মার্কোসার জীবন

in blurt-192372 •  last month 

মার্কোসার (Mercosur) হলো দক্ষিণ আমেরিকার একটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্থা, যা আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে এবং উরুগুয়ের সমন্বয়ে গঠিত। সংস্থাটির পূর্ণাঙ্গ নাম হলো "মার্কেট ডেল সুর," যা স্প্যানিশ ভাষায় "দক্ষিণের সাধারণ বাজার" বোঝায়। মার্কোসার গঠনের উদ্দেশ্য হলো এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন বাজার তৈরি করা, বাণিজ্য সুবিধা বৃদ্ধি করা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা উন্নত করা।

images.pngsource

images (2).jpegsource

প্রতিষ্ঠা ও ইতিহাস
মার্কোসার প্রতিষ্ঠিত হয় ২৬ মার্চ ১৯৯১ সালে আসুনসিয়ন চুক্তির মাধ্যমে। প্যারাগুয়ের রাজধানী আসুনসিয়নে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির মাধ্যমে মার্কোসার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। ১৯৯৪ সালে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি, ওরোপ্রেটো চুক্তি, স্বাক্ষরিত হয়, যা মার্কোসারকে একটি কাস্টমস ইউনিয়নের দিকে অগ্রসর করে। এই চুক্তির ফলে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন শুল্ক ব্যবস্থা চালু হয় এবং তৃতীয় দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যে একীভূত নীতি গৃহীত হয়।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
মার্কোসারের মূল লক্ষ্য হলো এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন বাজার সৃষ্টি করা। এর মাধ্যমে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে পণ্য ও সেবার অবাধ প্রবাহ, পুঁজি এবং শ্রমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া এই জোটের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোট হিসেবে আবির্ভূত হওয়া।

মার্কোসার একটি সাধারণ শুল্ক কাঠামো তৈরি করেছে, যা সংস্থার অভ্যন্তরে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যকে সহজতর এবং প্রতিযোগিতামূলক করে তোলে। এছাড়া মার্কোসার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সদস্য এবং সহযোগী সদস্য
মার্কোসারের প্রতিষ্ঠাতা চারটি দেশ হলো আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে এবং উরুগুয়ে। পরবর্তীতে ভেনিজুয়েলা মার্কোসারে যোগ দিলেও দেশটির সদস্যপদ বর্তমানে স্থগিত রয়েছে রাজনৈতিক কারণে। এছাড়া বলিভিয়া পূর্ণ সদস্য হিসেবে মার্কোসারে যোগদানের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। পেরু, চিলি, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, গায়ানা এবং সুরিনাম এই সংস্থার সহযোগী সদস্য দেশ হিসেবে রয়েছে।

সফলতা এবং চ্যালেঞ্জ
মার্কোসার প্রতিষ্ঠার পর থেকে দক্ষিণ আমেরিকার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে একটি বড় পরিবর্তন এসেছে। সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই অঞ্চলে বিনিয়োগও বৃদ্ধি পেয়েছে। তদ্ব্যতীত, মার্কোসার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাবও দিয়েছে।

তবে মার্কোসারের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এর সদস্য দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থা অনেক সময় সংস্থার কাজকে প্রভাবিত করে। বিভিন্ন সময়ে মার্কোসারের দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন ও অর্থনৈতিক দুর্বলতা চুক্তির কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত করেছে।

উপসংহার
মার্কোসার দক্ষিণ আমেরিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক জোট। এর মাধ্যমে অঞ্চলটির দেশগুলো অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে। যদিও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে, মার্কোসার দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE BLURT!