বেকারত্বে বলতে আমরা বুঝি একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের যার কর্ম ক্ষমতা আছে এবং কর্ম ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তার কাজ করার মতো কোনো কর্মসংস্থান নাই এটাকেই আমরা বেকারত্ব বলে থাকি। এবং বেকারত্ব একটা অভিশাপ স্বরূপ। তবে কিছু নিয়ম নীতি এবং আগ্রহ থাকলে এই বেকারত্বের সংখ্যা কিছুটা হ্রাস করা সম্ভব।
বেকারত্ব:
বাংলাদেশ একটি স্বল্প আয়ের দেশ যদিও শিল্প কলকারখানা প্রভাবে কিছু কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে বেকারত্বের পরিমাণ টা একটু কমে দাঁড়িয়েছে পূর্ব থেকে। কিন্তু এখনো যে পরিমাণ বেকার শিক্ষার্থী যারা পড়াশোনা শেষ করে ঘরে বসে আছে এই বেকারত্ব কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় দরকার। এবং আরো বেশী প্রযুক্তির ব্যবহার দরকার। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি গ্রামে দেখা যায় যদি ১০০টি পরিবার সেখানে বসবাস করে থাকে তবে সেই পরিবার গুলোর মধ্য থেকে সর্বনিম্ন হলেও ২০থেকে ৩০ জন উপযুক্ত শিক্ষিত যুবক যুবতী কাজ করার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কাজের এবং তার যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের অভাবে ঘরে বসে আছে। এটাই বেকারত্ব।
বেকারত্বের কারণ:
আমার দৃষ্টিকোণ থেকে আমি বলব এই বেকারত্বের মূল কারণ আমাদের দেশে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় করার ত্রুটি। সরকার শিক্ষা খাতে বরাদ্দ গুলো করে থাকেন তার যদি সঠিক ব্যবহার করা হয় তাহলে প্রতিটা শিক্ষার্থী তার উপযুক্ত শিক্ষা পেয়ে থাকেন হাতে-কলমে। কিন্তু কিছু অসৎ লোকের দুর্নীতির কারণে এগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় না যার ফলে শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে কোন জিনিস শিখতে পারেনা। কারিগরি শিক্ষার যে পদ্ধতি চালু করা হয়েছে বাংলাদেশ এটা যদি যথাযথভাবে শিক্ষার্থীরা বুঝে নিতে পারতো তাহলে হয়তো আজ এই বেকারত্ব থাকত না।
সবথেকে বড় কষ্টের এবং অনুশোচনার বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশ বাংলাদেশ এখানে যার কাছে টাকা আছে তার কাছে ভালো চাকরি আছে। যার প্রতিষ্ঠিত মামা এবং চাচা আছে তার জন্য ভালো চাকরি আছে। ওই শিক্ষার্থী আসলে ওই সরকারি বা বেসরকারি ভালো পদের চাকরির জন্য যোগ্য কিনা সেটা মুখ্য বিষয় নয়। টাকা এবং আত্মীয়-স্বজন এর প্রভাবে অদক্ষ যুবক-যুবতী ভালো অবস্থানে চলে যাচ্ছে। কিন্তু সেই শিক্ষার্থীর দরিদ্র পরিবারের সন্তান সে তার সেই দরিদ্রতার কবলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দিনের পর দিন। এখন আপনারা হয়তো অনেকেই বলে থাকেন যে না আপনার এলাকায় একজন বা একের অধিক দরিদ্র পরিবারের সন্তান যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার যোগ্যতার বলে। কিন্তু আসলে সারা দেশের দিকে তাকিয়ে দেখুন এটা কি বাস্তব! না এটা আসলে বাস্তব না শুধু একজন বা দুইজন এর বেলায় এরকম হয়েছে কিন্তু বাকি অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটার ব্যতিক্রম ই হয়ে থাকে।
একজন দরিদ্র পরিবারের সন্তান শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যে বই বা প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী দরকার সেগুলো সে পায় না কিন্তু অন্যদিকে আপনারা দেখবেন এক জন ধনীর দুলাল তার যেটা দরকার তার থেকে বেশি সে ব্যবহার করছে এবং অপব্যয় করছে।
বেকারত্বের ফলাফল:
