![]() |
---|
হ্যালো বন্ধুরা,
সেদিন যে সরাইলে গিয়েছিলাম কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখেছি ,এর মধ্যে একটি ছিল কমলা বাগান ও লিচু বাগান। তবে দুঃখের বিষয় এই যে, লিচু তো পারিনি , সাথে কমলা ও পাইনি।
![]() |
---|
বলে রাখা ভালো, যেহেতু এখন শীতকাল তাই লিচু পাবোনা এটাই স্বাভাবিক। লিচু হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন একটি ফল। বৈশাখ- জৈষ্ঠ মাসে সাধারণত লিচু পাওয়া যায় তা ও আবার খুব অল্প সময়ের জন্য।
![]() |
---|
তবে, মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম যে ,কমলা বাগানে যেয়ে কমলা দেখব। কিন্তূ ,বিধিবাম। এত সুন্দর কমলা বাগান কিন্তু ,কমলার কোন বয় গন্ধ ও নেই । অর্থাৎ গাছে কোন কমলা নেই। ফলবিহীন বাগান দেখতে খুব একটা ভালো লাগেনি, তারপরও একটু অন্যরকম ছিল ,আমার জীবনে প্রথম কমলা বাগান দেখা।
![]() |
---|
![]() |
---|
তবে, মজার বিষয় হল ,এটি ব্যক্তি উদ্যোগে করা বাগান। ফলন ও না কি খুব ভালো হয়েছিল। এখানকার লিচু ও খুব সুস্বাদু। সেই সূত্র ধরে বলা যায় যে, কমলা খেতে ও হয়তো সুস্বাদু ই ছিল যদি ও খেয়ে দেখি নি, তাই এর স্বাদ বুঝতে পারছি না।
আমরা যেহেতু কয়েকটি জায়গায় যাব ,তাই খুব ভোরবেলায় রওনা দিয়েছিলাম। কমলা বাগানে সকাল সাড়ে নয়টায় পৌঁছে গিয়েছি । তো স্বাভাবিকভাবেই বুঝেন ,শীতের সকাল সাড়ে নয়টা মানে অনেক সকালে। ঘুড়িতে সাড়ে নটা বাজলে ও প্রকৃতি দেখে বোঝার উপায় নাই যে ,সকাল সাড়ে নয়টা বাজে ।মনে হয় যে ,সদ্য সূর্য উঠেছে,এই মাত্র ভোর হলো।
আর বাগানটি একেবারেই নির্জন এলাকায় ।পরিত্যক্ত একটি জায়গায় জনবসতি নেই, কেমন জানি একটু ভয় ও লাগছিল মনে। অপরিচিত জায়গায ,তারপর যদি কোন জনমানব না থাকে, ভয়ে কাজ করাটাই স্বাভাবিক ।আর আমাদের টিমে পুরুষ বলতে শুধু গাড়ির ড্রাইভারই ছিল। সে ও যেন কোথায় উধাও হয়ে গেল ।আমরা কয়েকজন মহিলা মানুষ , সত্যি বলতে,আমার ভিতরে ভিতরে ভয় কাজ করছিল , কিন্তু বুঝতে দেইনি অন্যদের ।
তারপর একেবারে রাস্তার পাশেই যে বাগান তাও নয়। গাড়ি রেখে প্রায় অনেকটুকু ই হেঁটে যেতে হয়েছিল আমাদের । অনেক টা ই ভিতরের দিকে।টিলা জাতীয় একটি এলাকা। মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে হেটে অনেকটুকু যাওয়ার পর চোখে পড়লো, একপাশে লিচু গাছ আরেক পাশে কমলা লেবুর বাগান।
আমার এক কলিক মজা করে বলেই ফেলল। দূর কি যে করলাম এক কেজি কমলা নিয়ে আসলেই পারতাম। গাছে ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে অন্তত ছবিটা তো তুলতে পারতাম। সেই শুনে সবাই হেসে তো খুন ।আর আমি তো এমনিতেই হাসির রানী, একটু হাসির গন্ধ পেলেই হয় আর কিছুই লাগেনা। 🤓🤓🤓
যাই হোক বন্ধুরা, অনেক সময় কাটিয়েছি ,ছবি তুলেছি ভিডিও করেছি ।তারপর আবার সেই মেঠো পথে হেঁটে হেঁটে মেইন রাস্তায় আসলাম যেখানে আমাদের গাড়ি রাখা ছিল । তবে এখনো কিন্তু কেউ নাস্তা করিনি। ভোর সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে বাগান দেখলাম অনেকটা ভুলেই গিয়েছিলাম যে, আমরা কেউ এখনো নাস্তা করিনি বা কোন প্রকার খাবার পেটে ঢুকেনি।
যাইহোক, মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে গাড়িতে উঠে আখের রসের সন্ধানে বের হলাম ।সেই আখের খেয়েই সকালের নাস্তা টা শুরু করলাম। টাটকা রস খেতে ভালোই লাগছিল আসলে। আখের রস নিয়ে অন্য একটি ব্লগে আপনাদের সাথে কথা বলব, ইনশাআল্লাহ।
নতুনকে সবাই জয় করতে চায়। অজানা কে জানতে চাই এটাই মানুষের স্বভাব বা প্রকৃতি। যখন শুনেছি যে, এখানে একটি কমলা বাগান ও লিচু বাগানে রয়েছে তখন থেকেই দেখার আগ্রহ ছিল ।তবে সময় সুযোগ হয়ে ওঠেনি ।পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি সামলিয়ে আসলে যাওয়া হয়নি।
তবে একেবারে খারাপ লাগেনি, চারপাশের পরিবেশটা খুবই সুন্দর নির্জন স্তব্ধ। উপভোগ করার মত একটি পরিবেশ।
আর আমার সফর সঙ্গীগুলো ছিল অন্যরকম, রোমান্টিক জলি মাইন্ডের। তাই আমরা উপভোগ করেছিলাম। কমলা বাগানে যে কমলা দেখিনি তা নিয়ে আমাদের বিন্দু পরিমাণও মন খারাপ হয়নি বা আমাদের আনন্দে কোন ভাটা পরেনি। আমরাই আমরা যেখানে কজন থাকি সেখানে জমিয়ে তুমি।
তবে ,আশা রয়েছে ভবিষ্যতে কমলা বাগানে কমলা আছে কিনা ,সেই খোঁজখবর নিয়ে কমলা বাগান দেখতে যাব। গাছে ঝুলন্ত কমলার ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। সেই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন যেখানেই থাকেন আনন্দে থাকবেন।
ভালো থাকার বিকল্প নেই ।জীবনে ঝড়ঝাপটা আসবে, উত্থান পতন আসবে ।খারাপ ভালো পরিস্থিতির সমন্বয়েই জীবন । জীবনকে উপভোগ করুন। আশেপাশের পরিবেশকে দেখার সুযোগ তৈরি করে নিন। সপরিবারে ভ্রমণ করুন ।ভ্রমণের বিকল্প নেই, ভ্রমণ মনকে ভালো রাখতে সহায়তা করে ।আমার মনে হয় জীবনকে সুস্থ সুন্দর করে গড়ে তুলতে ভ্রমণের প্রয়োজন রয়েছে।
তো বন্ধু চলুন আমরা সময় সুযোগ করে প্রকৃতিকে উপভোগ করি ।মহান আল্লার সৃষ্টি জগতকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ তৈরি করে নেই।
তো রাখছি তাহলে, আল্লাহ হাফেজ।