pexels-crisstianpantoja-838879.jpgSource
আসক্ত বা Addicted শব্দটা শুনলেই আমাদের মাথায় নেতিবাচক চিন্তাধারা ঘুরপাক খেতে থাকে। তবে আসক্তি তো ভালো কাজের প্রতিও হতে পারে। একেকজন একেক বিষয়ের প্রতি আসক্ত হতে পারে।
ছোটবেলায় বই পুস্তকে পড়েছিলাম সমাজের ক্ষতি করে এমন কিছুর প্রতি আসক্ত ব্যক্তি হলো- সামাজিক ব্যাধি। যেকোনো বাজে কোনো কিছুর প্রতি আসক্ত যে কতটা ভয়ংকর সেটা আমরা সবাই জানি।
তাহলে এর ভয়াবহতা জানার পরও কেন আমরা আমাদের সন্তানদের আসক্ত করে তুলি।
অবাক হচ্ছেন আর ভাবছেন, কিভাবে আমার সন্তানকে কোনো বিষয়ে আসক্ত করে তুললাম ???
তাহলে একটা কথা বলি শুনুন,,,
প্রথমত,
- আপনার সন্তান খেতে না চাইলে কি মোবাইলে কার্টুন বা গেম চালু করে ফোনটা হাতে ধরিয়ে দেন?
দ্বিতীয়ত,
সন্তান পড়তে বসতে না চাইলে কি তাকে ১ ঘন্টা পড়া আর ১ ঘন্টা কার্টুন দেখার অফার করেন?
তৃতীয়ত,
কোনো বিষয়ে নিয়ে কান্না করলেও কি এই একই কাজটা করেন?
এই কাজগুলো যদি আপনি করে থাকেন তাহলে আমার ধারনাটাই তো সঠিক! আপনি আপনার সন্তানকে মোবাইলের প্রতি আসক্ত করে তুলছেন।
pexels-ketut-subiyanto-4544906.jpgSource
আপনি ভাবতে পারেন, এটা খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। এতে কি এমন হবে, এখন সবাই তো এমনই করে।
মোবাইল ফোনের তেজস্ক্রিয় আলো একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের চোখের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর তাহলে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের কারনে ছোট বাচ্চাদের চোখের উপর কতটা প্রভাব ফেলছে, এবার ভেবে দেখেছেন কি??
শুধু তাই নয়,,,
এখন থেকেই যদি সন্তানের মোবাইলের প্রতি আসক্তি জন্মে যায় তাহলে যতদিন যাবে এটা তো ততই বৃদ্ধি পেতে থাকবে আর এটা আপনার সন্তানের পড়াশুনা তথা ভবিষ্যত জীবনে উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মোবাইল গেমিং বা অনলাইন গেমিং এ আসক্ত হওয়াটা যে কতটা মারাত্মক সেটা আমি নিজে খুব ভালো করেই জানি কারন সেটার ভুক্তভোগী ছিলাম আমি নিজে।
pexels-rdne-7915285.jpgSource
মনে আছে, এইত কয়েকবছর আগের কথা!
যখন প্রথম প্রথম করোনা মহামারীতে ছেয়ে গেলো গোটা বিশ্ব। ধীরে ধীরে এটা বিস্তার লাভ করতে থাকে আর অকালেই ঝরে যেতে থাকে লাখো প্রাণ। তখন স্কুল, কলেজ, কোচিং, সকল কর্মস্থল বন্দ করে দিলো।
রাস্তা দিয়ে সব সময় পুলিশ টহল দিত তাই রাস্তায় বেরোনো সম্ভব নয়। বাড়িতে বসে সারাদিন কি করবো? না আছে কাজ, না আছে পড়াশুনা, ঠিক তখনই বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে অনলাইন গেম ডাউনলোড করলাম, সর্বনাশের শুরু এখান থেকেই।
হয়ে গেলাম গেমিং এর প্রতি আসক্ত। খাওয়া, ঘুম বাদে বাকি সময় শুধু গেমিং করতাম। নিজেও বুঝতাম যে আমি আসক্ত হয়ে পড়েছি তবুও ফিরতে পারতাম না এটা থেকে। এভাবে অনেক দিন চললো।
আস্তে আস্তে যখন কলেজ খুললো, একদিন রাগ করে সব ডিলিট করে দিলাম। এখন মাঝে মাঝে ভাবি জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট করে ফেলেছি।
pexels-rdne-7915523.jpgSource
আমরা হয়ত সাময়িকভাবে সন্তানকে খুশি রাখতে এসব করতে দিয়ে থাকি তবে ওদের অবুঝ মন অজান্তেই এটা প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। আমি এমনও অনেক বাচ্চা দেখেছি যাদের ফোনে কার্টুন না দেখানো পর্যন্ত কোনোভাবেই খাওয়ানা সম্ভব না।
ফোনে কার্টুন চালিয়ে দিলে ওদের চোখ থাকে ফোনের দিকে আর এদিকে খাওয়া চলতে থাকে। সত্যি বলতে আমার কাছে অনেক বেশি বিরক্তির কারন এটা। তাই এটা আরও ভয়ংকর রূপ ধারন করার পূর্বে এখনই বাধাদান করা উচিত।