আমিষের ঘাটতি পূরণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে মহিষের গুরুত্ব অপরিসীম। এমন একটা সময় ছিল যখন এদেশের প্রায় সবজায়গাতেই কমবেশি মহিষ পালন করা হতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই মহিষ এখন আর সেভাবে কেউ পালন করেনা। যদিও মহিষ পালনে বাংলাদেশ এশিয়ার নবম তম দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর বিবিএস প্রকাশিত কৃষি শুমারি অনুযায়ী বর্তমানে দেশে মহিষ আছে ৭ লাখ ১৮ হাজার ৪১১টি।
সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পসদ মন্ত্রণালয় ১৬২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে স্থানীয় মহিষের জাত উন্নয়ন করে অধিক উৎপাদন ও প্রজনন ক্ষমতাসম্পন্ন মহিষের জাত উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
দেশ এখনও মাংস ও দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় মাংস উৎপাদনে দেশ অনেকখানি এগিয়ে গেলেও বিশেষ করে দুধে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশের দুধের চাহিদা অনুযায়ী এখনো যে ঘাটতি বিদ্যমান তা এই প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা অনেকখানি পূরণ করা সম্ভব।
বিবিএস এর তথ্যমতে বছরে ৯২ শতাংশ দুধ উৎপাদিত হয় গাভী থেকে বাকি ৮ শতাংশ আসে মহিষ, ছাগল ও ভেড়া থেকে। মহিষের উৎপাদন যদি বাড়ানো যায় তাহলে মহিষ থেকেও মাংস ও দুধের একটি বড় অংশের যোগান পাওয়া সম্ভব। যদিও গরুর তুলনায় মহিষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ায় মহিষ অতি সহজে বাঁচতে পারে। সেক্ষেত্রে গাভীর পাশাপাশি মহিষ পালনেও সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসা উচিৎ । মহিষের দুধে কঠিন পদার্থ ও চর্বি বেশি থাকে এবং গরুর তুলনায় দুধ ও মাংসে কলেস্টেরল কম থাকে। ফলে মহিষের দুধ ও মাংস অধিক নিরাপদ। প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে অন্যান্য গবাদিপশু বিশেষ করে গাভীর পাশাপাশি মহিষও হতে পারে একটি বিকল্প মাধ্যম যার সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই খাতটিকে লাভজনক করা সম্ভবপর হবে।
ইতোমধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। এ আই কর্মীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে যাতে করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে খুব সহজেই মহিষের জাত উন্নয়ন বৃদ্ধি করা যায়। মহিষের জাত উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রজনন কর্মীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সূত্র মারফত জানা যায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় গৃহীত এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২০ সালের মধ্যে দেশে বিদ্যমান ৩টি মহিষের খামার আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন করা হবে। বাংলাদেশে মহিষপ্রবণ বিভিন্ন পরিত্যক্ত চর এলাকায় এর সম্প্রসারণে কাজ চলছে। এসব এলাকায় ৩৬০ জন কৃত্রিম প্রজনন কর্মীর প্রশিক্ষণ, মহিষ ঘন এলাকায় মহিষ পালনকারী কৃষকদের কৃমিনাশক, কৃত্রিম প্রজননের জন্য বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্যাদি রি-এজেন্ট ক্রয় ভিটামিন-মিনারেল এবং ভ্যাকসিন বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। তবে ইতোমধ্যে মহিষের খামার সম্প্রসারণে মহিষের কৃত্রিম প্রজন আরো সহজ করার জন্য সম্প্রতি সাভারে অবস্থিত মহিষ কৃত্রিম প্রজনন ও গবেষণাগারে মহিষের কৃত্রিম প্রজনন কর্মীদের ৪ মাস ব্যাপি ২য় প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
উন্নত জাতের মহিষ উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০২৩ সালের মধ্যে ইন্টার সিমেটিং কর্মসূচির অবকাঠামো তৈরি করা হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ভেটেরিনারি ডিস্পেন্সারি এবং বিভিন্ন খামার যন্ত্রপাতি, মেশিনারিজ ও সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হবে। ২০২২ সালের মধ্যে খামারি ও উদ্যোক্তাসহ সর্বমোট ৬ হাজার জনের প্রশিক্ষণ এবং ৪টি কর্মশালার কাজ সম্পন্ন হবে যারমধ্যে ১ম প্রশিক্ষণের কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। ২০২৩ সালের মধ্যে খামারি পর্যায়ে কৃত্রিম প্রজনন প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট সংকর জাতের উন্নত মহিষ পাওয়া যাবে এবং দেশীয় বাজারে ভোক্তাদের মাঝে হৃষ্টপুষ্টকরণ মহিষ, মহিষের দুধ এবং মহিষের দুগ্ধজাত খাদ্য পণ্যের চাহিদা পূরণ হবে।
উক্ত প্রকল্পের পরিচালক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি দেশের ৮টি বিভাগের মহিষ ঘন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত উপকূলবর্তী এলাকাসহ ২০০টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ হবে। এর ফলে বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তরাও প্রাণিসম্পদ সেক্টরে বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত হবে এবং দেশে কৃষিনির্ভর শিল্পের বিকাশ লাভের দ্বারা ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হবে।
প্রকল্পটির প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এণ্ড মনিটরিং অফিসার ডা. মো. মুহসীন তরফদার রাজু বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভূমিহীন, ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক খামারিদের আয়ের উৎস, পুষ্টি সরবরাহ এবং কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে মহিষ পালন সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম খামারি পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারলে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি যোগ করেন।
এ ব্যাপারে সাভারে অবস্থিত মহিষ কৃত্রিম প্রজনন ও গবেষণাগারের প্রজনন কর্মী মোহাম্মদ শাহীদ ফরিদ বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে মহিষের যে একটি সোনালী অতীত ছিল সেইসব দিনগুলোকে ফিরিয়ে আনা সম্ভবপর হবে। পাশাপাশি দেশে যে প্রাণিজ আমিষ হিসেবে মাংস ও দুধের ঘাটতি আছে তা পূরণে মহিষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমকা পালন করবে বলে আমি আশাবাদী। মহিষ সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও ব্যাপক আধুনিকায়নের লক্ষ্যে প্রজনন কর্মীদের প্রয়োজনীয় আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে তিনি যোগ করেন।
Translation:-
The importance of buffalo in meeting the deficit of meat and economic development is immense. There was a time when buffaloes were reared almost everywhere in this country. But in the evolution of time, no one keeps that buffalo like that anymore. However, Bangladesh is considered as the ninth country in Asia to keep buffaloes.
