Photo edited by canva
প্রথমেই জানতে চাই আপনারা সবাই কেমন আছেন? আমি আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। গতকাল কে পোস্টের মাধ্যমে হয় তো আপনারা জানতে পেরে ছিলেন, আমি আমার বাবার বাড়িতে আছি এবং ওখানে আমার বাবার করা একটা দিঘী দেখতে গিয়েছিলাম, এবং বলেছিলাম একটা পোষ্টের মাধ্যমে সম্পূর্ণ টা শেয়ার করা সম্ভব নয়। তাই, আমি আজ আপনাদের মাঝে ওখানে ঘুরতে যাওয়া কিছু চমৎকার ফটোগ্রাফি এবং ভালো লাগার কথা শেয়ার করব, তো চলুন শুরু করছি।
গতকাল আমি গিয়েছিলাম আমাদের দিঘী টা দেখতে, শুধু দিঘী বলবো না ওখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা হয়, যে টা আমি গিয়ে দেখতে পেরেছি। আমাদের বাসা থেকে সাত কিলোমিটার দূরে এই দিঘী টা, তিন কিলোমিটার পথ আমরা গাড়িতে গিয়েছি আর বাকি চার কিলোমিটার পথ হেঁটে গিয়েছি। "যে আমি হাঁটতে খুব ভয় পাই আর সেই আমি এতটা পথ হেটে গিয়েছি"
কিন্তুু কখনো আমার কাছে খুব একটা কষ্ট মনে হয়নি। কারণ, এত সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে, বাতাস টা তার মাঝে মিষ্টি রোদ ছিলো, ও হ্যাঁ পাখিদের কথা তো না বললেই নয়, এত সুন্দর বক পাখি এবং হাঁস পাখি গুলো দেখা যাচ্ছিলো ও গুলো দেখতে দেখতে পথ অর্ধেক শেষ হয়ে গিয়েছে।
এত দূরে দিঘী টা করার কারণ হলো, আমার দাদা এখানে জমি কিনে ছিলেন আর সেই সাথে আমার বাবাও কিনেছেন, আমাদের এখানে মোট ১০ বিঘা জমি রয়েছে তবে ৭ বিঘা জমি নিয়ে একটা দিঘী কাটা হয়েছে, আর এই জমিটা আমার বাবা আমার ভাই এবং আমার নামেই রেখে ছিলেন তাই আমার বাবা চান এ জমি টা যেন আমি গিয়ে দেখে আসি, আমার বাবার ইচ্ছা তিনি থাকতে তার জায়গা জমি আমাদের দুই ভাই বোনের নামে সুন্দর ভাবে লিখে দিবেন, কিন্তুু আমার এর প্রতি পাওয়া বা ইচ্ছা কোনটা এই নেই, কারণ যেখানে আমাদের বেঁচে থাকার কোন গ্যারান্টি নেই, সেখানে এত ধন-সম্পদ দিয়ে কি হবে, খেয়ে পড়ে সুস্থ থাকলে আলহামদুলিল্লাহ, আমি মনে করি।
তবু ও আমার আব্বু যখন বেশ কয়েক বার বললো তখন ভেবে দেখলাম এত যখন বলছে গিয়েই দেখি, আর সেই কারণেই আসা, এবং এখানে যেতে হবে হেঁটে এটা শুনে খারাপ লাগলেও এসে কিন্তুু আমার ভীষণ ভালো লাগছে হয়তো এটা আমার ছবি দেখেই বুঝতে পারছেন। এটা বিল এলাকা তবে এখন এখানে কারেন্ট এসেছে, এবং রাস্তাও হয়েছে নতুন আমরা এসে দেখছি মেশিন এর দ্বারা খালের মাঝখান থেকে মাটি খুঁড়ে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।
এবং হাঁটতে হাঁটতে একটা পর্যায়ে আমরা চলে এসেছি। এবং এসে প্রথমেই আমি বসে পড়েছি, এবং কিছুক্ষণ রেস্ট নিলাম।এই দিঘি টা তে আমার আব্বু এই মাছ চাষ করে, তবে আমাদের বাসা থেকে যেহেতু এটা অনেক দূরে তাই এখানে একজন লোক রাখা হয়েছে। ঐ কাকা হিন্দু ধর্মের তার ব্যবহার এত ভালো মানে সেটা আমি বলে বোঝাতে পারবো না, আমরা যে আমার সাথে সাথে আমাদের চা করে দিল বিস্কুট দিলো, এবং উনি আমাকে মা বলে ডাকলেন, এবং বারবার বলছিলো কেন তার কাছে না জানিয়ে আসা হয়েছে।
