আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। আশা করি সবাই ভাল আছেন।
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
আজ প্রতিদিনকার মত চলে এলাম আপনাদের সাথে ভিন্ন আলোচনায় ভিন্ন কিছু নিয়ে। আসলে প্রতিটা দিনই আপনাদের সাথে কোন না কোন আলোচনা নিয়ে হাজির হয়। এবং কথার কথায় মূল টপিক এর বাহিরেও অতিরক্ত অনেক কথাই বলে ফেলি। আসলে হয়েছে কি, আমাদের দৈনন্দিন ঘটনা কিংবা আবেগ-অনুভূতির সবকিছু নির্দ্বিধায় এখানে শেয়ার করতে পারি। তাই কথায় কথায় অতিরিক্ত অনেক কথাই বলা হয়ে যায়। আর সিরিয়াস কোন আলোচনার তুলনায় সাধারণ আলোচনা গুলো করতে আমার থেকে সব থেকে বেশি ভালো লাগে। আর সবথেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে এখানে আমরা একটি পরিবারের মত হয়ে গিয়েছি যেখানে আমরা নির্দ্বিধায় আমাদের আবেগ অনুভূতি গুলো সকলের সাথে প্রকাশ করতে পারি।
যাইহোক এবার আসি আজকের মূল আলোচনায়। খুব প্রচলিত একটি বাক্য আছে - "নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস, ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস "। এটি শুধুমাত্র একটি প্রচলিত বাক্য নয় বরং এটি আমাদের মানব জীবনের সাথে জড়িত ।
আমাদের প্রত্যেকের জীবনে হাসি -আনন্দ, সুখ-দুঃখ, লাভ - ক্ষতি এই সব অনিবার্য একটি অংশ। সবার জীবনে যেমন আসে অনিবার্য সুযোগ তেমনি অনেকে অনেক সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। এই সহজ বিষয়টিকে আমরা মেনে না নিয়ে অন্যের অবস্থানের সাথে আমরা নিজেদের তুলনা করি। অথচ আমরা একবারের জন্য ভেবে দেখি না যে আমি যার সাথে নিজের তুলনা করছি তারা এমন অনেক কিছুই নেই যে আমার আছে। আমরা কখনোই নিজের সৌভাগ্য গুলোর সম্পর্কে বিবেচনা করি না বরং অন্যের সৌভাগ্য গুলো নিয়ে পড়ে থাকি।
রাজপুত্র এবং ভিখারি ছেলে সে গল্পটা নিশ্চয়ই আমরা সকলে জানি। রাজপুত্র তার প্রাসাদে দাঁড়িয়ে যখন রাস্তায় ওই ভিখারি ছেলেটিকে দেখে তখন সে ভাবে ওই ভিখারি ছেলে কতই না সুখি । সে কতই না স্বাধীন। তার বিভিন্ন মানুষের যাতে চলাফেরা, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো। কোন দায়িত্ব কিংবা চাপ নেই তাঁর। যখন তার যা ইচ্ছা তাই করতে পারছে। কেউ তাকে বাধা দিচ্ছে না। আর রাজপুত্র ভাবছে সে কতইনা বন্দি জীবনের মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। সে ইচ্ছে করলেও কখনো প্রাসাদের বাইরে বেরোতে পারে না। সাধারন মানুষদের সাথে মিশতে পারে না। তার মধ্যে কোন স্বাধীনতা নেই। সবসময়ই তার ভারি ভারি পোশাকে পরিপাটি থাকতে হয়।
কিন্তু অন্যদিকে ভিখারি ছেলেটি যখন সুসজ্জিত রাজপ্রাসাদের দাঁড়িয়ে থাকা পরিপাটি পোশাক পড়া রাজপুত্রকে দেখে তখন সে ভাবে কতই না সুখি এই রাজপুত্র। যখন সে যা চায় তাই পায়। কতইনা সুস্বাদু খাবার সে পাই। অথচ তাকে সারাদিন কত কষ্ট করে ভিক্ষা করে খাবার জোগাড় করে। তাই তার মতে রাজপুত্রই সবথেকে সুখী।
রাজপুত্র ভাবে ভিখারির ছেলে সুখী আর ভিখারী ছেলে ভাবে রাজপুত্র সুখী। অথচ কেউ তার নিজের অবস্থান নিয়ে সুখী নয়।
আর এই গল্পের রাজপুত্র ও ভিখারির ছেলে মত আমাদের ও একই অবস্থা। আমরা কেউ নিজের অবস্থান নিয়ে সুখী নয়। একজন সর্ব সুখী ব্যক্তি ও মনে করে অন্যজন তার থেকে আরও বেশি সুখী। আর এভাবে আমরা নিজের অবস্থানকে সুখী মনে না করে অন্যের অবস্থানটিকে বেশি সুখের বলে ধারণা করি। আমরা মানুষরা এমন ই আমাদের কি আছে না আছে সেটি না ভেবে অন্যের কি আছে সেটি নিয়ে বেশি চিন্তিত। আমরা সুখী হতে পারি যদি আমাদের আত্ম তৃপ্তি থাকে। তাই সুখী হতে হলে আত্মতৃপ্তি টা সবথেকে বেশি জরুরি। তবে আমরা মানুষ স্বভাবগত ভাবেই অতৃপ্ত। আমরা বেশির ভাগ মানুষই নিজ অবস্থান সন্তুষ্ট নয়।
অন্যের অবস্থান কিংবা সৌভাগ্য দেখে চক্ষুশূল করে ঈর্ষাকাতর না হয় নিজের অবস্থান নিয়ে আত্মতৃপ্তি থাকলেই আমরা নিজে যে অবস্থানে থাকি না কেন এতে আমরা সুখ খুজে পাব। আর তাই বলা যায় আত্মতৃপ্তি হচ্ছে আমাদের জীবনের মূল সুখ।
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
আজ এ পর্যন্তই। জানিনা আজকের আলোচনায় মুল বিষয়টা আপনার সাথে কতটুকু তুলে ধরতে পেরেছি। পরবর্তীতে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে হাজির হবো সে পর্যন্ত সকলে ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।