According to the agricultural census published by BBS of Bangladesh Bureau of Statistics, there are 6 lakh 17 thousand 411 buffaloes in the country at present.
Recently, the Ministry of Fisheries and Livestock has undertaken a project at a cost of Tk.
The country is still not self-sufficient in meat and milk. Although the country has come a long way in meat production, especially in milk, Bangladesh is still far behind. According to the demand for milk in Bangladesh, the existing deficit can be filled to a large extent through the smooth implementation of this project.
According to BBS, 92 per cent milk is produced annually from cows and the remaining 8 per cent comes from buffaloes, goats and sheep. If the production of buffalo can be increased then it is possible to get a large supply of meat and milk from buffalo. However, buffaloes have higher immunity than cows and can survive easily in adverse weather conditions. In that case, government and non-government entrepreneurs should come forward to raise buffaloes as well as cows. Buffalo milk is high in solids and fats, and milk and meat are low in cholesterol compared to beef. As a result, buffalo milk and meat are safer. Other cattle, especially cows as well as buffaloes, can be an alternative medium to meet the demand for animal meat which, with proper management, will make this sector profitable.
Work on this project has already come a long way. The AI staff is being trained efficiently through various trainings so that the development of buffalo breeds can be easily enhanced through artificial insemination. Breeding staff and other officials are working tirelessly for the development and expansion of the buffalo breed.
According to sources, the modernization and expansion of 3 buffalo farms in the country will be completed by 2020 through this project adopted by the Ministry of Fisheries and Livestock. In Bangladesh, work is underway to expand it in various abandoned char areas prone to buffalo. Training of 360 artificial insemination workers in these areas, deworming of buffalo farmers in buffalo dense areas, purchase of various chemical re-agents for artificial insemination, purchase of vitamins-minerals and vaccines will be provided free of cost. However, in order to facilitate the artificial insemination of buffaloes in the expansion of buffalo farms, the 4th month long training of buffalo artificial insemination workers has recently started at the buffalo artificial insemination and laboratory at Savar.
The infrastructure of inter-symmetry program will be created by 2023 for the development of improved breeds of buffalo. Veterinary dispensaries and various farm equipments, machineries and equipments will be procured by 2021. By 2022, a total of 6,000 people including farmers and entrepreneurs will be trained and 4 workshops will be completed out of which 1st training activities have already been completed. By 2023, improved breeds of buffaloes created by artificial insemination will be available at the farm level and the demand for high quality buffalo, buffalo milk and buffalo milk products among the consumers in the domestic market will be met.
The director of the project said. Md. Rafiqul Islam said that by September 30, 2023, the project will be implemented in 200 upazilas of the country, including the coastal areas identified as buffalo-dense areas.
He said that the implementation of this project would increase milk and meat production and meet the growing demand for animal meat. This will also encourage private entrepreneurs to invest in the livestock sector and create huge employment opportunities through the development of agro-based industries in the country.
Project Co-ordinator and Monitoring Officer of the project. Md. Muhsin Tarafdar Raju said the project would play an important role in providing income, nutrition and employment to landless, small and marginal farmers through implementation. He added that the desired success would be achieved if the various activities related to buffalo rearing could be taken to the farm level.
In this regard, Mohammad Shahid Farid, a breeder of buffalo artificial insemination and laboratory at Savar, said that with the implementation of this project, it will be possible to bring back the golden past of buffalo. Besides, I am hopeful that buffaloes will play an important role in meeting the shortage of meat and milk in the country. He added that in order to expand, manage and modernize buffaloes, more facilities are required for breeding workers.
Your post has been upvoted (0.85 %)
Delegate more BP for better support and daily BLURT reward 😉
Delegate BP Here
Thank you 🙂 @tomoyan
https://blurtblock.herokuapp.com/blurt/upvote