![]() |
---|
প্রিন্সিপাল আপনার সাথে প্রায় অনেকদিন যাবৎ ই এখানে সেখানে ঘোরাঘুরি করেছিলাম, এর কারণ ও অবশ্য আপনারা জেনেগিয়েছেন ইতিমধ্যেই। আমাদের সরকারি চাকরি একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ রয়েছে। তাই নির্দিষ্ট সময়ের পর আমাদেরকে অবসরে যেতে হয় এটাই চাকরির রীতি।
আমাদের ম্যাম ও ৩২ বছর চাকরি করার পর তার কর্মজীবন থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। আর ওনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করা হয়েছে এবং অনেক জায়গায় নিমন্ত্রণ পেয়েছি উনার সাথে।
অর্থাৎ ,উনার সফর সঙ্গী হতে পেরেছি ,সেজন্য আল্লাহর দরবারে লাখো লাখো শুকরিয়া। আমাদের স্কুল এন্ড কলেজে প্রায় ৮১ /৮২ জনের মতো টিচার এর মধ্যে থেকে আমাকে যে ম্যাম নির্বাচন করেছেন সেটি আমার জন্য কম নয় বন্ধু রা।
কারো প্রিয়জন হতে পারাটা কিন্তু অনেক কঠিন ব্যাপার, প্রিয়জন হওয়াটা যতটা কঠিন আর প্রয়োজনের তাগিদে আপনজন হওয়াটা ততটাই সহজ। আমি কারো প্রয়োজন নই বরং প্রিয়জন এটাকে আমি অনেক বড় হিসেবে দেখি ,তথা আমার জীবনের অর্জন হিসেবে দেখি।
তবে, কে কখন কাকে কিভাবে গ্রহণ করে ,সেটা বলাও অনেক কঠিন ব্যাপার। কারণ অন্তরের খবর কেবলমাত্র অন্তর্যামীই জানে।
তবে সবকিছুকে পজিটিভ নিলে কিছুটা হলেও কষ্ট লাগব করা যায়। সহজ বিষয়গুলোকে জটিল ভাবে দেখলে এর জটিলতা দিন দিন আরো বেড়ে যায়। আমি স্বভাবতই সহজ সরল টাইপের মানুষ। জটিলতা একে বারেই পছন্দ করি না। আমার বিশ্বাস আমার প্রভু আমাকে সমস্ত প্রতিকুলতা থেকে, সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করবে।
যেহেতু উনি অন্তর্যামী নিশ্চই ,উনি আমার অন্তরের খবর জানেন।
যাইহোক বন্ধুরা, সেদিন আখাউড়া গিয়েছিলাম এবং বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন শেষে আমার এক সহকর্মীর বাসায় নিমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। তবে মজার বিষয় হলো, উনি আগ থেকে কিছুই বলেনি ,অনেকটা সারপ্রাইজ হিসেবে আমাদের কাছে রেখেছেন বিষয়টা।
![]() |
---|
এত বিশাল আয়োজন তা দেখে আমার অনেকটা অবাক। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের পিঠার আয়োজন করা ছিল অবাক করার মতই একটি বিষয়। আমি যে পিঠাগুলো আপনাদের সাথে উপস্থাপন করছি এর মধ্যে অনেকগুলো পিঠা আগে বানাতে হয়, চট করে বানানো যায় না। খাওয়ার উপযোগী করতে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে পিঠাগুলো বানাতে বা তৈরি করতে হয় । তাই স্বাভাবিকভাবে বুঝা যায়, উনার প্রস্তুতি ছিল দীর্ঘদিন থেকেই কিন্তু আমাদের সাথে শেয়ার করেনি।
![]() |
---|
আমরা বাঙালিরা একটু ভোজন রসিক বটে। তাই এই হরেক রকম পিঠা দেখে সকলেই প্রায় খুশিতে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম।কোনটা রেখে ,কোনটা খাব ,ভেবেই পাচ্ছিলাম না। কিছু পিঠা ছিল একটু ঝাল প্রকৃতির ,আর কিছু পিঠা ছিল মিষ্টি প্রকৃতির।
