সৃষ্টির সব থেকে বুদ্ধিমান প্রাণী তো মানুষ তাহলে সেই বুদ্ধিটা কেন ভালো কাজে ব্যবহার না করে অন্যের ক্ষতি সাধনে ব্যবহার করে? এই উত্তরটা আমাদের কারো কাছেই নেই।
এর উওরটা খোঁজার চেষ্টা করে হয়ত কোনো লাভ হবে না কারন ঐ যে, আমরাও তো মানুষ!
দাদুর কাছে শুনতাম, আগেকার মানুষ নাকি খুব সহজ সরল আর বোকা সোকা ছিলো। সাধারণ বিষয়গুলোও নাকি বেশ কঠিন করে ভাবতো।
এতটাই সহজ সরল ছিলো যে, যদি কেউ ঘরের খুঁটি জড়িয়ে ধরতো তাহলে খুঁটি উঠিয়ে তাই নিজের হাত ছাড়াতো। তাদের ধারনা ছিলো খুঁটি না উঠানো পর্যন্ত হাত ছাড়ানো যাবে না।
এই ধারনাটা তখন সকলের মধ্যেই ছিলো। এর থেকেই প্রমাণ পাওয়া যায় যে, আগেকার মানুষ কতটা সরল ছিলো। তাদের মাথায় এটুকু বুদ্ধি ছিলো না যে, হাত ছেড়ে দিলেই খুঁটির মধ্যে থেকে হাত বের করা সম্ভব।
তারা তো আমাদের পূর্বপুরুষ ছিলো তাহলে তারা যদি এত সরল হয়, আমাদের মনে কেন এত কূটবুদ্ধিতে ভরপুর?
হঠাৎ কেন এই কথাগুলো বলছি আজ?
আজ দিনের শুরুটা আমার অন্য দিনের মতো হয় নি। সকালে শুরুটা বেশ একটা হট্টগোল শুনে শুরু হয়েছে। আমি ঘুমের মধ্যে শুনলাম আমাদের উঠানে একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
তখন সাথে সাথে উঠে তাদের কথা শোনার চেষ্টা করলাম। আসল ঘটনা হলো -
আমাদের বাড়ির পাশে সম্পর্কে দাদা হয়। সে তার মামার বাড়ির দিক থেকে কিছু জমি পাওয়ার দাবিদার। সেই দাদার কোনো মামা নেই তাই স্বাভাবিকভাবে দাদার ই পাওয়া কথা।
তবে ঐ জমি নিয়ে হয়ত কোনো ঝামেলা আছে আশেপাশের লোকজনের সাথে। কাল সন্ধ্যায় নাকি তারা দাদাকে ফোন করে ডেকেছিলো এই জমির ব্যাপারে আলোচনা করে একটা সমাধা করবে।
তখন দাদা এতো কিছু না ভেবে তাদের সাথে দেখা করতে যায়। তবে তারপরই বাঁধে বিপত্তি। কাল রাত থেকে দাদার কোনো খোঁজ পাচ্ছিলো না বাড়ির লোকজন।
কাল রাতে যখন আমি রাস্তায় গিয়েছিলাম তখন দেখি দাদার বাড়ির লোকজন সব জায়গায় ফোন করে দাদার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছে, দাদার কাছে ফোন দিচ্ছে কিন্তু ফোন বন্ধ আর এতে করে সবার দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে যাচ্ছে।
আমাদের বাজারে এই দাদার কাপড়ের ব্যবসায় রয়েছে তাই সেই দোকান থেকে বাড়িতে না এসেই তাদের সাথে দেখা করতে যায়। বাড়িতে কেউ জানতো না এ ব্যাপারে।
রাতে যখন ওদের সাথে আমার দেখা হয়েছিলো তখন তাদের কাছে আমি কিছু শুনতে যাইনি কারন এমন পরিস্থিতিতে তারা বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে তাই তাদের বিরক্ত করিনি।
তবে সকালে শুনলাম ওরা দাদাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে নাকি মারধোর করেছে। সকালে নাকি পরিচিত লোকজন হাসপাতালে ভর্তি করেছে দাদাকে, খোজ পেয়ে বাড়ির লোকজন হাসপাতালে গিয়েছে।
এটুকুই জানতে পেরেছি, হয়ত পরবর্তীতে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে দাদা সুস্থ হলে। তবে আমরা মানুষ হিসাবে এতটাই নিকৃষ্ট যে অন্য কাউকে মেরে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করি না। তাই ভাবার বিষয় আমরা মানুষ হিসাবে কি আসলে সৃষ্টির সেরা জীব হওয়ার যোগ্য ?