বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
প্রিয় বন্ধুরা! আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
Sorsce
একটি দরিদ্র ছোট্ট মেয়ের গল্প বলবো,,
কয়েকদিন আগে রাত টায় মিরপুর থেকে ফিরছিলাম, দোতালা বাসে করে। নিচে ভীড় দেখে উপরে গিয়ে বসলাম।
মানুষজন ছিল মোটামুটি। হালকা হালকা বাতাসে মনটা একটু প্রফুল্ল লাগছিল। বাস চলছে তার আপন গতিতে, আর আমি জানালা দিয়ে দেখছি রাতের আলো ঝলমল ঢাকা নগরী। হঠাৎ দেখি একটি করুণ মেয়েলি কন্ঠে বাসের ভিতর আওয়াজ হচ্ছে, আমি ফিরে তাকালাম। জীর্ণ মলিন বস্তে নয় দশ বছরের একটি ছোট্ট মেয়ে, হাতে এক প্যাকেট চকলেট।
বাসের যাত্রীদের উদ্দেশ্যে মেয়েটি বলছে, আমার বাবা বেঁচে থাকলে আমাকে পেটের চিন্তা করতে হত না। আপনার মেয়ের মত আমিও সন্ধ্যার পরে ঘরে বসে লেখাপড়া করতাম। কিন্তু অসুস্থ মা,
এতিম ছোট ভাই এবং আমার নিজের প্রয়োজন আমাকে পথে নামিয়েছে।
তবে নবীর শিক্ষা হিসাবে ভিক্ষা না করে আমি মেহনত করি। আপনাদের ঘরে হয়তো আমার মতো ছেলে মেয়ে আছে। তাদের জন্য যদি একটি করে চকলেট নিয়ে যান তাহলে আপনার ছেলে মেয়ে খুশি হবে আর আমার অসুস্থ মা ও এতিম ভাইয়ের মুখে এক মুঠো খাবার জুটবে।
ছোট মেয়ের এমন সুন্দর গুছিয়ে কথা বলা দেখে আমি অবাক হলাম। আসলে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে আল্লাহ তার মুখে কথা যুগিয়ে দিয়েছেন।
অনেকেই চকলেট নিল আমিও পাঁচ টাকা দিয়ে পাঁচটি চকলেট নিলাম। মেয়েটি খুশি হলো। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি পড়তে পারো? মেয়ে টি অদ্ভুত এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো, এবং বললো দিনের বেলায় আমি পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি।
কেন জানি আমার খুব লজ্জা বোধ হলো। কেননা এ সমাজেরই একজন আমি। আমাদের কত ব্যয়- অপব্যয়! কত চয়-অপচয়! জনসেবার কত মহড়া! গরিবের দরদে কেমন আত্মহারা! অথচ এই শিশুদের জীবন ধারণ করতে হয় আমাদের জিহ্বায় চকলেট তুলে দিয়ে কিংবা আমাদের শক্ত হাতে ফুলের কোমল পরশ বুলিয়ে।
আচ্ছা এত বুদ্ধি করে যায় দেশটা চালায় এবং ভিক্ষার ঝুলি হাতে বিদেশে ঘুরে বেড়ায়। তারা কি আমাদের সামনে দাঁড়ানো এই ছোট্ট দরিদ্র মেয়েটির কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারে না? একটু চিন্তা করলাম। এরপরে বাস তার গন্তব্যস্থলে থামিয়ে গেল। যাত্রীরা বাস থেকে নেমে গেলো।মেয়েটিও বাস থেকে নেমে গেলো। আর আমার চোখের আড়াল থেকে হারিয়ে গেলো।। আর খুঁজে পেলাম না।
হে আল্লাহ আপনি তাকে সচ্ছলতা দান করুন আমীন।।