আমরা সকলেই জানি দয়া একটি মহৎ গুণ। আর যে ব্যক্তি দয়া করে তাকে সকলেই দয়ালু ব্যক্তি হিসেবেই চেনে। দয়ালু ব্যক্তির মর্যাদা স্বয়ং আল্লাহ্ তা’লার কাছেও অনেক বেশি। তাই সকলের উচিত দয়ালু হওয়ার যথেষ্ঠ চেষ্টা করা।
যদি দয়ার সাথে কোন কাজ করা হয় তাহলে সেই কাজের ভেতর বাহির সবকিছুই সুন্দর হয়। কেননা দয়ার ভেতরেই রয়েছে রহমত ও বরকত।
আর যে কাজের মধ্যে দয়া থাকে না সে কাজ হয় সুবাসহীন ফুলের মতো। দেখতে সুন্দর হয় কিন্তু তার কোন সুবাস থাকে না। প্রকৃতপক্ষে দয়াবিহীন কাজ অসুন্দর হয় এবং অসমাপ্তই থেকে যায়।
দয়ার মাধ্যমে অন্যদের প্রতি উদারতা ও সহানুভূতি প্রকাশ করা যায়। অনেকেই দয়াকে অহংকার মনে করে। কিন্তু দয়া আর অহংকারের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত রয়েছে। দয়া একটি মহৎ গুণ যা আমাদের জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তোলে পাশাপাশি আশেপাশের মানুষজনেরও উপকারে আসে।
অন্যদিকে অহংকারের দ্বারা নিজের উদ্ধর্ত্বতা প্রকাশ পায়। অহংকারী মানুষ নিজেকে বড় মনে করে এবং কখনো কারো উপকারে সে আসে না।
একটি ভালো কাজ করে যেকেউ অহংকার করতেই পারে কিন্তু সেই অহংকারের মধ্যে থাকেনা কোন আনন্দ। অহংকারী ব্যক্তি নিজেকে বড় মনে করলেও সমাজের চোখে সে কখনো বড় হতে পারে না।
অপরদিকে একজন দয়ালু ব্যক্তি যখনই কোন কাজ করে তখন সে সেই কাজটিকে সত্যিকারের অর্থপূর্ণ এবং উপভোগ্য হিসেবে করে। আর সমাজের লোক দয়ালু ব্যক্তিকে মহৎ এবং বড় মাপের মানুষ হিসেবেই গণ্য করে।
একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার করা যাক। ধরুন একজন অসুস্থ মানুষের পাশে আপনি দাঁড়ালেন। সেটা যেভাবেই হোক। হতে পারে আর্থিক কিংবা অন্য কিছু। আমাদের অন্তরে দয়া জাগ্রত হয় বিধায় আমরা অন্যকে সাহয্য করতে পারি।
অর্থ্যাৎ দয়ার দ্বারাই আমরা অনুপ্রাণিত হই অন্যের পাশে দাঁড়ানোর। দয়া একদিকে যেমন অন্যদের ভালো রাখতে সাহায্য করে ঠিক তেমনি পুরো বিশ্বকে বসবাসের জন্য উত্তম জায়গা হিসেবে গড়ে তোলে।
অপরদিকে আমাদের মনে যদি দয়ার উদয় না হয় তাহলে আমরা কখনই কারো উপকারে আসতে পারবো না। কাউকে অসুস্থ দেখলেও তার পাশে দাঁড়াবো না। বরং অন্যদের প্রতি অন্যায়, অত্যাচার অবিচার আরো বাড়িয়ে দেবো। আর এই কাজগুলো কেবল একজন অহংকারী এবং নির্দয় মানুষের দ্বারাই সম্ভব।
একজন নির্দয় ব্যক্তি ধীরে ধীরে পুরো সমাজকে ক্ষতির দিকে ধাবিত করে। সমাজ থেকে ছড়ানো ক্ষতি ধীরে ধীরে দেশ এবং দেশ থেকে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পরে। যা মোটেই কাম্য নয়।
সবমিলিয়ে প্রতিটি মানুষ তাদের নিজেদের দিক থেকে দয়ালু হওয়া অত্যন্ত জরুরী। দয়া আমাদের জীবনকে অত্যন্ত সুন্দর করে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। আমরা যদি অন্যের প্রতি দয়ালু মনোভাব পোষণ করি এবং অন্যের উপকারে যথেষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারি তাহলে আমরাও একদিন বিপদে পরলে তারা সকলেই এগিয়ে আসবে।
আমি শুনেছি, দয়ালু ব্যক্তির কখনো মানুষের অভাব হয় না। একজন দয়ালু ব্যক্তিকে মানুষে নিজ ইচ্ছায় এসে উপকার করতে চায়। দয়ার মাধ্যমে আমাদের আত্মীয়তার বন্ধন আরো সুদৃঢ্র হয়।
অন্যদিকে দয়া আমাদের সমাজ ও দেশকে আরো শক্তিশালী হিসেবে গড়ে উঠতে ব্যপক সহায়তা করে। আমাদের সকলের মধ্যে যদি দয়ালু মনোভাব থাকে তাহলে সমাজ থেকে হিংসা, বিদ্বেষ, অপরের ক্ষতি সবকিছুই উঠে যাবে। সবাই সবার কাজে সহযোগীতা করবে।
এভাবে আমাদের সমাজ একটি সুখি সমৃদ্ধশালী সমাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। আর সমাজ প্রতিষ্ঠা পেলেই দেশ এমনিতেই সুখী ও সমৃদ্ধশালী হয়।