চাকরি বনাম ব্যবসা

in blurt-1787181 •  9 days ago 

আমরা ছোট থেকে বড় হই বিভিন্ন স্বপ্ন বুকে লালন করে।বড় হয়ে প্রফেশন হিসেবে চুজ করি চাকুরী কিংবা ব্যবসা।আমাদের সমাজে একটি রীতি আছে।সেটা হলো,যিনি ছোট থেকে পড়াশোনা করে একটা পর্যায়ে পৌছায় দিনশেষে তাকে চাকরিজীবী হতেই হবে,এটাই আমাদের সমাজের প্রত্যেকটি পরিবারের দৃষ্টিভজ্ঞি।কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলে।বাস্তব জীবনে একটা ভালো চাকরি ম্যানেজ করার প্রক্রিয়াটা বেশ জটিল।

download (4).jpegsource

হয়তো অনেকেই বলবেন যোগ্যতা থাকলে চাকরি হয়।তাইলে যারা চাকরি পায় তারাই কি শুধু যোগ্য, আর যারা চাকরি পেতে ব্যর্থ তারা কি উক্ত চাকরির জন্য অযোগ্য...? মোটেও নয়।কারন আমি মনে করি, একজন মানুষকে যেকোনো চাকরির জন্য তিন মাসের মধ্যেই তাকে যোগ্য করে তোলা সম্ভব। ।আমার মতে, একটি দেশে বেকারত্ব সৃষ্টি হওয়ার একমাত্র কারণ সম্ভাব্য কর্মসংস্থানের অভাব।

images (1).jpegsource

images (2).jpegsource

আমরা অনেকেই আছি,যারা কয়েক লক্ষ্য টাকা জামানত কিংবা উৎকোচ (ঘুষ) দিয়ে একটি চাকরি নিতে রাজি আছি অথচ উক্ত টাকা খাটিয়ে ব্যবসা করতে রাজি নই।হোক সেটা পরিবারের ইচ্ছায় কিংবা আমাদের সতন্ত্র ইচ্ছায়।আর এজন্যই এদেশে সৃষ্টি হয় অগণিত বেকারত্বের।কারণ,একটি দেশে যদি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি না হয় তবে সেদেশের এত এত জনশক্তি কাজ করবে কোথায়..? আমাদের দেশে প্রতি বছর লক্ষ্য লক্ষ্য শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করে বেরুচ্ছে। কিন্তু তার মধ্যে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সেক্টরে চাকরি হচ্ছে আর বাকি ৭০শতাংশই নাম লিখেছেন বেকারত্বের তালিকায়।

এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় সব জনশক্তি একেবারে চাকুরীর দিকে না ঝুকে কিছু সংখ্যক জনশক্তিকে হতে হবে উদ্যোগতা।সবাই চাকরিজীবী হবে এই ধ্যান ধারণা ঝেড়ে ফেলে সৃষ্টি করতে হবে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান।তবেই এদেশ থেকে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব হবে।

কেনো জানি চাকুরী আমার কাছে পরাধীনতার জিন্জির মনে হয়।তার চেয়ে কি নিজের স্বাধীন ব্যবসাই ভালো নয়...?যেখানে থাকবে না কোনো পর মানুষের হুকুমের রাজত্ব।

আমি যখন ইন্টার্ন হিসেবে একটি রেপুটেড ব্যাংকে জয়েন করেছিলাম তখন দেখেছিলাম ঐ ব্যাংকে যারা চাকরিরত তারা প্রচুর ব্যস্ত, অনেকেই দুপুরে খাওয়ার সময়টুকুও পায় না।আমি তিন মাস সেখানে থেকেছিলাম,দেখেছিলাম তাদের ব্যস্ততা। অথচ একবার খেয়াল করে দেখেন উক্ত ব্যাংক যার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তার কিন্তু তাদের মতো খুব ব্যস্ততা পোহাতে হয় না।তিনি স্বাচ্ছন্দ্যেই জীবনযাপন করেন।হয়তো তাকে একটু রিস্ক নিতে হয়েছে।ইংলিশে একটি প্রবাদ আছে,"No Risk No Gain".

উক্ত ব্যাংকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে কোনো এক প্রসঙ্গে কথা বলার সময় তিনি আমাকে বলেছিলেন পরের চাকরি করা মানেই পরাধীনতার জিন্জির,হুকুমমতো চলতে হয়,যেখানে নিজের কোনো স্বাধীনতা নাই বললেই চলে।প্রায় প্রত্যেকটা চাকরি পেশারই বৈশিষ্ট্য একইরকম।

অনেক অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত ক্যারিয়ার হিসেবে পর মানুষের চাকরি করাকেই প্রাধান্য দেয় বেশি।খুব কম সংখ্যক পিতা-মাতাই তাদের সন্তানদের উদ্যোগতা হিসেবে দেখতে চান।

এদেশের প্রতিটি সন্তানের অভিভাবকদের কাছে আমার একটি ক্ষুদ্র বার্তা...,
নিজের সন্তানদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার হিসেবে চাকরিকে প্রাধান্য না দিয়ে তাদেরকে উদ্যোগতা হতে সাহায্য করুন,খুলে দিন ব্যবসার দ্বার।সে যেন আরও দশজনের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে সেই ব্যবস্থাই করে দিন।তবেই আমাদের দেশের বেকারত্ব দূরীকরণ সম্ভব হবে।অন্যথায় নয়।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE BLURT!