আদা একটি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসাবে বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যলাভকর উপকারিতা রয়েছে:
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: আদার মধ্যে ভরপুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
দ্বৈত পীড়া ও বমি প্রশমন: আদার প্রধান উপাদান জিঞ্জারেল ও শ্বাস ক্রিয়া উত্তেজনা নিরাময় করতে সহায়তা করে। ফলে দ্বৈত পীড়া ও বমি প্রশমন হয়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: আদা রক্তচাপ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে যেহেতু এরকম প্রাকৃতিক হৃদয়পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে।
কোলেস্টেরল হ্রাস: আদার রাসায়নিক উপাদানগুলি কোলেস্টেরল হ্রাসে সহায়তা করে।
তবে যদিও আদাখাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, অনেকের ক্ষেত্রেই এর খাটুনির মাত্রা বেশী হতে পারে। অতিরিক্ত খাটুনি বর্জনীয়।
হ্যাঁ, আদাখাওয়ার কিছু সম্ভাবিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে:
গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল সমস্যা: আদার তীব্র রসায়নিক উপাদান বেশীমাত্রায় হজমক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। ফলে পেট ব্যথা, আমাশয়, ডায়রিয়া ইত্যাদির ঝুঁকি থাকে।
রক্তস্রাবন ও রক্তচাপ সমস্যা: আদা রক্তচাপ কমানোর ক্ষমতা থাকায়, রক্তস্রাবন ও রক্তচাপ কমানোর ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষ করে যারা রক্তনিয়ন্ত্রণ ওষুধ খান তাদের ক্ষেত্রে এটি সতর্কতা প্রয়োজন।
এলার্জি প্রতিক্রিয়া: আদায় থাকা কিছু উপাদান কাউকে এ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ার কারণ হতে পারে। যেমন ত্বকের আবর্ণ, চোখের ব্যথা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া।
অতএব, আদাখাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষত যদি আপনার বয়স, স্বাস্থ্য অবস্থা বা ওষুধ সেবন সম্পর্কে কোনো উদ্বেগ থাকে।
আদা খাওয়ার পর কিছু সংক্রমণের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে, যেমন:
গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল সংক্রমণ:
- প্যাঁচা, ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, বমি, ঠাণ্ডা জিভা
- এগুলো উচ্চ মাত্রায় আদা খাওয়ায় হতে পারে
ভাইরাল সংক্রমণ:
- আদায় থাকা কিছু রসায়নিক উপাদান ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করতে পারে
- ফলে কাশি, গলাব্যথা, জ্বর এবং অন্যান্য ভাইরাল সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে পারে
ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণ:
- আদায় থাকা কিছু পোষক উপাদান ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে
- ফলে ইনফেকশন, ত্বকরোগ, ইতিয়াস ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে
অনেক সংক্রমণ হেল্দি ইমিউন সিস্টেম থাকলে সমস্যা হয় না। তবে স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে বা অত্যধিক মাত্রায় আদা খেলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
আদা খাওয়ার পর গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল সংক্রমণের কিছু সাধারণ লক্ষণ হতে পারে:
প্যাঁচা (Flatulence):
- আদায় থাকা ফাইবার ও সালফার যুক্ত রসায়নিক উপাদান আপনার পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।
- এটা অস্বস্তিকর এবং বিরক্তিকর হতে পারে।
ডায়রিয়া (Diarrhea):
- আদায় থাকা ফাইবার ও রসায়নিক উপাদান আপনার পেটে জল শোষণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।
- ফলে ঝাড়া পেট বা পুনঃপুনঃ ডায়রিয়ার অনুভব হতে পারে।
পেট ব্যথা (Abdominal Pain):
- আদায় থাকা কিছু উপাদান আপনার পেটের পেশিগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে।
- ফলে পেটে ব্যথা, অস্বস্তি বা বুড়োপুকুরের অনুভূতি হতে পারে।
- বমি (Vomiting):
- অত্যধিক আদা সংক্রামক বা প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
- ফলে বমি বা অস্বস্তিকর ভাব অনুভূত হতে পারে।
এই লক্ষণগুলি সাধারণত অস্থায়ী ও হালকা হয়ে যায়। তবে লক্ষণগুলি বাড়তে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আদা খাওয়ার পর এই গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল সমস্যাগুলি কমাতে আপনি নিম্নলিখিত কিছু সহায়ক পদক্ষেপ নিতে পারেন:
ধীরে ধীরে আদা খাওয়া:
- আদা দ্রুত খেলে পেটের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে।
- ধীরে ধীরে খেতে শুরু করুন এবং পেটের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করুন।
আদার পরিমাণ সীমিত রাখা:
- একসাথে অনেক আদা না খেয়ে ছোট ছোট খণ্ড খেয়ে যান।
- এতে আপনার পেট এর উপর চাপ কম থাকবে।
সঙ্গে পানি পান করা:
- আদা খাওয়ার সময় বা পরে সাথে পানি পান করতে পারেন।
- এতে আদার পেটের উপর প্রভাব কমবে।
খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন:
- আদাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন এবং লাইট, সহজপাচ্য খাবার খান।
- এতে পেটের উপর চাপ কমবে।
প্রয়োজনে ওষুধ গ্রহণ:
- অতিরিক্ত গ্যাস, ডায়রিয়া বা ব্যথার ক্ষেত্রে ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন।
- ওষুধ সেবনের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভাল।
এইসব পদক্ষেপ অনুসরণ করলে আপনার অস্বস্তিকর লক্ষণগুলি কমতে পারে। যদিও প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।