ASSALAMU ALIKUM OA ROHMATULLA.
I am @ranna001 from Bangladesh
আসসালামু আলাইকুম আসা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আল্লাহর রহমতে আমিও ভালো আছি। আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো হারিয়ে যাচ্ছে প্রজাপতি।
হারিয়ে যাচ্ছে প্রজাপতি।
‘গাউডি ব্যারন’ এবং ‘কমন ভেলবেট বব’সহ অর্ধশতাধিক প্রজাতি। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে দেশের সৌন্দর্যময় নিরীহ প্রকৃতির পতঙ্গ প্রজাপতি ক্রমশ আবাস হারিয়ে বিলুপ্ত হতে চলেছে।
প্রজাপতি লেপিংডোপেট্রা বর্গের এক ধরনের মথ জাতীয় পতঙ্গ। অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন পতঙ্গ প্রজাপতির দেহ লম্বাটে এবং তাদের শরীরে বর্ণিল রঙের ডানা থাকে। প্রজাপতির অধিকাংশ প্রজাতিই দিবাচর। এরা দিনের বেলাতেই ঘুরে বেড়ায়। মধুর সন্ধানে তারা ফুল থেকে ফুলে ঘুরে বেড়ায়। দেশের বনাঞ্চলগুলোতে এদের দেখা পাওয়া যায় সহজে। গবেষকরা জানান, পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় প্রজাপতি হলো ‘রানী আলেকজান্দ্রার বার্ডউইং’। এ প্রজাতির প্রজাপতির পাখার আকৃতি ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। আর পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট প্রজাতির প্রজাপতি হলো ‘ওয়েস্টার্ন পিগমি ব্লু’। এরা লম্বায় মাত্র ১ সেন্টিমিটার হয়। অধিকাংশ প্রজাতির প্রজাপতির আয়ুষ্কাল এক থেকে দুই সপ্তাহ। কিছু প্রজাতির প্রজাপতি আবার দেড় বছর পর্যন্ত বেচে থাকে।
গবেষকরা জানান প্রজাপতির ডানা অত্যন্ত স্বচ্ছ। এদের ডানা মূলত ঈযরঃরহ নামক এক প্রকার প্রোটিন দ্বারা কয়েকটি স্তরে সাজানো। এই প্রোটিন প্রজাপতির ঊীড়ংশবষবঃড়হ তৈরি করে। প্রজাপতির ডানার স্তরগুলো এতই সূক্ষ্ম যে, এর মধ্য দিয়ে সব কিছু দেখা যায়। কয়েক হাজার ক্ষুদ্র আঁশ ডানার স্তরগুলোকে আবৃত করে রাখে। আঁশগুলোতে বিভিন্ন রঙের আলো প্রতিফলিত হয়ে নানা রঙ ধারণ করে। প্রজাপতি পা দিয়ে স্বাদ গ্রহণ করে। স্ত্রী প্রজাপতি বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছে বসে পা দিয়ে পাতার ওপরে ঘষে উদ্ভিদ হতে রস গ্রহণ করে। প্রজাপতির পায়ের পেছনে ঈযবসড়ঃৎবপবঢ়ঃড়ৎ নামক এক প্রকার সংবেদী অঙ্গ থাকে যার মাধ্যমে এরা স্বাদ গ্রহণ করে থাকে।
বাংলাদেশের বান্দরবন, উখিয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার প্রভৃতি এলাকার বনগুলোতে প্রচুর পরিমাণে প্রজাপতির দেখা মেলে। এ ছাড়া সিলেট অঞ্চলের মৌলভীবাজার জেলার লাউয়াছড়া বনে এবং সুন্দরবন ও মধুপুরে কিছু প্রজাতির প্রজাপতি দেখা যায়। বন জঙ্গল পরিষ্কার করে বনায়নের নামে ‘কুমারী লতা’, ‘আঙ্গুর লতা’, নির্বিচারে কাটার ফলে প্রজাপতি তাদের আবাস হারিয়ে ফেলছে। এ ছাড়া বনতস্করদের হাতে বন ধ্বংস হওয়ার কারণেও অনেক প্রজাপতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
‘প্রজাপতি একসময় আমাদের দেশে বনে জঙ্গলে, গ্রামে-গঞ্জে প্রচুর পরিমাণে দেখা যেত। এখন অনেকটা কমে গেছে। দেশে এমন কোনো মানুষ পাওয়া যাওয়া দুষ্কর হবে যিনি ছোটবেলায় প্রজাপতির রঙে মুগ্ধ হয়ে তার পিছু ছোটেননি। দেশের সৌন্দর্যময় বন মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে এখনো অনেক প্রজাতির প্রজাপতির দেখা মেলে। প্রজাপতির সব প্রজাতি টিকিয়ে রাখতে দেশে এ পতঙ্গ নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। চট্টগ্রামে প্রজাপতি পার্ক করা হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রজাপতিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রজাপতি টিকিয়ে রাখতে সবার আগে প্রয়োজন জনসচেতনতা। অনেকে বন ভ্রমণে গিয়ে বনের লতাগুল্ম নষ্ট করেন। আর এতে প্রজাপতি তাদের আবাস হারিয়ে প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটি পরিহার করতে হবে।’
প্রজাপতি মিথ
প্রজাপতি নিয়ে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মিথ প্রচলিত রয়েছে। সাধারণত প্রজাপতিকে পরিবর্তন, ভালোবাসা, রূপান্তর ও আনন্দের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গ্রিকরা বিশ্বাস করেন, ‘প্রতিটি মথ থেকে প্রজাপতি বের হয়ে আসা মানে মানুষের আত্মার জন্ম হওয়া।’
জাপানিরা বিশ্বাস করেন, ‘যার গৃহে প্রজাপতি প্রবেশ করে সে হয় সৌভাগ্যবান। তার সবচেয়ে পছন্দের ব্যক্তি তাকে দেখতে আসবে।’ চাইনিজরা বিশ্বাস করেন, ‘একজোড়া প্রজাপতি এক সাথে উড়ে যাওয়া ভালোবাসার প্রতীক।’ ইউরোপিয়ানরা বিশ্বাস করেন, ‘মানুষের আত্মা বিচরণ করে প্রজাপতি রূপে।’ তাই তারা প্রজাপতিকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে দেখেন।
মেক্সিকানরা বিশ্বাস করেন, ‘প্রজাপতি পৃথিবীর সবচেয়ে উর্বর প্রাণী। কোথাও প্রজাপতি বসা মানে সেখানে সবচেয়ে বেশি ফসল উৎপন্ন হবে।’ আইরিশরা বিশ্বাস করেন, ‘মৃত ব্যক্তিদের আত্মা স্বর্গে প্রবেশ করার পূর্ব পর্যন্ত প্রজাপতি হয়ে পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ায়।’ তাই তারা প্রজাপতিকে মনপ্রাণ দিয়ে শ্রদ্ধা করে। ফিলিপাইনরা বিশ্বাস করেন, ‘কোনো গৃহে যদি কালো প্রজাপতি প্রবেশ করে তবে ওই গৃহের কোনো সদস্য শিগগিরই মারা যাবে।’ আর বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গ্রামের মানুষের বিশ্বাস, ‘কারো শরীরে প্রজাপতি বসলে ওই ব্যক্তি সৌভাগ্যবান। অবিবাহিত কারো শরীরে প্রজাপতি বসলে শিগগিরই তার বিয়ে বলে ধরে নেয়া হয়।’
source
Thanks for reading my post.
@ranna001