ম্যানা কাকা, আমাদের এলাকার খুব পরিচিত একজন মানুষ। প্রতি একশো জনে প্রায় ৮০ জন মানুষই তাকে চিনে।তার সন্তান সন্ততি সবমিলিয়ে তিনজন।তিনটাই ছেলে সন্তান।ব্যবসায়ীক জীবনে তিনি ছিলেন ধানের ব্যাপারি,ছিলো অধেল সম্পদ,জায়গা জমিও ছিলো প্রচুর।তার জমির প্রতি শতকের বর্তমান মূল্য ৫-৭ লাখ টাকা,বিঘা প্রতি দেড় কোটি টাকারও বেশি।সেই হিসেবে তাকে কোটিপতি বলেই গণ্য করা যেতে পারে।
তার ব্যাপারে অনেক গুনজন শোনা যায়।তিনি যখন ধানের ব্যাপারী ছিলেন মানে ধানের ব্যবসা করতেন তখন নাকি কৃষকদের থেকে ধান মেপে নেওয়ার সময় মাপের চেয়ে পরিমাণে বেশি ধান নিতেন যেকোনো রকম ফাকি দিয়ে।এভাবে গৃহস্থকে ফাকি দেওয়াই ছিলো তার ব্যবসার প্রধান লক্ষ্য। ব্যবসায়ীক জীবনে বহু মানুষকে ঠকিয়েছেন তিনি।
কিন্তু এখন....? তিনি নিজেই ফাঁকিতে পড়েছেন।দিনশেষে তার ঝোলা একেবারেই শূন্য।
pexels-ready-made-3850465.jpgsrc
তার সহায়সম্পত্তি হয়েছে বেহাত,তার তিন ছেলের এক ছেলেকেও তিনি মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলতে পারেননি,তার একচোখ প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে,ছেলেরাও তার তেমন একটা খোজ খবর রাখে না।উপার্জন করার মতো শরীরে তেমন বলও নেই।এখন তাকে মানুষের কাছে হাত পাততে হয়।
তার জীবন থেকে আমাদেরও শিক্ষা নেওয়ার আছে অনেক কিছু।
পাপ কাউকে ছাড় দেয় না। পাপের শাস্তি পেতেই হবে,হয় দুনিয়ায় নয় পরকালে, যদি মহান রব ক্ষমা না করেন।অনেকেই অন্যের হক মেরে,ঘুস খেয়ে,অন্যের সম্পদ লুট করে অধেল সম্পদের মালিক হতে চান।এই যে অন্যায়গুলোর সাথে জড়িত হোন তারা, এসব তারা একমাত্র সমাজে নাম কামানোর জন্য,সন্তান সন্ততি নিয়ে ভালোভাবে বাচার জন্যই করেন।
কিন্তু আমার এই অল্প বয়সের অনুধাবন,হারাম টাকায় সন্তানদের মানুষের মানুষ করে গড়ে তুলতে পেরেছেন খুব কম সংখ্যক মানুষই।মানুষ তাদের সামনাসামনি সম্মান ঠিকই দেখায় কিন্তু তাদের উপস্থিতির আড়ালে গালি দিতে একদমই ভূল করেন না।তারা দূর্নীতি করে ঠিকই অধেল সম্পদের মালিক হতে পেরেছেন কিন্তু সুখ নামক বস্তুতি ক্রয় করা সম্ভব হয়নি তাদের।তাদের জীবন প্রতিনিয়তই অনিরাপদ।
হয়তো ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমরা অনেক কিছুই করতে পারি কিংবা করি। কিন্ত আমি বহু মানুষকে দেখেছি,যারা তাদের জীবনে খুব খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এপৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে।
বর্তমানের কর্মের উপরই নির্ভর করে ভবিষ্যতে ভালো কিংবা খারাপ থাকা।তাই আমি মনে করি সবার বর্তমান কর্ম ভালো হওয়া উচিত।তবেই ভবিষ্যতে ভালো পরিস্থিতিতে কাটাতে পারবো জীবন, অন্যথায় নয়।শেষ বয়স বলতে একটা কথা আছে,অন্তত শেষ বয়সটা ভালোভাবে কাটানোর জন্য হলেও আমাদের কর্মগুলো ভালো হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি,যেন শেষ বয়সে শূন্য ঝোলা নিয়ে এপৃথিবী থেকে বিদায় নিতে না হয়।
এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে আমার লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।