The story of the boatman.

in r2cornell •  3 years ago 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আল্লাহর রহমতে আমিও ভালো আছি। আমি আবার লিখব একজন মাঝির জীবন

images - 2022-01-01T141854.672.jpeg
Sorsce
নদীমেখলা দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ এ দেশের বুকের উপর দিয়ে চঞ্চলা বালিকার মতো খেলা করে চলছে অসংখ্য নদ নদী তাই বর্ষা ভরা নদীর বুকে দেখা যায় অসংখ্য ছোট-বড় নৌকা।নৌকা চালিয়ে আমাদের দেশের অনেক লোক জীবিকা নির্ভর করে যারা নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্ভর করে তাদেরকে সাধারণত বলা হয়ে থাকে মাঝি।

বর্ষায় বাংলার খাল-বিল নদী নালা জলে পরিপূর্ণ হয়ে যায় বাড়ি থেকে বের হতে হলে নৌকার দরকার হয়। মাঝিরা এ সময় নৌকা নিয়ে ঘাটে হাজির হয় এবং পারাপার করে। মাজেদের জীবন কাহিনী বড়ই বিচিত্র এদেশের নিম্ন শ্রেণীর লোকেরাই মাঝির কাজ করে থাকে। তারা সাধারনত দিন এনে দিন খেয়ে জীবন ধারণ করে মাঝির একমাত্র সম্বল নৌকা খানি নৌকাকে মূলধন করে সে বের হয়।
বর্ষাকালে বাংলাদেশের সর্বত্রই নৌকা চলাচল দেখা যায় তখন নানা রকমের নৌকা চলে। অধিকাংশ নৌকাই ছোট তাতে একজন মাঝেই থাকে এসব নৌকা সাধারণত যাত্রীবাহী হয়। মালবাহী নৌকাই সাধারণত চার থেকে 16 জুন পর্যন্ত ও মাঝি থাকে। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী অঞ্চলে এই মাঝে যেয়ে দেখা যায়।

কারণ নদীপথে নৌকা চলাচল সারা বছরেই হয়ে থাকে। মাঝির অতিসাধারণ বেশ পড়েনে একটি লুঙ্গি কাঁধে একটা গামছা। মাথা রোদ বৃষ্টি থেকে রক্ষা করার জন্য থাকে একটি পাতার মাতাল আর সর্বক্ষণের সঙ্গী হুক্কা ও আগুনের পাতিল যা তার সাথেই থাকে।

মাঝির একমাত্র সম্পদ এ নৌকাখানাকে সে জীবনের চেয়ে ভালোবাসে। এটাই তার বাড়িঘর দিনরাত মাঝি নৌকাতেই কাটায় মাঝে মাঝে সুযোগ-সুবিধা ঘটলে বাড়িতে এসে স্ত্রী পুত্রদের দেখে যায়। কাজ পেলে সে নৌকা নিয়ে যাত্রী সহকারে দেশ-বিদেশে জীবন কাটায়।

স্ত্রী-পুত্রকে মাঝি পরম করুণাময়ের হাতে ছেড়ে দিয়ে যায় আর সে ও থাকে করুনাময়ের ওপর নির্ভর করে হয়তো সপ্তাহের পর সপ্তাহ কেটে যায় সেই স্ত্রী-পুত্র এর খবর পায় না ছেলে-মেয়ের মুখ দেখেনা দুঃখে কে তাদের রক্ষা করবে এই চিন্তাই কি তার কম।

মাঝে চলে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঝড় ঝঞ্ঝা বজ্রপাত মাথায় করে হয়তো বা ডাকাত জলদস্যুই তার জীবনপাত ঘটিয়ে দেবে। হয়তোবা উত্তল তরঙ্গে তার পরনে নিমজ্জিত হবে এ অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ সম্বল করে সে চলে দিক থেকে দিগন্তে দূর থেকে দূরান্তে।

মাঝের জীবন বিচিত্র অভিজ্ঞতার পূর্ণ অশিক্ষিত হলেও সে জানে কখন জোয়ার হবে কখন ভাটা হবে। সে জানে নদীর কি বৈশিষ্ট্য কোন দেশের লোকের কি বৈশিষ্ট্য দেশ ও প্রকৃতির একটা মোটামুটি বাস্তব ভৌগলিক অভিজ্ঞতা মাঝির আছে।

বিভিন্ন দেশে মাঝি বিচিত্র রকমের যাত্রী নিয়ে যাওয়া আসা করে। এতে তার বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মানুষ সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা বাড়ে পল্লীর মানুষের মধ্যে মাঝে মত এমন ভালো মানুষ খুব কমই দেখা যায়।

