নিজের জীবনের সফল হওয়ার গল্প,
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
শুভ বিকাল,
সবাইকে জানাই আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ অশেষ রহমতে আমিও ভাল আছি এবং সুস্থ আছি। আজকে আমি উপস্থাপনা করব আমার নিজের জীবনের গল্প।
মানুষ সফল হওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকে নিজের চিন্তা থেকেই সফলতা আনতে হয় । নিজের লক্ষ্য প্রস্তুত করে নিজেকে সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য নিজের বুদ্ধি ও মেধা খাটাতে হয় তা না হলে সফলতা কখনোই এমনিতেই আসে না।
চলুন বন্ধুরা নিজের জীবনের সফল হওয়ার গল্পটি শেয়ার করি, ১৯৯৬ আমার জন্ম ছোটবেলা থেকেই দেখছি নিজের পরিবারের সব সময় অভাব লেগেই থাকে। পরিবারের অভাব অনটনের মধ্য দিয়েই কোনরকম ভাবে টেনেটুনে ২০১২ সালে এসএসসি পাস করি তারপর থেকেই নিজের পরিকল্পনা শুরু।
এসএসসি পরীক্ষার পর পরিবারের হাল ধরতে রাজমিস্ত্রির কাজ শিখতে থাকি। অনেক লজ্জা করত প্রথম প্রথম কেননা আমাদের ফ্যামিলি অন্য চাচারা অথবা চাচতো ভাইয়েরা। তারা আমাদের চাইতো অনেক বড়লোক। এক কথায় বললে চলে যে। আমার অন্য চাচাদের চেয়ে আমার আব্বু অনেক গরিব। এবং আমার ফুফুরাও অনেক টাকা পয়সার মালিক। তাই আমি যখন রাজমিস্ত্রি কাজে যেতাম সাইকেল চালিয়ে আমার কাছে অনেক খারাপ লাগতো। মনে মনে ভাবতাম যে তারা মোটরসাইকেলে যাচ্ছে আর আমি সাইকেলে কাজে যাচ্ছি।
এমন সময় গেছে লজ্জায় মুখটা অন্য সাইটে ঘুরিয়ে নিয়েছি। আমার আব্বু তেমন সামর্থ্য নাই যে আমাকে আর পড়াশোনা করাবে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমাকে সফল হতে হবে যে কোন উপায়ে।
এক বছর রাজমিস্ত্রি কাজ করলাম তারপর ভাবলাম , রাজমিস্ত্রির কাজ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে করতে হয় আমার পরিচিত বন্ধু এবং আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা হয় এতে আমি অনেক লজ্জায় পড়ি । তাই আমাকে ভিন্ন কর্ম বেছে নিতে হবে যাতে আমার সম্মান বজায় থাকবে । আর কোন প্রকার লজ্জায় না পড়তে হয়।
মনে মনে চিন্তা করছি যে মালয়েশিয়াতে যাব কিন্তু আমার চিন্তা কি সফল হবে আপনারা কি ভাবছেন। জীবনের লক্ষ্য পৌঁছাতে হলে নিজেকে লক্ষণ নির্ধারণ করতে হবে। তাই আমি লক্ষ্য নির্ধারণ করছি আমি মালয়েশিয়াতে যাবোই যে কোন মূল্যে।
এই সিদ্ধান্তগুলো আমার আব্বুকে গিয়ে বললাম আমার আব্বু ধমক দিয়ে আমাকে বলল। ঠিক এইভাবে,( পাগলামি করো না যা করে খাচ্ছ তাই করে খাও) কথাটা আমার এখনো মনে পড়ে।
আমার আব্বু রাজি হলো না, রাজি না হওয়ার প্রথম কারণ হলো টাকা, এবার আমার আম্মুকে গিয়ে বললাম যে আম্মু আমি বাহিরে যাব, আম্মু বললো কোথায় যাবি আমি বললাম মালয়েশিয়াতে, তখন আম্মু বলল যে মালয়েশিয়া যাতে তো অনেক টাকা লাগবে এই টাকাগুলো কোথায় পাবি তুই তো সবকিছুই দেখছিস তোর আব্বুর কাছে কোন টাকাই নাই। আম্মু বলল এখনতো মালয়েশিয়াতে যেতে তিন লক্ষ্য টাকা লাগবে। আমাদের পক্ষে সম্ভব না এতগুলো টাকা এক জায়গায় করা।
এভাবে দুই মাস পেরিয়ে গেল আমি আমার চিন্তা অটল রয়েছি। আমি নিজে বুদ্ধি বের করছি কিভাবে টাকা সংগ্রহ করা যায়। আমাদের অল্প একটু জমির রয়েছে নদীর পাড়ে, সেটা যদি বিক্রি করি তাহলে ১ লক্ষ টাকা মতন হবে, বাকি থাকে 2 লক্ষ টাকা
আমি আমার আব্বুকে বললাম যে আপনি কোন টাকা টেনশন করেন না সমস্ত টাকা আমি ম্যানেজ করে আপনার হাতে দিয়ে মালয়েশিয়াতে যাব আব্বু একটু হেসে উঠে বলল কিভাবে, আমি আব্বুকে বললাম যে আমার বুদ্ধিমত আপনি কাজ করবেন আপনার সহযোগিতা থাকলেই আমি সফল হব,
১/আমাদের নদীর পাড়ে একটু জমি আছে ওটা বিক্রি করলে এক লক্ষ টাকা পাবেন ।
২/আমার ছোট খালার কাছে কিছু টাকা ছিল আনুমানিক এক লক্ষ 20 হাজারের মত হবে সে অন্য জায়গায় ধানের বিনিময়ে টাকাগুলো দিয়েছিল।
আমি ছোট খালাকে গিয়ে বললে টাকাগুলো আমার দিবে। তবে আম্মাকে আমার সাথে যেতে হবে। আব্বু বলল ঠিক আছে।
৩/ বাকি থাকলো আর আশি হাজার টাকা, আমার এক পাড়া-প্রতিবেশী দুলাভাই রয়েছে, আমি তাকে সবকিছু গিয়ে বললাম খুলে সে বলল সমস্যা নাই বাকি টাকাগুলো আমি দিয়ে দেবো।
আমি মালয়েশিয়াতে আসার আগে সম্পূর্ণ টাকা একত্রিত করে আব্বুর হাতে দিয়ে আসছি। আমি যদি একটু বুদ্ধি না বের করতাম তাহলেই এখনো পর্যন্ত আমার বাংলাদেশে থাকতে হতো।
আমি আমার লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছি এবং নিজের প্রচেষ্টায় ইনশাআল্লাহ সফল হয়েছে।
তো বন্ধুরা এই ছেলে আমার জীবনের সফলহওয়ার ছোট্ট একটি গল্প আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে ভালো লাগলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশাই করি আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন।
(আল্লাহাফেজ)