Truth gives man perfection. And lies destroy people.

in r2cornell •  3 years ago 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লা। বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছে? আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন? আল্লাহ তাআলার রহমতে আমিও ভালো আছি।

বন্ধুরা আমি এবার লিখব সত্য মুক্তি দেয় আর মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে এ সম্পর্কে। হ্যাঁ বন্ধুরা আমি আপনাদের ধারণা দেবো সত্যই একমাত্র পন্থা যে মানুষকে মুক্তির দিকে ঠেলে দেয়। আর মিথ্যা সব সময় ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, সততার চিরজ্যোতির্ময় মুখোশধারী সম্রাট, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সালাম এর একটি চিরন্তন বাণী হচ্ছে-'সত্য মানুষকে মুক্তি দেয় আর মিথ্যা ধ্বংস ডেকে আনে'। তিনি আরো বলেছেন, 'শর্ত পূরণের পথে নিয়ে যায়'।

নানা মানবিক গুণ দিয়ে আল্লাহ মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এবং পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। শিক্ষাদিক্ষা, অনুশীলন ও সাধনার মাধ্যমে মানুষ এসব গুণ অর্জন করে মানুষ নামের প্রাণী থেকে প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারে।

সততা মানব চরিত্রের এমন একটি সদগুণ, যাকে বলা চলে যাবতীয় সৎ গুনের মূল বা জননী। আর সততার স্বপনে পদার্পণ করতে সমর্থ হলে মানুষ আদর্শ চরিত্রের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য গুলো অর্জন করতে সমর্থ হয়। এক এক করে সোপানশ্রেণী পার হয়ে মানুষ উন্নত ও মহান জীবনের এক জ্যোতিময় মিনারের শীর্ষে আরোহণ করতে পারে আমি মনে করি।
সত্য হচ্ছে আলো আর মিথ্যা আছে অন্ধকার। সততা জীবনকে আলোকিত করে। সত্যাশ্রয়ী মানুষ আল্লাহর প্রিয় বান্দা। পরকালে তার জন্য রয়েছে বেহেশতে অতি উত্তম স্থান। ইংরেজিতে একটি কথা আছে-Honestly is the best policy. সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। কী ব্যক্তিজিবন, কী ছাএজিবন, কী কর্মজীবন অথবা জাতীয় জীবন, সর্বক্ষেত্রেই সততা অবলম্বন বাহ্যিক ক্ষেত্রে যেমন সফলতা লাভের উপায়, নৈতিক ক্ষেত্রে তেমনি মুক্তির পন্থা হিসেবে কাজ করে।

অন্যদিকে মিথ্যা জীবনের ধ্বংস ডেকে আনে। মিথ্যা ক্লেদ, গ্লানি, কলঙ্ক ইত্যাদির জন্ম দেয়। মিথ্যা সকল পাপের প্রসূতি। পৃথিবীর প্রায় সকল ধর্মের মিথ্যাকে মহাপাপ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। মিথ্যাবাদী, মিথ্যাচারী ব্যক্তির পরকালে অশেষ লাঞ্ছনা ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি নেই। মিথ্যাশ্রয়ী ব্যক্তিরা জীবনে পরিণামে দুঃখ ও ধ্বংস অনিবার্য হয়ে ওঠে।

মিথ্যাবাদীকে কেউ বিশ্বাস করে না। মিথ্যার অবরণে মানুষ শঠতা, প্রতারণা, প্রবঞ্চনা ইত্যাদি কাজে লিপ্ত হয়ে অন্যের ক্ষতিসাধন করে। এতে মিথ্যাবাদী ব্যক্তির ওপর ক্ষতিগ্রস্তের অভিশাপ এবং আল্লাহর লানত বর্ষিত হয়।

মিথ্যাচারের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি জীবনে সম্পদের পাহাড় গড়তে পারে, সুখ ভোগের নানা উপকরণে গৃহ সাজিয়ে তুলতে পারে, কিন্তু অন্যের সম্পদ লুণ্ঠন করার, অন্যের অধিকার কেড়ে নেবার, অন্যকে বঞ্চিত, প্রতারিত করার কারণে তাকে জনতার দরবারে না হলেও একদিন না একদিন বিবেকের কাছে জবাবদিহি করতেই হবে।

