অতিরিক্ত ঝাল বা মশলাদার খাবার খাওয়া আমাদের শরীরে বেশ কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ঝাল খাবারে প্রধানত ক্যাপসাইসিন নামে একটি যৌগ থাকে যা মরিচ বা লঙ্কার ঝাল ভাব সৃষ্টি করে। সামান্য পরিমাণ ঝাল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হতে পারে, কারণ এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তবে অতিরিক্ত ঝাল খেলে শরীরে কিছু বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রথমত, অতিরিক্ত ঝাল খেলে হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা হতে পারে। ঝাল খাবার পাকস্থলীতে গ্যাস এবং অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে দেয়। ক্যাপসাইসিন পাকস্থলীর আবরণীকে উত্তেজিত করে, যার ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা অম্বল হতে পারে। বিশেষত যাঁরা ইতিমধ্যেই গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এটি আলসার বা পেপটিক আলসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত ঝাল খাবার খেলে অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঝাল খাবারের কারণে অন্ত্রের সংবেদনশীলতা বেড়ে যায় এবং এটি প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। ফলে ডায়রিয়া বা বদহজমের মতো সমস্যা হতে পারে। এছাড়া ঝাল খাবারের কারণে হরমোনাল ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, যা অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
ঝাল খাবার অতিরিক্ত খেলে হার্টের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ক্যাপসাইসিন স্নায়ুতন্ত্রকে উত্তেজিত করে, যার ফলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে এবং হৃদস্পন্দন দ্রুত হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ঝাল খাবারের কারণে হৃদযন্ত্রের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা দীর্ঘমেয়াদে হার্টের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
এছাড়াও, অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার ফলে মুখগহ্বরে এবং খাদ্যনালীর ক্ষতি হতে পারে। ঝাল খাবার মুখের লালাগ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে, যার ফলে মুখে জ্বালা এবং পুড়ানো অনুভূতি হয়। এর পাশাপাশি, গলার সংবেদনশীল টিস্যুগুলোকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। যদি নিয়মিত অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া হয়, তাহলে এটি গলার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, এবং ক্ষতিগ্রস্ত খাদ্যনালী দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
অতিরিক্ত ঝাল খাবারের কারণে ত্বকেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্যাপসাইসিন হরমোনকে উত্তেজিত করে, যা ঘামের মাধ্যমে ত্বকে বের হয়। এর ফলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রণ, ফুসকুড়ি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ঘামের ফলে ত্বক শুষ্ক ও অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ে।
সবশেষে, অতিরিক্ত ঝাল খেলে মানসিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব পড়তে পারে। ক্যাপসাইসিন অস্থিরতা ও উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে। ঝাল খাওয়ার সময় মস্তিষ্কে এন্ডরফিন ক্ষরণ হলেও, অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে উদ্বেগ এবং অস্বস্তি বাড়তে পারে।
সুতরাং, স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য পরিমিত পরিমাণে ঝাল খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া থেকে বিরত থাকা এবং স্বাভাবিক মাত্রায় ঝাল খাওয়ার মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখা সম্ভব।
Please vai blurtbooster theke ki vabe vote pabo bolben..