তবে আমরা মেয়েরা স্বাভাবিকভাবেই ঝাল জাতীয় খাবার একটু বেশি পছন্দ করি ,বিশেষ করে আমি। তাই আমার শুরুটা হয়েছিল একটু ঝাল জাতীয় পিঠা দিয়েই। বন্ধুরা প্রায় ৮ ধরনের পিঠা ছিল ভাবতে পারেন কি হতে যাচ্ছে।
প্রতিটা পিঠার স্বাদ ভিন্নরকম। আর পৌষ -মাঘ মানে পিঠাপুলির উৎসব। আমার মনে হয় ,এটা ছিল পৌষের পিঠা উৎসব। অনেকটাই উৎসব উৎসব ভাব কাজ করছিল সবার মনে।
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
শুধু এটাই নয়, দুপুরে ও ছিল হরেক রকমের খাবারের আয়োজন। মোটকথা ,সারাদিনই ওনাদের বাসায় কাটিয়েছি ফাঁকে ফাঁকে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়িয়েছি। সকালের নাস্তা ,দুপুরের খাবার ,রাতের খাবার সবমিলিয়ে একটা ভালো সময় কাটিয়েছি সবাই একসাথে।
খাবারগুলো যেরকম ব্যতিক্রম ছিল ,ঐতিহাসিক স্থানগুলো ছিল অন্যরকম। এতদিন যাবৎ আমি এখানে থাকি কিন্তু কখনো যাওয়া হয়নি ওই দর্শনীয় স্থানগুলোতে। এক ঢিলে দুই পাখি এমন একটা ব্যাপার ছিল।
বেড়ানো ও হয়ে গেল ,আবার দর্শনীয় স্থানগুলো ও একসাথে দেখা হয়ে গেল। যতই দেখছিলাম ততই অবাক হয়ে ছিলাম ।এত সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে আমাদের আশেপাশেই কিন্তু ,আমরা কখনো দেখিওনি আর সেভাবে ভাবিওনি।
শুধু আমি নই সবাই ব্যাপারটাকে খুব ইনজয় করেছিল। মনের মনিকোঠায় রেখে দেওয়ার মতো একটি দিন ছিল নিঃসন্দেহে। আরেকটি কথা না বললেই নয় ,আমার কলিগের পরিবারের সদস্য গুলো এত আন্তরিক ছিল যে ,বলার অপেক্ষা রাখে না।
উনারা আতিথিপরায়ণ বটে। জেনেছি উনাদের বাসায় এসে অনেকে উনাদের আপ্যায়নের প্রশংসা করে। একবার গেলে বারবারই যেতে চায়। আমি মনে করি এটি একটি গুণ সবার মধ্যে এই গুণ গুলো থাকে না। আবার অনেকে সময় সুযোগের অভাবে ইচ্ছে থাকলে পেরে উঠে না।
আলহামদুলিল্লাহ ,উনাদের মধ্যে অতিথি পরায়ণ ভাব রয়েছে এবং এটিকে তারা মনে ধারণ করে রেখেছে। তাই শত প্রতিকূল অবস্থাকে অতিক্রম করে, আত্মীয়কে সাধ্যমত আপ্যায়ন করতে তথা সাদরে গ্রহণ করতে চেষ্টা করে।
আমরা সবাই মুগ্ধ উনাদের অতিথিপরায়নতা দেখে। খুব ভালো একটি মুহূর্ত ছিল ।আমার জন্য তথা সবার জন্যই। তাই এদিকে মনে লালন করে রেখেছি আমার মনে হয় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমার মনে থাকবে। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের কে দেওয়ার জন্য।
বন্ধুরা আজ আর নয় সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের মত এখানেই আমার ব্লক থেকে বিদায় নিচ্ছি ভালো থাকবেন তথাপি অন্য কেউ ভালো রাখার চেষ্টা করবেন। ওহ্! বলাই তো হয়নি, নিজের মনের যত্ন নিবেন, নিজেকে সময় দিবেন কেমন। আল্লাহ হাফেজ।