আমরা আশা করলেই যে জীবনের সকল চাওয়া পাওয়াগুলো পূর্ণ হয় তা কিন্তু নয়।জীবনের কিছু চাওয়া গুলো আকাশে ভেসে বেড়ানোর মেঘের মতো ঘুরে বেড়ায়।সব সময় বৃষ্টিরূপে মাটিতে পরে না।আশা করলেও তা পূরণ হয় না।আমাদের জীবনে কিছু কিছু সময় অতীতে এমন কিছু ঘটে যায় যেটার জন্য আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎটাকে তার ফল ভোগ করতে হয়।তবে আমাদের বিশ্বাস করা উচিত। যেটা আমাদের জন্য সৃষ্টি কর্তা রাখেন নাই সেটা পাওয়ার আশাটা করা অনেকটা চাঁদে বাড়ী বানানের মতো হয়ে যায়। আমরা যদি আমাদের অতীতটাকে ভুলতে পারি তাহলেই বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ কে ভালো করে বরণ করতল পারব।অতীতের না পাওয়া জিনিসগুলোকে ভাবতে হবে সেটা আমার জন্য ছিল না, যার কারণে আমি পায় নাই।এখন সামনে যেটা আমার কাছ আসছে সেটা গ্রহণ করার মন মানষিকতা আমাদের মাঝে তৈরি করতে হবে।যাতে আমরা আমাদের আশা গুলোকে বাস্তবের রূপ দিতে পারি।
একটা বৃক্ষ রোপন করেই যদি আশা করি তার ফলটা ভোগ করব।তাহলে বোকামি ছাড়া আর কিছু ভাবা যাবে না।আগে গাছটাকে যত্ন করে বড় করতে হবে তারপরই তার ফল ভোগের আশা করা যায়।আমাদের সামনের দিনগুলোতে এগিয়ে যেতে হলে অতীতের সকল কষ্ট, না পাওয়া ব্যাথাগুলোকে ভুলে যেতে হবে।তাহলেই ভবিষ্যৎতে আশার আলো দেখা যাবে।অতীতে যখন আমাদের জীবন থেকে কিছু চলে যায় বা না পাওয়া হয় তাহলে আমাদের সমাজ আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে ছোট করে, শুনতে হয় পরিবারের সবার হুংকার।চাপা রাখতে হয় বুকে শত শত কষ্ট।তবুও যেন না পাওয়া জিনিসটা নিয়েই বেশি আমাকে প্রশ্ন করে।অতীতের ভাবনা গুলো আমাদের বর্তমানটাকে নষ্ট করে দেয়।কিন্তু আমাদের উচিত শত কষ্ট বুকে চেপে রেখে অতীতকে ভুলে থেকে বর্তমানকে গড়ে তোলা। তাহলেই ভবিষ্যৎ কে আলো দেখাতে পারব।আমরা ভবিষ্যতে সুখে বাস করার আশায় যেমন হাজার কষ্ট হলেও বর্তমানে বাসা নির্মাণ করি। ঠিক তেমনই আমাদের জীবনকে গড়তে হবে।
আমি একজন ডিপ্লোমার ছাত্র।কিছুদিন আগে করোনা মহামারির মধ্যে স্বাস্থ্য বিধি মেনে আমাদের দ্বিতীয় পর্বের সেমিস্টার ফাইনাল পরিক্ষা হলো।আমি পরিক্ষাটা দেওয়ার জন্য তিন মাসের জন্য আবার ম্যাচে গিয়েছিলাম।ম্যাচে থেকে পড়াশুনা করে পরিক্ষা দিলাম।পরিক্ষাটা খুব ভালোই দিয়েছিলাম।মনের খুব জোর ছিল যে আমি এবারও জিপিএ ফোর পাবো।কারণ আমাদের এখন জিপিএ ফোর গ্রেড দেওয়া হয়।পরিক্ষা দিয়ে কিছু দিনের মধ্যেই বাসায় চলে আসলাম।কারণ তখন করোনার প্রকোপটা বেশি ছিল।যার কারণ ম্যাচ বন্ধ হয়ে যায়। আর আমিও বাসায় চলে আসি।কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের পরিক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়।সেই সময়টা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টময় সময়।চারিদিকে যেন আমি আমার হতাশা আর মানুষের সমলোচনা শুনছিলাম।বুকের ভেতরটা পাখির ছিড়ে যাওয়া ডানার মতো কষ্ট হতে লাগল।এমনটা আমার জীবনে হবে ভাবতে পারি নাই।
