দেশের মাছের অভাব পূরণ করতে হলে মাছ চাষের বিকল্প নেই। নদীমাতৃক বাংলাদেশে মাছ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। মাছ চাষ আজ শুধু খাদ্য বা আমিষের চাহিদা মেটাতে জরুরী নয় জাতীয় অর্থনীতির বিকাশের লক্ষ্যে তাদের উৎসাহ বটে।
গ্রামীণ পর্যায়ে দারিদ্র বিমোচনের এক যুগান্তকারী বিপ্লব আনতে পারে মৎস্য চাষ এ গুরুত্ব অনুধাবন করে বর্তমানে দেশে মাছ চাষের একটি প্রবণতা গড়ে উঠেছে।
গ্রামাঞ্চলে অনেক পুকুর-জলাশয় আজকাল মাছ চাষ হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলে চিংড়ি চাষ আমাদের রফতানি আয়ের বড় উৎস।
নানা প্রকার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি গ্রহণ করে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে সঠিক পদ্ধতিতে সুস্বাদু ও দ্রুত বর্ধনশীল মাছ চাষে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে তুলতে পারলে আমার মনে হয় বাংলাদেশে মাছ চাষের ভবিষ্যৎ হবে খুবই উজ্জ্বল।
আর এই মাছ চাষ থেকেই প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে এবং আর্থিক দিক থেকে সোচ্চার হতে পারে। আমাদের উচিত বেশি বেশি মাছ চাষ করা।
বর্তমানে আমাদের দেশে চিংড়ি উৎপাদন করে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় । তবে চিংড়ি চাষ মিঠা পানি ও প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর অন্যান্য মাছের চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে এ দেশে রপ্তানি আয় বাড়াতে পারে।
এসবের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইলিশ এ দেশের জাতীয় মাছ ইলিশ। ইলিশ মৎস্য ভেজি মানুষ মাত্রেই অত্যন্ত পছন্দের মাছ ইলিশ ভুনা বা জাটকা নিধনের ফলে বাংলা রুপালি সম্পদ দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে।
তবে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ মাছ চাষে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে বাড়াচ্ছে সম্পদ রক্ষা ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকারের ও ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এটা ভালো একটা দিক।
মৎস্য চাষ সম্প্রসারণের উপায়
বর্তমানে মাসে যে অভাব তা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে আমরা পুষ্টিহীন জাতিতে পরিনত হবো তাই মাছ চাষ বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ নেয়া জরুরি।
চীন থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রচুর মাছ উৎপাদন করছে এসব দেশ থেকে প্রয়োজনে পদ্ধতি ও প্রযুক্তি আমদানি করে আমাদের দেশে ব্যবহার করা প্রয়োজন।
সুস্থ রেনু পোনা উৎপাদন করা জলাশয় সঠিক পদ্ধতিতে পোনা অবমুক্ত করা খাদ্য নিশ্চিত করা সঠিক পরিবেশ গড়ে তোলা নির্দিষ্ট সময় অন্তরা এবং মাছের রোগ নির্ণয় ও প্রতি সদ্ব্যবহার ইত্যাদি কাজে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
এসব পদ্ধতি অবলম্বন করলে মাছ দ্রুত বর্ধনশীল উচ্চ ফলনশীল ও কষ্টসহিষ্ণু মাছের চাষ বৃদ্ধি করা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে এক্ষেত্রে কিছু বৈদেশি আমাদের দেশে হচ্ছে।
কিছু কিছু বিদেশি মা আজ আমাদের দেশে এখন উৎপাদন করা হচ্ছে তা হল আফ্রিকান মাগুর থাই সরপুঁটি তেলাপিয়া নাইলেটিকা গ্রাসকাপ মিরর কঁপি নানা জাতের মাছের চাষ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা
মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন সরকারি পদক্ষেপ ইতিমধ্যে গৃহীত হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে উন্নত জাতের দ্রুতবর্ধনশীল মাছ আমদানি বিনা সুদে ঋণ প্রদান অধীনে বিভিন্ন বিদেশী সংস্থার সহযোগিতায় ৫২০ কোটি টাকা ব্যয়ে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন।
আশির দশক থেকে এডিবির অধীনে দুই মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প বিশ্ব ব্যাংকের অধীনে তৃতীয় মৎস্য প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় নব্বইয়ের দশকে গ্রহণ করা হয় সমাজ ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা প্রকল্প।
সরকারের গৃহীত নানা প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন হলে আমার মনে হয় মৎস্য সম্পদ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পেলে এবং মাছ চাষের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ কার্যকর হলে বর্তমানে মাছের ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।
এবং এ দেশের অর্থনীতিতে মৎস্য চাষ সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারবে হবে জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে দেশের সোনা।