আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।আল্লাহর রহমতে আমিও ভাল আছি। এবার আমি লিখতে যাচ্ছি 'চেচেনিয়ায় গরিলা যুদ্ধ' সম্পর্কে।
Sorsce
চেচনিয়ায় আমাদের মুসলমান ভাইদের দুর্যোগের খবর আশা করি তোমরা সবাই জানো। মাত্র ৭ হাজার চেচেন মুজাহিদ বিশাল ফৌজের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যেভাবে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন পৃথিবীর সামরিক ইতিহাসের সত্যি তার কোন তুলনা নেই। এক সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধ জয়ের আশা নিয়ে আধুনিক মারণাস্ত্র সুসজ্জিত রুশ বাহিনী চেচেনিয়ায় হামলা শুরু করেছিলো। কিন্তু দেখা গেলো তাদের ট্যাংক ও বিমান বহর মাসের-পর-মাস হামলা চালিয়ে মুজাহিদদের হাত থেকে রাজধানী গ্রোজনী দখল করতে পারেনি।
খোদ রুশ সমর নেতারা মুজাহিদদের প্রতিরোধ শক্তি এবং নিজেদের ক্ষয়-ক্ষতির বিপুলতা দেখে হতবাক হয়ে গেছে । দীর্ঘ ছয় মাস অসমসাহসিকতার সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালানোর পর এখন অবশ্য মুজাহিদ বাহিনী কৌশলগত উদ্দেশ্যে রাজধানী গজনী ত্যাগ করেছে এবং সুরক্ষিত পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থান গ্রহণ করে দীর্ঘস্থায়ী গরিলা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছে। শেষের মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদী রুশ হায়েনাদের আগ্রসন অবশ্য এই প্রথম নয়। কমিনিউস্ট বিপ্লবের পূর্বে জার দের আমল থেকেই চলে আসছে।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর কমিনিউস্ট রাশিয়ার ফেরাউন নামে কুখ্যাত স্ট্যালিন গোটা চেচেন জনগোষ্ঠীকে চেচেনিয়া থেকে উৎখাতপূর্বক সাইবেরিয়ার ভয়ংকর এলাকায় নির্বাসিত করেছিলো যাতে শীত দানবের খাবাই চেচেন জাতি নির্মূল হয়ে যায়। কিন্তু সাইবেরিয়ায় নির্বাসনে লক্ষ লক্ষ শিশু-নারী-পুরুষের নির্মম মৃত্যুর পরও চেচেন জাতি তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে জয়ী হয়ে মাতৃভূমিতে ফিরে এসেছে। এরপর চেচেনিয়ার মধ্যে মুজাহিদ জাওহার দাউদ যখন চেচনিয়ায় স্বাধীনতা ঘোষণা করলেন তখনও রুশবাহিনী চেচেনিয়ায় অগ্রাসন চালিয়েছিলো, আর মুষ্টিমেয় চেচেন মুজাহিদের বীরের মতো লড়াই চালিয়ে এক পর্যায়ে রাজধানী ত্যাগ করে গরিলা যুদ্ধ শুরু করেছিলো। পরবর্তীতে রুশ বাহিনী প্রতারণার শিকার হয়ে চেচেন জনগণের প্রাণপ্রিয় নেতা জাওহার দাউদ যখন শাহাদত বরণ করেন তখন রুশ সমর নায়করা ভেবেছিল যে চেচেনদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে গেছে। কিন্তু নেতা শাহাদতে মুসলমানদের মেরুদণ্ড ভেঙে যায় না বরং আরো সোজা হয় তা টের পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। কেননা কয়েকদিনের মধ্যেই তাদেরকে অতি লজ্জাজনক পরাজয়ের মাধ্যমে চেচেনিয়া থেকে লেজ গুটাতে হয়েছিল। এই যুদ্ধে শ্যামল বিশেষজ্ঞদের তাক লেগে গেছে। একসপ্তাহের যুদ্ধ গড়িয়েছে ছয় মাসে এবং রুশদের ক্ষয়ক্ষতি প্রমাণ ছিল তাদের কল্পনারও বহু ঊর্ধ্বে। এ যাই শুধু চেচনিয়ার লোকজনের জন্য নয় বরং পুরো মুসলিম বিশ্বের জয়।