উনার মুখ দেখে বোঝাই যাচ্ছিলো যে উনি কত খুশি হয়েছে আমরা গিয়েছি দেখে। পাশেই ওনার বাসা ছিলো, এবং তিনি আমাদের জানালেন আজ দুপুরে ওনার বাসাতে আমাদের খাবার খেতে হবে, যদিও আমরা অনেক বার না করেছি তবে, ওনার বউ এসে অনেক জোরা জোরি করলো এবং আমরাও বললাম ঠিক আছে।
এই বলে আমরা বেরিয়ে পড়েছি, দিঘির চার-পাঁচ টা ঘুরে দেখার জন্য দিঘীর প্রতিটি পারে রয়েছে তিন টা করে শাড়ি টমেটো গাছের, এবং প্রত্যেক টা গাছ মনে হয়েছে আমার থেকে বড় কিছু টমেটো বেশ পেঁকেছে, আবার কিছু টমেটো আধা পাঁকা, আবার কিছু টমেটো রয়েছে কাঁচা,, হাতে ছিল পানির বোতল টমেটো ইচ্ছে মতো ছিড়েছি,ধুয়েছিএবং খেয়েছি, আমার মনে হয় আমি এর আগে কখনো এক দিনে এত পরিমাণে টমেটো খাইনি।
শুধু আমি নয়, আমরা তিন জনেই বেশ টমেটো খেয়েছি। আমার মেয়ে খুব একটা টমেটো খেতে চায় না, অনেক বলে বুঝিয়ে খাওয়াতে হয় তবে, ও আজ নিজের হাত দিয়ে ছিড়ে ছিড়ে খেয়েছে এটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আর আমি তো মনে হয় খাওয়ার থেকে বেশি ফটোগ্রাফি করেছি, কারণ আপনাদের সাথে শেয়ার করব বলে।
এখান থেকে তিন লক্ষ টাকা টমেটো বিক্রি করা হয়েছে। তবে গেছে এখনো অনেক রয়েছে। এর পাশে দিঘীর ভিতরে অনেক উঁচু উঁচু করে, অনেক বড় বড় জাল বিছিয়ে দিয়েছে, এবং এর উপর দিয়েই লাউ এবং কুমড়া গাছ লাগানো হয়েছে যদিও খুব একটা লাউ পড়েনি তবে দুই থেকে তিন টা লাউ দেখেছি। এছাড়াও এর একপাশে ছিলো পালং শাক, শাক গুলো এত সুন্দর হয়েছে দেখতে, আমরা যাওয়ার আগেই ওই কাকা, অনেক গুলো উঠিয়ে রেখেছিলো বিক্রি করতে যাওয়ার জন্য। এত সুন্দর সুন্দর কলমি শাকগুলো হয়ে রয়েছে। মনে হয় যেন লাগিয়ে রেখেছে, তখন কিছু ফটোগ্রাফি করে ছিলাম।
সত্যি, কথা বলতে ওখানে যাওয়ার পরে আমার আর আসতে মন চাই ছিলো না, মাঝে মধ্যে এভাবে ঘুরতে বের হলে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে, এবং আমি বলবো অনেক খানি আনন্দই পেয়ে ছিলাম, সবুজে ঘেরা এই জায়গাটা দেখে। ঘোরাঘুরি শেষে এরপরে দুপুর বেলা ওই কাকার বাসাতে খাবার খেয়ে ছিলাম, কাতল মাছের মুড়িঘন্ট, শিং মাছের ঝোল, ফলি মাছের কোপ্তা, এছাড়াও ছিল তাদের দেশি মুরগি এবং মুরগির ডিম।
এত কিছু দেখে ভীষণ ভালো লেগেছিল তবে ভাবছিলাম এই কাকিমা এত দ্রুত কিভাবে এত কিছু করলো। তবে খাওয়া দাওয়ার ছবি আমি তুলি নি। কারণ, আমার মনে হয়েছে সবাই তো সব জিনিস ভালো ভাবে নাও নিতে পারে তাই না। তবে, আপনাদের কাছে বাকি ফটোগ্রাফি গুলো কেমন হয়েছে জানাবেন কিন্তুু।
যাইহোক, আজ আর লিখব না অনেক কথাই বলে ফেললাম। আমারও ভীষণ ভালো লেগেছে, আপনাদের সাথে আমার ভালো লাগা কিছু মুহূর্ত শেয়ার করতে পেরে, ধন্যবাদ সবাইকে।