পুরস্কার পেতে কার না ভালো লাগে? আর সেটা যদি হয় প্রিয় উস্তাদের হাত থেকে তাহলে তো কথাই নেই।
আজ সারাটা দিন ভীষণ ব্যস্ততায় কেটেছে।
সকাল থেকে আমাদের মাদ্রাসায় বক্তৃতা প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান ছিল।
মাদ্রাসায় পৌছে দেখি প্রথম অধিবেশন শেষ।
সকালের নাস্তার ছুটি, একটু পরেই শুরু হবে দ্বিতীয় অধিবেশন। মোট অধিবেশন ছিল পাঁচটি।
১| কোরআন তেলাওয়াত।
২|বাংলা বক্তৃতা (ক)গ্রুপ।
৩| আরবী বক্তৃতা।
৪|বাংলা বক্তৃতা (খ)গ্রুপ।
৫|হামদ-নাত বা নাশীদ।
এর মধ্যে যে কোন দু'টি বিষয়ে অংশগ্রহণ করা যাবে।
বিভিন্ন কারণে এবার নিয়ত করছিলাম কোনটাতেই অংশগ্রহণ করবো না।কিন্তু সেদিন আমার সবচে প্রিয় উস্তাদজী বললেন— “ প্রতিবছর অংশগ্রহণ করেছ এবং ভালো ফলাফলও করেছ,এবার অংশগ্রহণ করবে না কেন? যতই অসুবিধা থাকুক অংশগ্রহণ তোমাকে করতেই হবে”
অগত্যা প্রিয় উস্তাদজীর আদেশ রক্ষার্থে বাংলা ও আরবী বক্তৃতায় নাম লেখালাম।
কিন্তু সমস্যা হলো, অনুষ্ঠানের বাকি মাত্র একদিন, আমার দুই বিষয়ের কোনটাই শিখা নেই,শিখতে হবে। সময় খুবই অল্প।
বাংলা যে বিষয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে দেয় তা ছিল, “মাযহাব কী ও কেন?”
আমার জন্য বেশ কঠিনই ছিল৷ কারণ ইতিপূর্বে এই বিষয়ে কখনো বক্তৃতা করিনি।
গতরাত প্রায় একটা পর্যন্ত এই বিষয়ে বিভিন্ন কিতাব থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত জোগাড় করি। মসজিদের মাঠে হেঁটে হেঁটে প্রশিক্ষণ করতে থাকি।
অন্যান্য বছর পুরস্কার পেলেও এবার সিরিয়ালে থাকারই আশা ছিল না।
কারণ, আমার বক্তৃতা আমার কাছেই বড্ড বাজে মনে হয়েছিল।
আরবীতে তো রীতিমত প্যাঁচপোচ লাগিয়ে শেষ।
তবুও মনে মনে দরুদ শরীফ পড়ছিলাম।
অবশেষে এলো ফলাফল ঘোষণার সেই “মহেন্দ্রক্ষণ”।
মাথা নিচের দিকে দিয়ে অনবরত দরুদপাঠ করেই যাচ্ছি। প্রথমেই ক্বারীদের ফলাফল ঘোষণা করা হলো। তারপরে বাংলা বক্তৃতা “ক” গ্রুপের ফলাফল।
এরপরে বক্তৃতা “খ” গ্রুপ মানে আমি যেটাতে অংশগ্রহণ করেছি তার ফলাফল।
উপস্থাপক প্রথমে যে নামটা ঘোষনা করেন,তা শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
প্রথমে ঘোষনা করেন—বাংলা বক্তৃতা “খ” গ্রুপে প্রথমস্থান অধিকার করেছেন মুহাম্মদ ********(নুর)
মনে মনে রবের দরবারে শোকর আদায় করি। আমি অধমকে বরাবরের মতো এবারও সম্মানিত করেছেন।
পুরস্কার তুলে দেন আমাদের মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ও শাইখুল হাদীস, মুফতি মোশাররফ হোসাইন কাসেমী হাফিযাহুল্লাহ!
এরপরে আসে আরবী বক্তৃতার ফলাফল ঘোষণার পালা।
আগে থেকেই ধরে নিয়েছিলাম আমি সিরিয়ালের ভেতরে থাকবো না।
তাই অন্যদের পুরস্কার গ্রহণের দৃশ্য দেখলিলাম।
কিন্তু আমার জানা ছিল না যে সামনে আমার জন্য আরো চমক অপেক্ষা করছে। আমার রব আমাকে আরো সম্মানিত করতে চান।
প্রথমস্থান অধিকারীর নাম ঘোষণা করা হলো, দ্বিতীয় স্থান অধিকারীর নামও ঘোষণা করা হয়ে গেছে৷ সবাই তাকিয়ে আছে তৃতীয় স্থান অধিকারীকে দেখার জন্য।
উপস্থাপক ঘোষণা করেন—আরবী বক্তৃতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন মুহাম্মদ *******(নুর)।
কল্পনাও করতে পারিনি আমার নাম আবারো ঘোষণা করা হবে।
কারণ, এত অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে দুই বিষয়ে পুরস্কার পাওয়া মোটেও সম্ভব ছিল না।
কিন্তু আমার রব চাইলে যে সবই সম্ভব।
সবই আমার রবের অনুগ্রহ
sourse