এই বেকারত্ব একজন শিক্ষার্থী নয় একটা মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়তো একসময় হাল ছেড়ে দিয়ে বেসরকারি কোন সংস্থার আওতাধীন একটি সংস্থায় চাকরি নিয়ে নেন। এবং আফসোস করেন মনে মনে যে তার সেই অদক্ষ সহপাঠী বন্ধুটি আজ বড় সরকারি কর্মকর্তা। আর অনেক পরিশ্রমই মেধাবী কোন কোন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার মতো জঘন্য কাজটি করে ফেলেন মনের কষ্টে। কেউ কেউ রিকশা চালানো শুরু করে কারণ তার পরিবার তার মা বাবা তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে। তারা হাল ছেড়ে দেয় কারণ তাঁদের তো আসলে কিছু করার থাকেনা। এবং কোন কোন মেধাবী শিক্ষার্থী দুর্নিতির পথ বেছে নেয়। যারা দেশের সম্পদ হওয়ার কথা ছিল তারা দেশের আবর্জনায় পরিণত হয়। সন্ত্রাসের খাতায় যাদের নাম থাকে।
অন্যদিকে দেখা যায় সেই অনুপযুক্ত যে শিক্ষার্থী যারা টাকা এবং আত্মীয় স্বজনের জন্য সরকারি কর্মকর্তা হয়েছেন তারা সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত হেনস্থা করেই চলে। কারণ যে ব্যক্তি ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরিতে বহাল রয়েছেন সেই ব্যক্তির উদ্দেশ্য অবশ্যই থাকবে যে কিভাবে শেষ ৪০ লক্ষ টাকা উপার্জন করবে। কেউ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী করতেছে আর অন্যদিকে কেউ কলম ধরে সন্ত্রাসী করছে। একটা বৈধ অন্যটি অবৈধ।
বেকারত্ব দূর করার উপায়:
প্রথমত শিক্ষাখাতে বরাদ্দ যে অর্থ বা শিক্ষার প্রয়োজনীয় অংশবিশেষ এগুলোকে সঠিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর কাছে পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার এই বিষয়গুলো তদারকি করা। সেইসাথে শিক্ষকদেরও সচেতন হওয়া উচিত যাতে তার শিক্ষার্থীর হাতে কলমে এই কাজগুলো শিখে নিতে পারে। কারণ যদি কোনো শিক্ষার্থী বাংলাদেশ সরকারের পরিচালিত কারিগরি শিক্ষা হাতে-কলমে গ্রহণ করে থাকেন তাহলে তার আর সরকারি চাকরির জন্য বসে থাকা লাগে না। নিজে থেকেই কোন কিছু করা সম্ভব যেটা তার বেকারত্বের সেই কথাটা গুছিয়ে ফেলতে পারে। একই সাথে সে অর্থ উপার্জন করতে পারবে এবং কেউ তাকে আর বেকার বলতে পারবে না। আরেকটা বিষয় হচ্ছে বর্তমান প্রযুক্তির যুগ তাই কম্পিউটার বিষয়টি প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। এবং প্রতিটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুধুমাত্র নামে নয় প্রকৃত কাজের জন্য একজন দক্ষ প্রশিক্ষকের মতো কম্পিউটার শিক্ষক দরকার। কারণ বর্তমানের যুগ প্রযুক্তির যুগ একটা কম্পিউটার একটা মোবাইল যদি কেউ যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারে তাহলে সে তার কর্মসংস্থানের সুযোগ এই মোবাইল এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে খুঁজে নিতে পারে। এমনকি এই মোবাইল বা কম্পিউটার কে একজন তার কর্মসংস্থান হিসেবেও ব্যবহার করতে পারে।
যারা আমার এই লেখাটি এখন দেখছেন বা পরিদর্শন করতেছেন সেই মানুষগুলোর উদ্দেশ্যে আমি বলবো। আপনাদের প্রত্যেকের কাছে একটি মোবাইল ফোন আছে। এবং শুধু একজন মানুষ না গোটা পৃথিবীর জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বর্তমানে ডিজিটাল মুদ্রা, এই ডিজিটাল মুদ্রা আপনি উপার্জন করতে পারেন শুধুমাত্র একটা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এবং যদি অল্প কিছু সময় ব্যয় করে এটা উপার্জন করতে আপনি সক্ষম হন; তাহলে দেখা যাবে শুধুমাত্র আপনি নয় আপনি আরো ৫০ জন লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবেন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে। এবং একটি বড় সুযোগ রয়েছে আপনারা যোগদান করতে পারেন আমাদের সঙ্গে।
ধন্যবাদ সকলকে আমার লেখাটি পরিদর্শন করার জন্য।