মনের চাপা রাখা কষ্টটা নিয়ে রেজাল্ট সিটে নিজের পজিশনটা খুজে নিলাম।দেখলাম আমাদের ডিপার্টমেন্টের কয়েকজন ভালো রেজাল্ট করেছে।মানে তারা জিপিএ ফোর পেয়েছে।সবচেয়ে বেশি কষ্ট হলো কয়েকজনের রেজাল্ট দেখে।যারা কখনও ক্লাসে পড়া বলতে পারে না তারা আজ আমার থেকে ভালো। সেটাতেই বড় কষ্ট হলো।আগের সেমিস্টারে আমি ডিপার্টমেন্টের মধ্যে প্রথম ছিলাম।কিন্তু এবারে স্বপ্নটা ভেঙে চুর মার হয়ে গেল।নদীতে আসা জুয়ারের মতো আমার জীবনের জোয়ারে ভেসে গেল।যাহোক নিজেকেই মনে মনে দোষ দিলাম।আমার মাত্র কয়েকটা নাম্বারের কারণে রেজাল্টটা খারাপ হলো।ভাবতে লাগলাম যদি নিজেকে সেই ভাবে প্রস্তুত করতে পারতাম তাহলে আজ হয়ত এই সময়টা পার করতে হতো না।সব বন্ধুরা ম্যাসেজে শুধু রেজাল্ট জিগাচ্ছিল।কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না। পরে সবাইকে সত্যিটা বললাম।সবাই শুনে অবাক হয়ে গেল।
অনেকে আমাকে শান্তনা দিয়ে অনেক কিছু বললো।দুই দিন বাসায় রেজাল্ট জানায় ছিলাম না। কিন্তু পরের দিন আব্বুকে জানালাম।আব্বু প্রথমেই বললো খারাপ হলো কেনো। আমি কোনো উত্তর দিতে পারি নাই। অনেক কিছু বললো আমাকে। নিজেকে যেন একজন বড় ধরনের আসামী মনে হচ্ছিল।এতোটা কথা কখনও আব্বু আমাকে বলে নাই সেদিন রেজাল্টের জন্য যত কিছু বলেছি।মনটা একদম ভেঙে যাওয়া কাঁচের টুকরার মতো হয়ে গেল। রাতে আবার আব্বু আমাকে বুঝালো। শোনো, বাবা যা হবার হয়ে গেছে।এখন সামনের দিনগুলোতে যেন এমনটা আর না হয় সেজন্য ভালো করে পড়াশুনা করো।আমিও তার কথাতে সাই দিলাম।অনেক কথা ভাবার পর ভাবলাম হয়ত আমার জন্য রেজাল্টটা ছিল না।আমি যা পাইছি তাই নিয়ে খুশি থাকা উচিত। অতীতকে ভুলে গিয়ে বর্তমানকে স্বাগত জানাতে হবে।সামনে আমার জন্য যা আসতেছে সেটা গ্রহণ করার মানষিকতা তৈরি করতে হবে।
এখনও মাঝে মাঝে রেজাল্টের কথা মনে হলে খুব খারাপ লাগে।কিন্তু আমি চেষ্টটা করি যতটা সম্ভব অতীতটাকে ভুলে গিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। যাতে আমার ভবিষ্যৎকে আলোর পথ দেখাতে পারি।এখন কেউ আমাকে রেজাল্ট সম্পর্কে কিছু বললে আমি বলি আগেরটা আমার জন্য ছিল না যার কারণে আমি পায় নাই। তাই ওইটা নিয়ে আর ভাবি না।আর সামনে যেটা আসছে সেটা গ্রহন করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি।আমি মনে করি আমাদের সব ক্ষেত্রেই অতীতকে ভুলে গিয়ে সামনের পথে এগিয়ে যেতে হবে।যেই জিনিসটা আমার না সেটা পাওয়ার আশাটা করা কখনও সফলতার কারণ নয়।সুতরাং যা পাওয়া যায় সেটাকেই সদরে গ্রহন করতে হবে।সব সময় মনে রাখতে হবে "অতীতে যা পাওনি সেটা তোমার ছিল না।".
Congratulations, your post has been upvoted by @r2cornell, which is the curating account for @r2cornell's Discord Community.
Our Discord Server and community is located at: Discord
Thank you.