এছাড়াও মিথ্যাচারের জন্য পরকালে রয়েছে ভয়ঙ্কর শাস্তি। ব্যাক্তিজীবন ছাড়াও জাতীয় জীবনে শিক্ষাক্ষেত্রে নকল প্রবণতা, ব্যবসাক্ষেত্রে ভেজাল ও প্রতারণা, কর্ম ক্ষেত্রে ঘুষ ও দুর্নীতি ইত্যাদির মূলে রয়েছে মিথ্যা। মিথ্যার অষ্টোপাশ নানারূপ সহস্রা শুড় বিস্তার করে মিথ্যাশ্রয়ী ব্যক্তিকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে নেয়।

বর্তমান সমাজে দেখা যায় মিথ্যা জয়জয়কার। রাজনৈতিক নেতানেত্রীগণ অহরহই মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করার প্রয়াস চালায়, সমাজে প্রকাশ্যে চলে দুর্নীতিমূলক নানা কর্মকাণ্ড। অথচ এসব কর্মকাণ্ডের হোতারা নিজেদের সাফাই গাইতে একটু দ্বিধাবোধ করে না। ধর্মদর্শনের সত্য যুগের অবসান ঘটতে পারে, কিন্তু সত্যের কখনো ক্ষয় নেই, বিনাশ নেই।

সত্যের জয় অনিবার্য, আর মিথ্যার পরিণাম ধ্বংস। কাজেই অমূল্য মানব জীবন সার্থক ও সুন্দর করে তোলার জন্য সততা অবলম্বনে একমাত্র পন্থা। সততা আমাদের যাবতীয় অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে যায়। সততাই হোক জীবনের মূল আদর্শ।

                   মহানবীর আদর্শ:

স্বচ্ছ চরিত্র গঠনে এবং সৎ জীবন আদর্শ গ্রহণে বিশ্বমানবতার নিকট অন্যতম উদাহরণ সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। ছোটবেলা থেকেই তিনি সততার জন্য বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। কিশোর বয়সে তিনি জনগণের কাছ থেকে 'আল আমিন' বা বিশ্বাসী উপাধিতে ভূষিত হন।

এমনকি শত্রুরাও তার সততার ব্যাপারে কোন সন্দেহ পোষণ করতেন না। চরিত্রের আগুন দিয়ে তিনি জয় করে নিয়েছিলেন সারা বিশ্ব। তাই তার মাধ্যমে ইসলাম বিশ্বে পেয়েছে সত্য ধর্মের মর্যাদা। যারা ঈমান এনেছে তারা সকলেই বিশ্বাস করেন মুহাম্মদ সাঃ কখনো মিথ্যা বলেন না।

একবার মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর কাছে একজন লোক এসে বলল, হে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আমি চুরি করি, মিথ্যা কথা বলি, আরো অনেক খারাপ কাজ করি। তবে আমি ভালো হতে চাই, কিন্তু এতগুলো খারাপ কাজ একসাথে ত্যাগ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আপনি আমাকে একটি খারাপ কাজ ত্যাগ করার পরামর্শ দিন।

মানবীর সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেন, মিথ্যা কথা বলবে না। লোকটি বলল, এ তো খুব সহজ কাজ, কিন্তু পরে দেখা গেল তার পক্ষে অন্য কোনো খারাপ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ খারাপ কাজ করে সত্য বললে লোকের কাছে ধিক্কার পেতে হবে, শাস্তি পেতে হবে। এভাবে সে মিথ্যাচার করে সত্যাশ্রয়ী পাওয়ার যাবতীয় কুকর্ম থেকে নিজের চরিত্রকে মুক্ত করে নিতে সক্ষম হয়।

উপরের আলোচনা থেকে বোঝা গেল যে, আমাদেরকে সব সময় সত্য কথা বলতে হবে। মিথ্যার আশ্রয় নেয়া যাবে না। কারণ মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে আর সত্য মানুষকে পুণ্যের দিকে নিয়ে যায়।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE BLURT!