আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালই আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল আছি।
Sorsce
আমি এবার আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি একটি শীতের সকাল সম্পর্কে। এখন বর্তমানে ধীরে ধীরে শীত আসতাছে। তাই ভাবলাম এবার এ পোস্টটা শীতের সকাল সম্পর্কে লেখি।
দিনের পর রাত, রাতের পর দিন- এই নিয়েই আমাদের জীবন। দিন আসে কাজ হাতে আর রাত আসে বিশ্রামের সুখশয্যা নিয়ে। রাতের অবসানে দিনের সূচনা হয় সকালের মাধ্যমে। সকাল হচ্ছে কাজের জগতে প্রবেশের শুভ সময়। ঋতু বৈচিত্রের পটভূমিকায় শীতের সকাল আসে নিজ সড়ক নিয়ে। বসন্ত ঋতুর পূর্বে শীতের আগমন ঘটে।
শীতের সকালের প্রকৃতি:
সূর্যোদয়ের মধ্যে দিয়ে সকালের যাত্রা শুরু। কিন্তু প্রকৃতি কুয়াশার চাদরে আচ্ছাদিত থাকায় সকালে সূর্য দেখার সুযোগ হয় না অনেকেরই। কুয়াশার বুক চিরে পূর্ব গগনে ফুটে ওঠে আলোর রেখা।
প্রভাত হয়, ভেসে আসে মুয়াজ্জিনের আযানের ধ্বনি। তীব্র শীতের কামুর উপেক্ষা করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগন ছুটে যান মসজিদে। গৃহত্যাগী গবাদি পশুর ডাক আর রাখালের পদচারণার জেগে ওঠে প্রকৃতি।
শীতের সকালে শহরের অবস্থা ভিন্নতর। গ্রামের অনাবৃত দিগন্তবিস্তৃত প্রকৃতি শীতের সকালে যে সৌন্দর্য মহিমায় সেজে ওঠে, শহরে ইট-পাথর ঘেরা কৃত্রিম পরিবেশ তার আভাস নেই।
নিত্যদিনের কর্মচাঞ্চল্য নিয়ে জেগে ওঠে শহর। শিশিরভেজা কালো পিচের রাস্তায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলে গাড়ি। রিক্সাওয়ালা ঘন কুয়াশা কাটিয়ে ধীরে ধীরে দিকসা নিয়ে বের হয়।
রাস্তার মোড়ে চায়ের দোকান ও ভাপা পিঠার দোকান গুলোতে জমে ওঠে ভিড়। হকার পত্রিকা নিয়ে ছুটে যায় দ্বারে দ্বারে। শিশির সিক্ত পথে শীতের কাপড় জড়িয়ে রাস্তায় বের হয় লোকজন।
তাদের পোশাককে নানা বৈচিত্র্য। কারো গায়ে বিহারী পাঞ্জাবি, সাল, আলোয়ান, জাম্পার, সোয়েটার, মাফলার, চাদর, কারো মাথায় টুপি।
বাসভবনের সামনে গোলাপ, বেলি, চন্দ্রমল্লিকা, বকুল, চামেলি ফুটে থাকে। রাতে হিমেল আলিঙ্গনে ফুলগুলোকে নি প্রভাব মিলন মনে হয়। অপরদিকে শহরের বস্তিতে শীত আসে নির্মমতা নিয়ে।
শীত নিবারণের তেমন কোনো ব্যবস্থা বস্তিবাসীদের থাকেনা। বস্ত্রহীন এসব মানুষের গায়ে তাই কামর বসায় নিষ্ঠুর শীত। তারা ঠকঠক করে কাঁপতে থাকে।
মানব মনের ওপর শীতের সকালে প্রভাব:
শীতের সকাল মানব মনের উপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। শীতের প্রচণ্ডতা মানুষের দেহ ক্ষণকালের জন্য আরষ্ট করে ফেললেও বাড়িয়ে দেয় মনের সজীবতা। শীতের উষ্ণ সকাল অদম্য কর্মস্পৃহা জোগায়, সারাদিন মানুষ কাজে ব্যাপৃত হতে খুব বেশি ক্লান্তি অনুভব করে না।
বাংলাদেশের শীত ঋতু পৃথিবীর অন্য শীতপ্রধান দেশ গুলোর মত নয়। আমাদের দেশে শীত একেবারে নিঃস্ব রিক্ত নয়। তুষারপাত হয় না বলে শীতের সকাল এখানে অনেকটা উপভোগ্য ও আরামপ্রদ।
তবে শীতের সকাল এখানে তেমন দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এক সময় সূর্য উঠে, আস্তে আস্তে রোদ ছড়িয়ে পড়ে সে সাথে বাড়তে থাকে উত্তাপ। এ যেন একটু একটু শীতের আমেজ, চারধারে গাঢ় সবুজের প্রলেপ। পূর্ব আকাশে রক্তিম লাল সূর্য এক অপরূপ মজুরি নিয়ে উপস্থিত হয় আমাদের সামনে। রিক্ততা থাকলেও শীতের সকাল আমাদের জন্য বয়ে আনে বসন্তের বার্তা।