প্রিয় বন্ধুগণ,
আপনি কি জানেন হার্টের ধমনীতে ব্লক কেন হয়। হার্টের সুরক্ষা সবচেয়ে জরুরি। ধমনীতে ব্লক নানা কারণে হয়ে থাকে। বুকের বাম পাশে এক ধরনের ব্যথা অনুভব হলে বুঝতে হবে হার্টের সমস্যা রয়েছে। প্রথমে বুঝতে হবে ব্লক কি?
আমাদের সারা দেহে ছড়িয়ে আছে দুই ধরনের রক্তনালীর।
ধমনীর কাজ হল অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ রক্ত হৃদপিণ্ড থেকে সারা শরীরে ছড়িয়ে দেয়ার। ধমনীর প্রবাহপথ কোন কারণে সরু বা বন্ধ হয়ে গেলে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়। এই বাধাকে বলা হয় ব্লক।
ইশকেমিক হার্ট ডিজিজ কি?
হৃদপিন্ডে রক্ত সরবরাহকারী ধমনীর নাম করোনারি ধমনী। এ করোনারি ধমনী তে ব্লক সৃষ্টি হলে তাকে বলা হয় ইশকেমিক হার্ট ডিজিজ।
এখন আসে ব্লক কেন হয়?
ধমনীতে ব্লক এর মূল কারণ হলো কোলেস্টরেল। যা আমাদের প্রতিদিনের খাবারের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে এবং রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে ধমনীর ভেতরে জমা হয়ে ব্লকের সৃষ্টি করে। কোলেস্টরেল একমাত্র কারণ নয়, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং ধূমপানও বড় কারন গুলোর অন্যতম মনে করা হয়। করোনারি ধমনী তো ব্লক থাকলে যে উপসর্গগুলো দেখা দেয় তা হলো
- বুকের বাম পাশে বা মাঝখানে এক ধরনের ব্যথা অনুভব হয়।
- অনেক সময় বাম হাতের ভেতরের দিকে অস্বস্তি বোধ হয়।
- নিচের চোয়ালের পাতাতে পাশে এক ধরনের অসস্তি অনুভূত হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় কেবল - শারীরিক পরিশ্রমের সময়ে ব্যথা অনুভূত হয় এবং বিশ্রাম নিলে তা কমে যায়।মনে রাখতে হবে ব্লক থাকলে যে সবসময় ব্যথা হবে এমনটা কিন্তু নয়।
ব্লগ থেকে হার্টঅ্যাটাক
ব্লগ থাকলে নিয়মিত চিকিৎসা না নিলে তা হার্ট অ্যাটাকের দিকে মোড় নিতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের ফলে হৃদপেশীর মারা যেতে শুরু করে বলে বুকে তীব্র ব্যথার সঙ্গে বমি ও প্রচুর ঘাম হয়। হার্ট অ্যাটাক ইশকেমিক হার্ট ডিজিজের খুবই মারাত্মক এবং এক পরিণতি যা প্রায়ই রোগীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ব্লকমুক্ত হার্ট কিভাবে
ধমনীর ভেতরের দেয়ালে চর্বি জমা হওয়ার পেছনে মূলত চারটি কারণ রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। সুতরাং হার্টকে ব্লক মুক্ত রাখতে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ ও ধূমপান পরিহার করা অত্যন্ত জরুরি। কাজটি খুব সহজ নয়, এজন্য চাই দৃঢ় মনোবল এবং জীবনাচরণে পরিবর্তন। পুরো ব্যাপারটা কঠিন মনে হলেও জীবনাচরণ সংক্রান্ত কিছু কাজ কিন্তু সহজে করা সম্ভব। যেমন - শারীরিক পরিশ্রম বাড়ানো।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ এর ঝুঁকি কমাতে নিচের খাবারগুলো আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। সাধারণত কোন দাওয়াতে বা অনুষ্ঠানে খাদ্য গ্রহণের পরিমাণের ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এটা ক্ষতির কারণ হতে পারে। মনে রাখতে হবে কি খাচ্ছেন প্রশ্নটি যেমন জরুরি কতটুকু খাচ্ছেন প্রশ্নটা সমান জরুরি।
ডিম খাবেন কী খাবেন না
ডিম নিয়ে অনেকেই ঝামেলায় থাকেন। ডিম পছন্দ কিন্তু ডাক্তার খেতে নিষেধ করেছেন বলে খেতে পারছেন না, এমন মানুষ অসংখ্য। ডিম রক্তে কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিয়ে ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ ও হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। এ ধারণা থেকে সরে আসছে ইদানিংকার বিজ্ঞান। মনে রাখতে হবে লিপিট বা কোলেস্টেরল এমন একটা জিনিস যা আমাদের কোষের গঠন থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন গঠনগত ও শারীরবৃত্তিক প্রয়োজন মেটায়। বিভিন্ন হরমোন তৈরিতেও লিপিট দরকার হয়। একটা ডিমের কুসুমে যে পরিমাণ কোলেস্টেরল থাকে তা আমাদের শরীরের দৈনন্দিন ক্ষয় মেরামতের জন্য প্রয়োজন। ডিমের অন্যান্য অনেক দরকারি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তবে হ্যাঁ কোনো কিছু অতিরিক্ত ভালো নয়। ডিমের ক্ষেত্রে সে কথা প্রযোজ্য।
নিয়মিত চেকআপ
হার্টে ব্লক সাধারণত বয়স্কদের রোগ হলেও ইদানিং অল্প বয়সে এ রোগ দেখা যাচ্ছে। তাই ব্লগ জনিত হূদরোগ বা ইসকেমিক হার্টডিজিজ প্রতিরোধের ৪০ বছর বয়সের পর নিয়মিত চেকআপ করানো ভালো।