য ভালো ছিল যে, সব বিষয়ে পাশ মার্ক ৪০ ।
ইংরেজি বিষয়ে আমার বড় বোন ৩৭ নম্বর পায়।আর পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী , কোন শিক্ষার্থী কোন বিষয়ে ৩৭ পেলে তাকে ৩ মার্ক পরীক্ষক দিতে পারবেন।
অপরদিকে আমার বড় বোন এর বন্ধু সেই একই ইংরেজি বিষয়ে ৩৬ নম্বর পায়।
এর ফলে সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়।
দুজন শিক্ষার্থী কঠিন পরিশ্রম করার পরও শুধু মাত্র ১ নম্বরের ব্যবধানে , দুজন এর রেজাল্ট দুই রকম হলো।
তাহলে এখানে এই বিষয়টি কে নিয়ে কোন টা বিশ্বাস করবো?
কর্ম !
বা ভাগ্য।
এক্ষেত্রে আমি দুটোই বিশ্বাস করছি।
কারণ দুজনেই কঠোর পরিশ্রম করেছে। অর্থাৎ দুজনেই কর্ম করেছে।
কিন্তু ভাগ্য এর জোরে এক জন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।অপর জন অকৃতকার্য হয়েছে।
তাই সব শেষে আমার মন্তব্য হলো: কর্ম ও ভাগ্য একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।