ফেসবুকে মৃত্যু বিষয়ক স্ট্যাটাস দিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটিতে তাকে মৃত দেখানো হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলে তসলিমা ভেরিফায়েড পেজে ‘রিমেম্বারিং তসলিমা নাসরিন’ লেখাটি দেখা যায়। সাধারণত কেউ মারা গেলে তার বন্ধু বা স্বজনদের অনুরোধে ফেসবুক ‘রিমেম্বারিং’ অপশন চালু করে।
এদিকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তসলিমা নাসরিন। জনপ্রিয় মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটারে তসলিমা এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লেখেন, ‘ফেসবুক আমাকে মেরে ফেলেছে। ’
বিতর্কিত এই লেখিকা টুইটে বলেন, আমি জীবিত. এমনকি অসুস্থ বা শয্যাশায়ী বা হাসপাতালে ভর্তি নই। তবে ফেসবুক আমার অ্যাকাউন্টকে ‘মেমোরিয়ালাইজড’ করে রেখেছে।
এ দিকে ১৮ ঘণ্টা আগে মৃত্যু বিষয়ে লেখিকা একটি পোস্ট দেন ফেসবুকে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই স্ট্যাটাসের পরেই তাকে মৃত ভেবে রিমেম্বারিং অপশন চালু করেছে ফেসবুক।
সেই ফেসবুক স্ট্যাটাসে তসলিমা লেখেন, ‘আমি চাই আমার মৃত্যুর খবর প্রচার হোক চারদিকে। প্রচার হোক যে আমি আমার মরণোত্তর দেহ দান করেছি হাসপাতালে, বিজ্ঞান গবেষণার কাজে। কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপনে কারও জীবন বাঁচুক। কারও চোখ আলো পাক। প্রচার হোক, কিছু মানুষও যেন প্রেরণা পায় মরণোত্তর দেহ দানে।
বিতর্কিত এই লেখিকা বলেন, ‘অনেকে কবর হোক চান, পুড়ে যাক চান, কেউ কেউ চান তাঁদের শরীর পোড়া ছাই প্রিয় কোনো জায়গায় যেন ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কেউ কেউ আশা করেন তাঁদের দেহ মমি করে রাখা হোক। কেউ আবার বরফে ডুবিয়ে রাখতে চান, যদি ভবিষ্যতে প্রাণ দেওয়ার পদ্ধতি আবিষ্কার হয়!
অসুখ-বিসুখে আমি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করি এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত করবো। কোনো প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে আমার বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই, ঠিক যেমন বিশ্বাস নেই কোনো কুসংস্কারে। জীবনের একটি মুহূর্তেরও মূল্য অনেক। তাই কোনো মুহূর্তই হেলায় হারাতে চাই না। মরার পর আমরা কিন্তু কোথাও যাই না। পরকাল বলে কিছু নেই। পুনর্জন্ম বলে কিছু নেই। মৃত্যুতেই জীবনের সমাপ্তি। আমার জীবন আমি সারা জীবন অর্থপূর্ণ করতে চেয়েছি। মৃত্যুটাও চাই অর্থপূর্ণ হোক। ’
Collected
©ftp