মুজাদ্দিদ রাহ, স্পষ্টভাবে ঘোষণা করলেন, বিদ'আতে হাসানা বলতে কিছু নেই। হাদীসে সকল বিদ'আতকেই গোমরাহী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অতএব কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও ক্লিয়াসের ভিত্তিতে যে আমল প্রতিষ্ঠিত তা বিদ'আত নয়। আর যে আমল এই চার মূলনীতির আওতাভুক্ত নয়, তা আপাত দৃষ্টিতে যত সুন্দরই মনে হউক, মূলতঃ তা গোমরাহী। হাসানা হবে না।
এক চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “এই অধম বিদ'আতের কোনটির মাঝেই সৌন্দর্য দেখতে পায় না। শুধু অন্ধকার, পঙ্কিলতা ও ত্রুটিই অনুভব করে। যদি আপাত দৃষ্টিতে কোন বিদ'আতীর নিকট কোন কোন বিদ'আতের কল্যাণ ও সৌন্দর্য দৃষ্টিগোচর হয়ও কিন্তু আগামীকাল যখন তার আত্মশক্তি বলিষ্ঠ হবে তখন সে অবশ্যই বুঝতে পারবে যে এর পরিণাম একমাত্র ধ্বংস ও বঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই নয়।"
তিনি আরও বলতেন যে, 'হাদীস থেকে বুঝা যায়, যখনই কোন জাতি কোন বিদ'আত উদ্ভাবন করে ঠিক তখনই তাদের থেকে অন্য একটি সুন্নতকে উঠিয়ে নেওয়া হয়। অতএব সুন্নতকে আঁকড়ে থাকা ও তা থেকেই দলিল প্রমাণ গ্রহণ করে কোন আমল করা বিদ'আত থেকে অনেক উত্তম।'
সে যুগে সাধারণ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সকলের মাঝেই ফরজের চেয়ে নফলের গুরুত্ব ছিল অধিক। এ কারণে তিনি শরিয়তের কোন আমলের গুরুত্ব কতটুকু তা পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলতেন, 'যে সব আমলের দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়, তা কি ফরজগুলো? না নফলগুলো? ফরজের মুকাবেলায় নফলের কোন মূল্যই নেই। যথা সময়ে একটি ফরজ আদায় করা হাজার বছরের নফল ইবাদত থেকে উত্তম, তা যত ইখলাছের সাথেই করা হউক না কেন।
তিনি রাসূল সা. এর সুন্নতসমূহ দুইভাগে বিভক্ত বলে উল্লেখ করেছেন। ১. যা তিনি ইবাদত হিসেবে আদায় করেছেন। ২. যা তিনি দেশাচার ও সামাজিক প্রথা ও অভ্যাস হিসেবে করেছেন। যা তিনি ইবাদত হিসেবে করেছেন তার বিপরীত কিছু করাকেই তিনি বিদআতে মুনকার বলেছেন এবং এগুলোকে প্রতিহত করার জন্য তিনি সর্বাত্বক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। আর যে সব আমল নবী সা. দেশাচার বা অভ্যাস হিসেবে করেছেন তার বিপরীত কিছু করাকে তিনি বিদ'আতে মুনকার বলে মনে করতেন না। তবে তিনি এ কথা বলতেন যে, নবী স. দেশাচার বা অভ্যাসবশত: করেছেন এমন সুন্নতের অনুসরণও সর্বোচ্চ সফলতা দান করে নিঃসন্দেহে।