এ নৌকার মাঝির ঘরবাড়ি মাঝে অবসর সময়ে নিজেই রান্না করে খায় নৌকাতে রান্না করার সাজ সরঞ্জাম থাকে। তার বিছানাপত্র নৌকার মধ্যে থাকে। নৌকাতেই সে নিন্দ্রা যায়। তার সম্পদ ও সম্পত্তি এই নৌকা তাই কতনা যত্নে মাঝিরে নৌকার প্রতি।

মাঝের জীবন যে শুধু দুঃখপূর্ণ তা কিন্তু নয় মাঝে জীবনেও আছে অনাবিল আনন্দ। মাঝে মাঝে এসে যাত্রীদের নানারকম কিচ্ছা কাহিনী শুনিয়ে আনন্দ দান করে থাকে। জ্যোৎস্না আলোকিত রজনীতে সে ভরা নদীতে নৌকা ছেড়ে দিয়ে ভাটিয়ালি সুরে গান গায় আর তার অন্তরে অসীমের পরশ লাভ করে এতে সে পুলকিত হয়।

একজন মাঝির জীবনে কতই না কষ্টের সে মাঝি লোকজনদেরকে পারাপারের জন্য রোদ বৃষ্টি মধ্যেও ভিজে ভিজে সে পারাপার করে এমনকি তার কাছে মধ্যরাত বাসেরাত এগুলো হয় না কারণ সে যাত্রী পারাপার এই তার জীবন ব্যস্ত রাখে এর মধ্যেই সে তার নিজের জীবনের আনন্দ খুঁজে নেয়।

একজন মাঝি দিন এনে দিন খায় তার কাছে সাধারণত ঘোষিত কোন টাকা থাকে না। সে প্রতিদিন যা কামাই করে তা দিয়েই তার পরিবার খরচ চালায় এবং ছেলে মেয়েদেরকে লেখাপড়া করায়।

সাধারণত গ্রামেই নদী-নালা বেশি হয়ে থাকে ওই কারণে গ্রামের সংখ্যা বেশি। গ্রামের নৌকা পারাপারের ভাড়া খুবই অল্প যার কারণে ওই অল্প ভাড়া নিয়ে মাঝিদের কোন আয়নিত হয় না। এবং ক্যাশ টাকা জমা করিতে পারেনা।

মাঝিরা সমাজের কাছে লাঞ্চিত ঘৃণিত হয়ে থাকে কারণ তারা মাঝি। মাঝি বলে তাদেরকে সমাজে খুবই ঘৃণা করা হয় আসলে এসব করা ঠিক নয় কারণ তারা আমাদের মত মানুষ।

মাঝিরা নৌকা দিয়ে পারাপার করে যে অর্থ পায় তা তাদের সন্তানকে লেখাপড়ার কাজে এবং পরিবারের কাজে ব্যয় করে তারা তাদের সন্তানকে পড়াশোনা করা কারণ তারা বড় হয়ে যাতে মাঝি না হয় বরং ভালো চাকরি করে এবং তাদের পরিবারের সহযোগিতা করতে পারে এবং সচ্ছলতা আনতে পারে।

মাঝিরা বিভিন্ন সময় ঝড়-বৃষ্টি এছাড়াও অনেক বিপদের মুখেও আমাদেরকে পারাপার করে দেয়। কেউ মধ্যরাতে এসেও যদি ডাক দেয় মাঝি ভাই আমাদেরকে একটু পার করে নিয়ে যাও মাঝি মধ্যরাতেও ওই লোকগুলো পার করে নিয়ে আসে। এবং তাদেরকে তাদের বাড়ি যাওয়ার পথ সুগম করে দেয়।

আমাদের উচিত মাঝিদের সাথে সর্বোদয় ভালো ব্যবহার করা কারণ তারা আমাদেরকে তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও পারাপার করে দেয় এবং তারা তাদের পরিবার ছেড়ে নৌকাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়ে আমাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে তাদের সম্মান দিয়ে কথা বলব।

অনেক সময় দেখা যায় মাঝি তার কাঙ্খিত টাকা পায় না কারণ কিছু বকাটে বা প্রভাবশালী লোক পার হয়ে গিয়ে ভাড়া দেয় না বরং ভাড়া চাইলে তারা বলে ধমক দিয়ে ওঠে এবং ভাড়া না দিয়ে চলে যায় এবং কিছু বকাটে ছেলেরা আছে যারা এমনি পারাপার হয় কোন সময় ভাড়া দেয় না তারা মাঝিকে নির্যাতন করে।

তাই আমাদের উচিত সর্বোত্তম মাঝিদের কে সম্মান দেখিয়ে কথা বলা এবং তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা ভেবে তাদেরকে দু'পয়সা বেশি দেওয়া যাতে তারা পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE BLURT!