"সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি"
টানা এক মাসের অস্তিরতা শেষে বাংলাদেশ যখন ঘুরে দাড়াতে যাবে ঠিক তখনই শুরু হল আকস্মিক বন্যা। বিশেষ করে বাংলাদেশের ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। টিভি, পত্রিকা বা স্যোসাল মিডিয়া যেখানেই চোখ রাখি শুধু খারাপ সংবাদ। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলোতে মানুষের কোন হাত থাকে না। তবে বন্যার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভিন্ন। বিশেষ করে এবারে বন্যা আকস্মিক।
সাধারনত বর্ষা মরসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারনে বন্যা হয়, কিন্তু এবার মধ্যরাতে হঠাত করেই বাংলাদেশের ফেনী ডুবে গিয়েছে। অনেকেই ধারণা করছেন বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশি রাষ্ট্র হটাৎ বাধ খুলে দেয়ায় এক সাথে অনেক বেশি পানি ঢুকে বাংলাদেশকে প্লাবিত করেছে। যদিও প্রতিবেশি রাষ্ট্র বলেছে, তাদের দেশে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বাঁধ উপচে পানি গরিয়েছে বাংলাদেশে।
যখন একটি নদীর পানিতে বাধা দিয়ে কৃত্রিম বাঁধ দেয়া হয় তখন নদিপথ পরিবর্তন হয়, বাধের উল্টোপাশে পলি জমে নদী অগভীর হয়ে যায়, তখন নদী দিয়ে যথেষ্ট পানি প্রবাহিত হতে না পেরে আশেপাশের অঞ্চলকে প্লাবিত করে, এর ফলে আকস্মিক বন্যার সূত্রপাত হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তেমনটি হয়েছে।
pexels-pok-rie-33563-14823608.jpg
Source
বন্যা মোকাবিলার জন্যে যথার্থ ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে না পারায় বাংলাদেশ যেমন দায়ী অন্যদিকে যারা বাঁধ নির্মাণ করে এই পানির প্রবাহে বাধা দিয়েছে তারাও পরোক্ষ ভাবে দায়ী। এর পরেও যদি বাধের মুখ খোলার অন্তত ১০-১২ ঘণ্টা আগে সতর্ক করা হতো তাহলে হয়তো মানুষ গুলো নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারতো। এভাবে পানি বন্দী হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পরতে হতো না।
pexels-pok-rie-33563-14823609.jpg
Source
সব সময় চাইবো প্রতিবেশি দেশ যেন এই ব্যাপারে আরো একটু দায়িত্বশীল আচরণ করে। ব্যাপারটা অনেকটা এমন যে ধরুণ, আমি একটা বাড়ির উপরের তলায় থাকি, কোন উপায়নোত্তর না দেখে আমাকে বাধ্য হয়ে জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে হবে, আমি কি টুব করে ময়লা ফেলে দিবো? সেটা প্রতিবেশির মাথায় পড়ছে কি না, সেটা তো অন্তত দেখতে হবে, তাই নয় কি? ঠিক তেমনি পানি ছাড়ার পূর্বে একটু জানালে তো ক্ষতি নেই।
pexels-pok-rie-33563-14823611.jpg
Source
বন্যার প্রকোপ এখনো কমে নি, তবে বাংলাদেশের মানুষ দলমত নিরবিশেষে বন্যার ক্ষতি কমাতে যেভাবে এক যোগে কাজ করছে, তা এই বিপদের মধ্যে একটু আশার আলো দেখাচ্ছে। জাতি, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একযোগে কাজ করছে। কালকে দেখলাম আস সুন্নাহ নামের একটি ফাউন্ডেশন যারা বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ দিচ্ছে, তাদেরক একটা মন্দিরের কর্তৃপক্ষ নগদ টাকা ডোনেট করেছে। এই যে ভেদাভেদ ভূলে এভাবে এগিয়ে আসা, এই বন্যা না হলে হয়তো এটা হতো না। জানিনা সাম্নের দিনগুলি কেমন হবে, তবে এতটুকু বুঝতে পারছি এভাবে সবাই এক থাকলে পথ হারাবে না বাংলাদেশ।
pexels-dibakar-roy-2432543-26202088.jpg
Source
আমার আজকের এই লেখা কারো বিরুদ্ধে নয়, আমরা চাই প্রতিবেশি দেশের সাথে আমাদের সম্পর্ক আগের থেকে ভালো থাকুক। বিপদে একে অপরের পাশাপশি থাকি। রাজনীতি, বা পেশি শক্তির উপরে গিয়ে ভাবতে শিখি সবাই মানুষ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ ত্রিপুরা সহ সকল অঞ্চলের মানুষ দ্রুত এই দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাক এই কামনায় আজকের মত শেষ করছি।