জ্বালানি তেল বেচে মুনাফার হিসাবে গরমিল দেখা দেওয়ায় এখন সিএজি কার্যালয়ের মাধ্যমে নিরীক্ষার সুপারিশ এসেছে।
রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসি ছয় বছরে যে মুনাফার অঙ্ক দেখিয়েছে, তার সঙ্গে বড় ধরনের ফারাক দেখা যাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে।
অর্থ বিভাগের বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২২ অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত বিপিসি প্রকৃত মুনাফা করেছে ৪৬ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা।
কিন্তু বুধবার বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ এক সংবাদ সম্মেলনে এই সাত বছরে ৪২ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা মুনাফার তথ্য দেন।
ফলে সরকারের অর্থ বিভাগ যে হিসাব দিচ্ছে, তার সঙ্গে বিপিসির হিসাবে ফারাক থাকছে ৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা।
জ্বালানি তেলের নজিরবিহীন মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে ছয় বছরে বিপিসির বিপুল মুনাফা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এই গরমিলের হিসাব এল।
সঙ্কটের মধ্যে সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম এক ধাপে ৪২-৫১ শতাংশ বাড়ানোর পর অনেকে বলছিলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোর ব্যাপক মুনাফার কারণে এখন দাম এতটা না বাড়ালেও চলত।
অর্থ বিভাগের হিসাবের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় কোনো সংস্থা বা কোম্পানির প্রকৃত মুনাফার হিসাবে এত গরমিল সচরাচর দেখা যায় না।
অর্থনৈতিক সমীক্ষার হিসাবের সঙ্গে গরমিলের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয় বিপিসির চেয়ারম্যানকে।
উত্তরে তিনি বলেন, “আজকে আমি ডাউনলোড (অর্থনৈতিক সমীক্ষা) করেছি। সেখানে আপনার দেওয়া এই তথ্য নাই। আপনার কাছে (সাংবাদিক) যদি থাকে, আমাকে দেখাবেন। আমি পরে অবশ্যই আপনাকে ক্লারিফাই করব।”
“আমার এখানে নাই, আপনার তথ্যটাকে জাস্টিফাই করার মতো এই মুহূর্তে….আপনার বেসিসটা দিলে আমি হয়ত এটা নিয়ে কথা বলতে পারব,” সামনে থাকা নানা কাগজপত্র হাতড়াতে হাতড়াতে বলছিলেন তিনি।
এই ধরনের গরমিলের কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) মাধ্যমে নিরীক্ষার সুপারিশ রেখেছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কে ঠিক, তা নির্ণয় করার জন্য বিষয়টি সিএজির মাধ্যমে অডিট হওয়া উচিৎ। কোন কারণে পার্থক্য হচ্ছে বা কোনো কারণ আছে কি না, তা বের করা উচিৎ।