)
যশোর জেলার নামকরণ সম্পর্কিত আরেকটি ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন প্রখ্যাত ইংরেজ ঐতিহাসিক ও প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজেন্ডার কার্ণিংহাম। তিনি লিখেছেন-‘যশোর’ শব্দটি আরবী ভাষায় ‘জসর’ শব্দের রূপামত্মরিত রূপ। আরবী ‘জসর’ শব্দের বাংলা অর্থ হলো-সেতু বা সাঁকো। সমগ্র জসর অঞ্চলে মুসলিম অভিযানের প্রাক্কালে অসংখ্য খাল-বিল-নদ-নদী থাকার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য ঐ সকল নদ-নদীর উপর সেতু বা সাঁকোর প্রয়োজন ও ব্যবহার ছিল। অসংখ্য সাঁকো ও সেতুর ব্যবহার থাকার কারণে নবাগত মুসলমানেরা এতদাঞ্চলকে ‘জসর’ বলে অভিহিত করে আনুমানিক ১৪৫০ খ্রীস্টাব্দের দিকে পীর খান জাহান আলী সহ বারজন আউলিয়া যশোরের মুড়লীতে ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রধান কেন্দ্র স্থাপন করেন। ক্রমে এ স্থানে মুড়লী কসবা নামে একটি নতুন শহর গড়ে উঠে । ১৫৫৫ খ্রীস্টাব্দের দিকে যশোর রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। যশোর-খুলনা-বনগাঁ এবং কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরের অংশ বিশেষ যশোর রাজ্যের অন্তভুর্ক্ত ছিলো।জে. ওয়েস্টল্যান্ড কর্তৃক লিখিত যশোর জেলার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজা প্রতাপাদিত্যের নাম উলেখ ব্যতীত যশোরের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যায়। যদিও তার ভবনের ধ্বংসস্ত্তপ ২৪ পরগনা জেলায় অবস্থিত। রাজা বিক্রমাদিত্য যে শহরের পত্তন করেন তাই হলো আজকের যশোর।
যশোর একটি অতি প্রাচীন জনপদ। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর পূর্বে মিশরীয়রা ভৈরব নদের তীরে এক সমৃদ্ধ বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে তোলে।যশোর জেলার নামকরণের সর্বপ্রথম ব্যাখ্যা প্রদানকারী হলেন হরিশচন্দ্র তর্কালঙ্কার; যিনি মনে করেন, বাংলার দীর্ঘদিনের রাজধানী গৌড়ের যশ হরণ করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে এ নতুন রাজ্যের নামকরণ হয়েছিল ‘জসর রাজ্য’।
Source