৯৩ ইনিংসের ১১ টিতে সেঞ্চুরি! দারুণ পরিসংখ্যান : কিন্তু?

in blurtlife •  3 years ago 

৯৩ ইনিংসের ১১ টিতে সেঞ্চুরি! দারুণ পরিসংখ্যান। কিন্তু কথা হলো, এই পরিসংখ্যানে কোনো শুভঙ্করের ফাঁকি আছে কিনা? সেটা আছে কি নেই তা সরাসরি না বলতে পারলেও এটা বলতে পারি মমিনুল হকের টেস্ট ক্যারিয়ারটা দেখতে যতটা চোখে শান্তি লাগে, সুক্ষ্মভাবে ঘেঁটে দেখলে ঠিক ততটাই তিক্ততা বেরিয়ে আসবে। একটু ঘেঁটে দেখি চলুন...

mominul.jpg

১১ সেঞ্চুরির ৭ সেঞ্চুরিই ব্যাটিং স্বর্গের উইকেট চট্টগ্রামের মাটিতে। ৩ টি সেঞ্চুরি শেরে বাংলাতে আর বাকি একটি পাল্লেকেল্লেতে। অর্থাৎ ১১ সেঞ্চুরির দশটিই দেশের মাটিতে। দেশের মাটিতে সেঞ্চুরি করলে গুরুত্ব বা গৌরব কোনোটাই কমে যায় না৷ কিন্তু কথা হলো হোম আর অ্যাওয়ে হিসেব করলে মমিনুল হক দুইখানেই মোটামুটি সমান ইনিংস খেলেছেন৷ হোমে ৪৯ টি আর অ্যাওয়েতে ৪৪ টি। খেলার দিক দিয়ে ইনিংস সংখ্যার ব্যবধান না হলেও গড়ের দিয়ে কিন্তু প্রায় দ্বিগুণ ব্যবধান। দেশের মাটিতে যেখানে প্রায় ৫২ গড়ে রান করেছেন সেখানে বিদেশের মাটিতে ব্যাটিং গড় ৩০ গড়ও অতিক্রম করতে পারেননি তিনি। আটকে গেছেন ২৮.০২ তে। এমন পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে বিদেশের মাটিতে কতটা নড়বড়ে আমাদের মমিনুল।

'নড়বড়ে' শব্দটাকে আরো বেশি পোক্ত করবে আরেকটি পরিসংখ্যানে। মাত্র ৯৩ ইনিংসে শূণ্য রানে আউট হয়েছে ১১ বার। মধ্যে ৭ বার শূণ্য রানে আউট হয়েছেন দেশের বাইরের মাটিতে।

ম্যাচের ইনিংস বিবেচনায় মমিনুল হকের পারফরমেন্স কেমন?

সমগ্র টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম ইনিংসে মমিনুলের ব্যাটিং গড় যেখানে ৫২.৬৪ সেখানে ম্যাচের দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ইনিংসের একটিতেও তার ব্যাটিং গড় ৪০ পেরোতে পারেনি। দ্বিতীয় আর চতুর্থ ইনিংসে যথাক্রমে ৩৪ আর ৩১। তৃতীয় ইনিংসে একটু বেশি, ৩৮। অথচ দেখুন, সব টেস্টের ফল মিলে কিন্তু তৃতীয়, চতুর্থ ইনিংসেই। আর সেখানেই মোটা দাগে ব্যর্থ মমিনুল।

মমিনুল হকের টেস্ট ক্যারিয়ারের এখন দশম বছর চলছে। ক্যারিয়ারটাকে এখন দু'ভাগ করে দেখলে দেখা যাবে দুটি ভিন্ন চিত্র। মুদ্রার এপিঠে, প্রথম ৫ বছরে মমিনুলের সেঞ্চুরি ছিল ৪ টি, তবে শেষ ৫ বছরে তার সেঞ্চুরিসংখ্যা ৭ টি। কিন্তু মুদ্রার ওপিঠে, ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ বছরে যেখানে তিনি প্রায় ৪৪ গড়ে রান করেছেন সেখানে শেষ ৫ বছরে রান করেছেন ৩৭ এর কিছুটা কম গড়ে। অর্থাৎ সেঞ্চুরি সংখ্যা বাড়লেও ক্যারিয়ার গ্রাফ বরং নিম্নগামীই হয়েছে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে খেলা ২১ ইনিংসে সাত সেঞ্চুরিকে আপনি অতিমানবীয়, টেস্ট স্পেশালিস্ট তকমা দিতেই পারেন। কিন্তু মমিনুল হকের একজন টপ টেস্ট ব্যাটসম্যান হওয়ার সম্ভাবনার যে অপমৃত্যু হয়েছে তা কন্ডিশন বিবেচনায় তার ইনিংসের দিকে তাকালেই বুঝা যায়। গড়পড়তা ব্যাটসম্যান থেকে বড় মাপের ব্যাটসম্যান হওয়ার উদাহরণ রয়েছে অনেক। আবার টপ ব্যাটসম্যান থেকে গড়পড়তা ব্যাটসম্যানে ধাবিত হওয়ার উদাহরণও কম নয়। মমিনুল হক হয়তো সেই পথেই এগোচ্ছেন....

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE BLURT!